Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মনের বাঘেই খেয়েছে বাংলাদেশকে!

নিউজিল্যান্ড সফর

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

নিউজিল্যান্ড সফরে জিততে পারেনা- এই মনের বাঘেই কি তবে খাচ্ছে বাংলাদেশকে? প্রশ্নটা মোটা দাগে দেখা দিয়েছে ওয়েলিংটন টেস্টে হারের ধরণটা দেখে। প্রথম দুই দিনে খেলা হতে দেয়নি বৃষ্টি। তার পরও পরাজয়ের ‘পথ খুঁজে বের করেছে’ বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে শেষ দিনের দুই সেশন আগেই। সব মিলিয়ে বেসিন রিজার্ভে খেলা হয়েছে ২০১.৫ ওভার। দুই দিন ও এক সেশনই নিউজিল্যান্ডের জন্য যথেষ্ট হয়েছে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়ে ইনিংস পরাজয় বরণ করিয়ে নিতে।
এমন হারের সুরতহালে ধরা পড়েছে- ‘সুইং-বাউন্সের ভয়’ জেঁকে বসা মানে ব্যর্থতাকে আমন্ত্রণ জানানো। কথাটি বলছেন বাংলোদেশের ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলকে তাই তিনি দেখতে চান মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতে ১৬ উইকেট নিয়েছেন নিল ওয়াগনার। যার মধ্যে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা ১৫ বার আউট হয়েছেন তার শর্ট বলে! খোদ মাহমুদউল্লাহ এবং মিঠুন ফিরেছেন তিনবার করে; লিটন, মুমিনুল এবং মিরাজ শিকার হয়েছেন দু’বার; এমনকি দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর সাদমান ইসলামও ওয়াগনারের শর্ট বলে হয়েছেন পরাস্ত!
এই টেস্টের সঙ্গে অদ্ভূত মিল ২০০১ সালের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্টের। দেশের বাইরে সেটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট। হ্যামিল্টনে খেলা হয়নি প্রথম দুই দিন। তার পরও ম্যাচ শেষ হয়েছিল পঞ্চম দিন সকালে। সেবার খেলা হয়েছিল আরও কম, ১৮১.৪ ওভার। কার্যত দুই দিনে হেরেছিল বাংলাদেশ। দেড় যুগে তাহলে উন্নতি কোথায় হলো, প্রশ্ন উঠল সেটি নিয়েও। মাহমুদউল্লাহর দাবি, উন্নতি হয়েছে। তবে যেখানে উন্নতি হয়েছে, সেখানেই আরও বেশি অগ্রগতি চাইছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক, ‘১৭ বছরে... আমাদের ক্রিকেটারদের মানসিকতা ও স্কিলের অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এই ধরনের কন্ডিশনে আরও ভালো করতে হলে মানসিকভাবে আরেকটু শক্ত হতে হবে। এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। প্রথম টেস্টে খেলা শুরুর আগেই আমি বলেছিলাম, আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে। ম্যাচের আগেই যদি ভাবতে থাকেন যে সুইং হবে, সিম হবে, বাউন্স হবে, আউট হয়ে যেতে পারি, তাহলে ওখানেই আপনি হেরে যাবেন। ইতিবাচক থাকলে অন্তত ভালো পারফর্ম করার সুযোগ বেশি থাকে।’
ওয়েলিংটনে এবার কন্ডিশনের পাশাপাশি উইকেটও ছিল ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এতটা সবুজ ঘাসে ভরা উইকেটে বাংলাদেশ আগে খেলেছে খুব কমই। তবে সেই উইকেটের সবচেয়ে কঠিন কাজটি সাফল্যের সঙ্গে সেরে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শুরুতে উইকেট হারায়নি। তামিম ইকবাল ও সাদমান ইসলাম দারুণ ব্যাট করে দলকে এনে দিয়েছিলেন ৭৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। কিন্তু সেই শুরু কাজে লাগাতে পারেনি দল। বোল্ট-সাউদি-হেনরিদের সামলে দল আবার ভেঙে পড়ে ওয়েগনারের শর্ট বলের ¯্রােতে।
ভয় ও দ্বিধার জয়, আর সাহসকিতার ঘাটতিতেই মাহমুদউল্লাহ দেখছেন ব্যর্থতার বীজ। পরের টেস্ট ভালো কিছু করতে তার চাওয়া দ্বিধা বীজ উপড়ে ফেলা, ‘তামিম ও সাদমান আমাদের খুব ভালো শুরু এনে দিয়েছিল। এরপর ওয়েগনার যখন তার শর্ট বল থিওরি প্রয়োগ করতে শুরু করল, কিছুক্ষণ ভালো খেলার পর আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছি। আরেকটু লম্বা সময় গাটস নিয়ে খেলা উচিত ছিল। আমাদের পেস আক্রমণে তিনজন নতুন বোলার। ওদেরকে দায় দিয়ে লাভ নেই। দোষ ব্যাটসম্যানদেরই বেশি। আড়াই দিনে দুইবার অলআউট হওয়া খুবই হতাশার। দ্বিধা থেকে আমরা ভুল করছি। সংশয় নিয়ে শট খেলছি, পুরো আস্থা রাখছি না নিজের ওপর। মারব নাকি মারব না, এই ধরনের উইকেটে এই ভাবনা চলবে না। শট খেলতে চাইলে দ্বিধাহীনভাবে খেলতে হবে, ঠেকাতে চাইলে সেটিও। উপায় বের করতেই হবে। কারণ পরের টেস্টেও তারা বাউন্সার করবে। ক্রাইস্টচার্চে উইকেট গতিময়। ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’
ওয়েলিংটনে ইনিংস ও ১২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। তার আগে হ্যামিল্টনে হেরেছে ইনিংস ও ৫২ রানে। তার পরও মাহমুদউল্লাহর বিশ্বাস, এই দলটিই আরও ভালো করার সামর্থ্য রাখে, ‘আমার বার্তা ছিল ইতিবাচক থাকার, একই বার্তা সামনেও থাকবে। হয়তো শুনতে হাস্যকর শোনাবে, কিন্তু আমাদের যে দল আছে, তাতে আমরা আরও ভালো করার সামর্থ্য রাখি। ¯্রফে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা করতে হবে যে নিজের স্কিল দিয়ে কিভাবে দলে অবদান রাখতে পারি।’
হতাশার দীর্ঘ সফরে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি শুরু হবে আগামী শনিবার, ক্রাইস্টচার্চে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ