Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বুড়িগঙ্গায় খেয়াঘাট বন্ধের প্রতিবাদে মাঝি গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা চলাচলের সিমসন ঘাটসহ পাঁচটি খেয়াঘাট বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জে ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকেই বুড়িগঙ্গা নদীতে সকল প্রকার নৌকা চলাচল বন্ধ থাকে। নৌকার মাঝি ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, কর্মচারী, শ্রমিকরা নদীতে নৌকা নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সদরঘাট টার্মিনালে থাকা বিভিন্ন লঞ্চকে লক্ষ করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে।
নদীতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নৌপুলিশের কয়েকটি টিম নদীতে টহল দিতে থাকে। নদীর পাড়ে কেরানীগঞ্জের আগানগর ও কালিগঞ্জ এলাকায় দেশের বৃহত্তম পাইকারী গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও শ্রমিকরা সকাল থেকে ধর্মঘট পালন করেছে। মার্কেট এলাকায় নদীর পাড়েও ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা ঘাট বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। সকাল থেকেই ওই এলাকায় দোকান-পাট বন্ধ থাকে।
মুসলীম কালেকশনের স্বত্বাধিকারী মুসলীম ঢালী জানান, নদীর উত্তরপ্রান্তে সিমসন ও শ্যামবাজার ঘাট এবং নদীর দক্ষিন প্রান্তে কেরানীগঞ্জে তৈলঘাট, গুদারাঘাট, আলম মার্কেট ঘাট রয়েছে। এই ঘাট দিয়ে নদী পাড় হয়ে প্রতিদিন দেশের প্রতিটি জেলা থেকে এখানে পাইকাররা গার্মেন্টেসের পণ্য ক্রয় করতে আসেন। এছাড়াও এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন রাজধানীতে বিভিন্ন পেশার হাজার হাজার মানুষ নৌকাযোগে যাতায়াত করে থাকেন। নদীরপাড়ে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহত পাইকারী গার্মেন্টস পল্লী অবস্থিত। এই এলাকায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। কিন্তু তাদের এই ব্যবসায়ী এলাকায় একমাত্র চলাচলের ঘাটগুলো চালু না করা হলে সমস্ত গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাবে।
কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হাজী আব্দুল আজিজ বলেন, বৃটিশ আমল থেকেই সিমসন ঘাটটি ছিল। আরো একবার ঘাটটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমাদের আন্দোলনের মুখে সেটি আবার ফিরে পাই। এবারো ঘাটটি বিআইডব্লিউটি একতরফাভবে বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘাটটির সমাধান করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ স্বাধীন জানান, নদীতে যে কয়টি দুর্ঘটনা ঘটেছে সেগুলো লঞ্চের কারনেই হয়েছে। লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ অন্যায়ভাবে ঘাটগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ন পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন জানান, সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় সরকার রেডজোন ঘোষণা করেছেন। এই এলাকায় খেয়া পারাপার বিপদজনক হওয়ায় ঘাটগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে নৌকাডুবিতে একই পরিবারের ৬জন নিহত হয়। সরকারের এই সিদ্বান্ত যেকোন মূল্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য গত তিন মাসে কয়েকটি ঘটনায় বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী রাতে লঞ্চের ধাক্কায় একই পরিবারের ৪ জন এবং গত ৭ মার্চ রাতে লঞ্চের ধাক্কায় একই পরিবারের ৬ জন এবং ১৭ জানুয়ারী ২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রশাসন একেবারে নড়েচড়ে বসে। গত ১০ মার্চ বিআইডব্লিউটিএর উধর্বতন কর্মকর্তা, নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে যৌথ সভায় টার্মিনাল এলাকায় বুড়িগঙ্গার নদীর ঘাটগুলো বন্ধ করার সিদ্বান্ত নেয়া হয়। সোমবার রাত থেকেই ঘাট বন্ধের নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআইডব্লিউটিএ

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ