Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাস্তবায়ন করছে খুলনা শিপইয়ার্ড

শরিয়তপুর-বরিশালে নদী ভাঙনরোধ প্রকল্প

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বরিশালের চরবাড়িয়ায় কীর্তনখোলা ও শরিয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনরোধে আসন্ন বর্ষার আগেই টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলছে নৌ বাহিনী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা ও তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এদুটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রায় ১৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এলক্ষ্যে ইতোমধ্যে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু হয়েছে এ দুটি নদী তীরে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ ‘ডিপার্টমেন্টাল প্রকিউরমেন্ট মেথড-ডিপিএম’এর ভিত্তিতে শরিয়তপুরের নড়িয়া-সুরেশ্বর এলাকার ভাঙনরোধে প্রায় ১ হাজার ৭৭ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে নৌ বাহিনীর অধিভূক্ত প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড। একইভাবে বরিশাল মহানগরী সংলগ্ন চরবাড়িয়ায় কীর্তনখোলা নদীভাঙন রোধেও প্রায় সোয়া ২শ’ কোটি টাকার প্রতিরোধ কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পানি সম্পদ মন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম ও উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিম এদুটি প্রকল্পের বিষয়ে নিবিড় তদারকি করছেন। দায়িত্ব লাভের পরে প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী ভাঙন কবলিত দুটি এলাকাই একাধিকবার পরিদর্শন করে সরেজমিনে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন। গতকালও পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে এবিষয়ে নৌবাহিনী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। 

গতবছর জানুয়ারির প্রথমভাগে নড়িয়া-জাজিরা এলাকায় ভয়াবহ নদী ভাঙন রোধে ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ একটি প্রকল্প একনেক-এর অনুমোদন লাভ করে। শরিয়তপুরে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার ঠাকুর বাজার, বাঁশতলা, কুন্ডেরচর সংলগ্ন প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক দিয়ে পদ্মার স্রোত থেকে ভাঙনরোধসহ নদীতীর রক্ষা এবং একই উদ্দেশ্যে আরো পৌনে ১০ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং করে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের বিষয়ও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
ভাঙন প্রতিরোধে মধ্য পদ্মায় জেগে ওঠা চর অপসারনে ড্রেজিং-এর পরিপূর্ণ নকশা খুলনা শিপইয়ার্ডকে হস্তান্তর করা হয়েছে গত ১০মার্চ। ইতোমধ্যে প্রকল্প এলাকায় প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং সহ ব্লক প্রস্তুত কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা অনুযায়ী ভাঙন কবলিত ৮.৯ কিলোমিটার এলাকায় ৪০ লাখ ১০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ১৪ লাখ ব্যাগ প্রস্তুত করে বেশীরভাগই ভাঙন কবলিত এলাকায় ফেলা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত ও ফেলা হচ্ছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ২৮ লাখ ব্যাগ ফেলার লক্ষ্য স্থির থাকলেও ঐ সময়ের মধ্যে সমুদয় জিও ব্যাগ ভাঙন কবলিত এলাকায় ফেলার জন্য প্রস্তুত করবে খুলনা শিপইয়ার্ড।
ভাঙন কবলিত ৮.৯ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগের ওপর প্রায় ৩২ লাখ ৪৭ হাজার বিভিন্ন মাপের সিসি ব্লক ফেলা হবে। ২০২০-এর জুনের মধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকায় ২৩ লাখ ২৭ হাজার ও ২০২১-এর জুনের মধ্যে সর্বমোট ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ব্লক ফেলার কাজ শেষ করতে হবে।
এদিকে পদ্মায় চর জেগে ওঠায় প্রায় ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২৩ হাজার ঘন মিটার পলি অপসারন করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ড্রেজিং কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে দুটি ড্রেজারের সাহায্যে ডুবোচর অপসারন কার্যক্রম শুরু করেছে। গত ২৯ মার্চ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ ড্রেজিং কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আরো ১টি বড় ড্রেজার চলতি সপ্তাহে প্রকল্প এলাকায় নিয়োজিত করা হচ্ছে। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে মোট ২ কোটি ৬০ লাখ ঘন মিটার ও ২০২১-এর এপ্রিলের মধ্যে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২৩ হাজার ঘন মিটার ড্রেজিং সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন খুলনা শিপইয়ার্ডের দায়িত্বশীল মহল।
এদিকে বরিশালে ভাঙন কবলিত ৩.৩৬ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ লাখ ২১ হাজার সিসি ব্লক এবং ৪ লাখ ৭৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকায় ২০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ব্লক তৈরীর সব পদক্ষেপও গ্রহন করা হয়েছে। এখানে কীর্তনখোলার পূর্ব প্রান্তে ৪১ লাখ কিউবিক মিটার ড্রেজিং করে পলি অপসারনের মাধ্যমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করতে হবে। ইতোমধ্যে ৬২ হাজার ঘন মিটার পলি অপসারন কাজ শেষ হয়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনা শিপইয়ার্ড


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ