Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পাওয়ার উপায়

ডাঃ শাহজাদা সেলিম | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

ভিটামিন ডি একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। অনেক বেশি পরিমাণে প্রয়োজন না হলেও এর ঘাটতিতে ব্যাপক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। হাড়ক্ষয় বা অস্টিওপরোসিস আছে, ডায়াবেটিস আছে, হৃদরোগ-স্ট্রোক হয়েছে, প্রজনন সমস্যা আছে, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম আছে ও দৈহিক স্থ’ূলতায় আক্রান্ত, এদের ভিটামিন ডি ঘাটতি থাকার সম্ভাবনা ব্যাপক। সাম্প্রতিককালে গর্ভকালীন সময়ে ভিটামিন ডি এর মাত্রা নিয়েও যথেষ্ট গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা যে পরিমাণ মানুষকে ভিটামিন ডি’র ঘাটতিতে আছে মনে করি, তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ ভিটামিন ডি’র ঘাটতিতে ভুগছে। শীত প্রধান দেশগুলোর মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি বেশি থাকার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু বাংলাদেশের মতো নাতিশীতষ্ণ অঞ্চলের মানুষের দেহে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি প্রধানত: অসচেতনতা প্রসূত।
দেহের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশের ভিটামিন ডি আসে সূর্যালোক থেকে। ২০ শতাংশের কম আমরা পেতে পারি খাদ্য উপাদান থেকে, যেমন- স্যালমন মাছ, পোনা মাছ, সামান্য কিছু থাকে মাগুড়-ম্যালা মাছে, দুধ-ডিমে। তাহলে ভিটামিন ডি পেতে হলে আমাদেরকে সূর্যালোকের উপরই নির্ভরশীল হতে হবে।
কি ভাবে আমরা সূর্যালোক থেকে নিরাপদে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পেতে পারিঃ
দিনের মধ্যভাগের সূর্যালোক বিশেষ করে গরমকালে, সবচেয়ে উপযোগী হতে পারে।
দুপুরের কাছাকাছি সময়ে সূর্য যখন সবচেয়ে উপরের দিকে থাকে, তখন সূর্য রস্মিতে যে অতি বেগুনী রস্মি থাকে তা ভিটামিন তৈরীতে সবচেয়ে বেশি উপযোগী। অন্যদিকে সূর্য্য পূর্ব পশ্চিম আকাশে হেলে থাকলে তাতে যে অতি বেগুনী রশ্মি থাকে তা পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি তৈরী করতে পারে না। শীত কালের কম আর্দ্র ও কুয়াশাচ্ছন্ন দিনগুলোতে অথবা শীত প্রধান দেশে অধিকাংশ সময় সূর্যালোকে যে অতি বেগুনী রশ্মি থাকে, তা ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কতক্ষণ যাবৎ রোদ পোহাতে হবে তা নির্ভর করবে আপনি পৃথিবীর কোন জায়গায় অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের মানুষের জন্য গবেষণা ভিত্তিক তথ্য না থাকলেও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের গবেষণার সাথে ত‚লনা করে প্রতিদিন নিয়মিত প্রাই ৩০ মিনিট রোদ পোহানো প্রয়োজন হতে পারে বলে ধরে নেওয়া যায়। এ সময় শরীরের কমপক্ষে ১৮ শতাংশে রোদ লাগতে দিতে হবে। দুপুরের কাছাকাছি সময় মানে সকাল ১০.০০টা - বিকাল ৩.০০টা রোদে যাবার উপযুক্ত সময় হতে পারে। আর বছরের গরম কালের সময়টুকু অর্থাৎ এপ্রিল - সেপ্টেম্বর মাস রোদ থেকে ভিটামিন ডি পাবার সবচেয়ে ভালো সময় হবে।
ত্বকের রং সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি তৈরীতে প্রভাব খাটাই। ত্বকের রং যত গাড় হয় (বেশি মেলানিন থাকে), তা সূর্যালোক থেকে অতি বেগুনী রস্মি প্রবেশে ততবেশি প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে। অর্থাৎ গায়ের রং যত কালো তাকে ততবেশি সময় রোদে থাকতে হবে।
অনেক খেলোয়ার ও বেশ কিছু মহিলা ত্বকে সানস্ক্রিন/সানবøক ব্যবহার করে। এগুলো সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে।
পরিশেষে এটি বলা যায়, যতটা সম্ভব বেশি সময়, শরীরের বেশি অংশে সূর্যালোক লাগাবার চেষ্টা করবেন যাতে ভিটামিন ডি’র চাহিদা মেটাবার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

সহকারী অধ্যাপক
এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
মোবাইল ঃ ০১৯১৯০০০০২
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভিটামিন


আরও
আরও পড়ুন