Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রেমের ফাঁদে ফেলে চিকিৎসক অপহরণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম


রোগী সেজে চিকিৎসকের চেম্বারে আসেন কথিত এক সুন্দরী। এক সময় যাতায়াত বাড়তে থাকে। কয়েকদিন পর শুরু হয় ফোনালাপ। কিছুদিনের মধ্যে নিয়মিতভাবেই চলতে থাকে কথাপোকথন। উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতাও বাড়তে থাকে। একসময় কথিত এই সুন্দরী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখায় ওই চিকিৎসককে। কোনো ভাবনা ছাড়াই ওই সুন্দরীর ফাঁদে পা দিয়ে বসেন চিকিৎসক। এমন ঘনিষ্ঠতার ফাঁদে ফেলে ডা. মোনায়েমুল বাশার (৪০) নামে এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে অপহরণ করে একটি প্রতারক গোষ্ঠী। গত বুধবার মিরপুর ১০ নম্বর থেকে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মধুপুরের নির্জন জঙ্গলে নিয়ে আটকে রাখা হয়। রাতভর নির্যাতন করে অপহৃত চিকিৎসকের পরিবারের কাছে মোবাইলে কল করে নির্যাতনের শব্দ শুনিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয় পাঁচ লাখ টাকা। পরে র‌্যাব-৪ এর একটি দল গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইল থেকে অপহরণ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার ও অপহৃত চিকিৎসককে উদ্ধার করে। তাদের কাছ থেকে সাড়ে ২৭ হাজার টাকাও জব্দ করা হয়।
গতকাল বেলা ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির প্রতারণার এমন ভয়ঙ্কর কৌশলের কথা বলেন। তিনি বলেন, অপহরণ চক্রের ৬ সদস্য হলোÑ ফয়েজ উদ্দিন (৩২), আলমগীর হোসেন (১৮), বিল্লাল হোসেন (৩৮), আব্দুল হালিম (৫২), ফয়সাল আহমেদ (১৮) ও আব্দুস সালাম (৫৫)। তাদের কাছ থেকে সাড়ে ২৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
মঞ্জুরুল কবির বলেন, অপহরণকারী চক্রের এক নারী সদস্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রোগী সেজে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। পরে মোবাইল ফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। গত বুধবার ওই নারীর মাধ্যমে চিকিৎসককে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মধুপুর ভাওয়াল বনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রের সদস্যরা। তারা চিকিৎসকের স্ত্রী ও শ্যালকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে কিছু টাকাও নেয়। এরপর তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণের জন্য সারারাত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ভোরে অভিযান চালিয়ে মোনায়েমুল বাশারকে উদ্ধার ও অপহরণ চক্রের ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে, গত দশ বছর ধরে তারা বিভিন্ন পন্থায় মাঝারি ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও চাকরিজীবীদের টার্গেট করে অপহরণ করে আসছে। তারা অপহৃতদের স্বজনদের কাছে পাঁচ লাখ বা দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এসব টাকা বিকাশ বা অন্যান্য মাধ্যমে আদায় করত। এছাড়া ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহের গুরুত্বপূর্ণ বাস স্টেশন থেকেও তারা যাত্রীদের জোর করে মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কারে উঠিয়ে নিয়ে সর্বস্ব লুটে নিতো বলে র‌্যাবকে জানিয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ