Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সময়ের চাহিদা পূর্ণ করতেই হবে

শয়রুল কবির খান | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে জন্ম নিয়েছে ৫৫ হাজারে বর্গমাইলের যে ভূখন্ডটি তার নাম স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। এর পেছনে রয়েছে ইতিহাসের অনেক পরিক্রমা। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমাদের অর্জন স্বাধীনতার সংগ্রাম-সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশ তাঁর স্বপ্নের ওপর ভিত্তি করে আমাদের শক্তির উৎস, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। শুরুতেই হুচোট খেল ৭ কোটি জনগণ সকল স্বপ্নের আকাক্সক্ষা পদদলিত হতে থাকলো। সাড়ে তিন বছরের মাথায় প্রায় সবই হারিয়ে গেল। গণতন্ত্র, ন্যায়-বিচার, সামাজিক সুষমবণ্টন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার কিছুই আর থাকলো না। তারপরও সময় বয়ে চলে। সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়ের চাহিদা সময় মতোই পূর্ণ হয়ে যায়। আসে পঁচাত্তরের পটপরিবর্তন। জাতি দিশেহারা। নেতৃত্বের সংকট। নেই রাজনৈতিক দল নেতৃবৃন্দ বিচ্ছিন্নভাবে। আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তি মানুষের ক্ষোভ বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ৭ নভেম্বর খালেদ মোশারফের বন্দিশালা থেকে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে মুক্ত হয়ে আসলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। জনসম্মুখে এসে আহ্বান জানালেন, আপনারা ধৈর্য্য ধারণ করুন। নিজ নিজ কাজে মনযোগী হোন। সশস্ত্র বাহিনী আপনাদের পাশে আছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। থমকে যাওয়া মানুষ ঘুরে দাঁড়ালো। স্মৃতিচারণ করতে থাকলো এই জেনারেল জিয়াই কি সেই মেজর জিয়া? ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের কালো রাত্রির পর যার কণ্ঠ থেকে জাতি শুনেছিলো স্বাধীনতার ঘোষণা। মানুষ ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো।
সেই সময়ে বাতাসে ঘুরে বেড়ানো আওয়ামী বিরোধী শক্তিগুলো কোনো রাজনৈতিক শক্তি একত্রিত হয়ে জনগণকে স্বপ্ন দেখাতে পারেনি। স্বপ্ন দেখালেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। উদ্যোগ গ্রহণ করলেন আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তিগুলোকে একত্রিত করতে। জনসাধারণের জন্য প্রায় সবটুকুই তিনি সমাপ্ত করলেন সাড়ে চার বছরের মাথায়। ৪২ বছরের বয়সের একজন টগবগে যুবকের নেতৃত্বে তলাবিহীন ঝুড়ির উপাধি ঘুছিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়ে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুললেন। তিনি যা দিয়েছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলতে পারবে না। (ক) সামাজিক ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট গঠনের জন্য ‘১৯ দফা কর্মসূচি’। (খ) বিশ^ দরবারে জাতি রাষ্ট্র হিসাবে নিজেদের পরিচিতি ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ রাজনৈতিক দর্শন। (গ) এই দুটোকে ধারণ করে হাজার বছর টেনে নেবার জন্য গঠন করলেন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’, যার ছায়াতলে আজো দাঁড়িয়ে আছে কোটি কোটি মানুষ।
ঠিক এই মুর্হুতে আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তি বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে না, মূলত ঘুরে বেড়াচ্ছে শহীদ জিয়ার হাতে গড়া দল বিএনপি’র চারপাশে। তাঁর অন্যতম কারণ তিনি দিয়ে গেছেন ‘সামাজিক ন্যায় বিচার, বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’। এর মধ্য দিয়ে সময়ের চাহিদা পূরণ হয়েছিল। এই চাহিদাটা এই অঞ্চলের মানুষের জনম জনমের। তাঁরা সারা রাত জেগে যাত্রা দেখে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে মসজিদে নামাজ পড়বে। অন্যের ধর্মের উপর জুলুম করবে না। সব সময় চাইবে উদার গণতান্ত্রিক চর্চা। এর বিকল্প আর কী আছে? সেই সময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার সবটুকুই দিয়ে গেছেন। এই সময়ে সেই সূত্র ধরে তার উপর ভিত্তি করে, এই সময়ের চাহিদা পূরণ করতে হবে। এর বিকল্প নেই। তার সবটুকুই পরবর্তীতে ধারণ করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি এখনো ধারণ করেই চলছেন দেশপ্রেমে পরিক্ষীত আপোসহীন নেত্রী হিসেবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন