Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শ্রীলঙ্কায় রোয়ানুর আঘাতে নিহত ৬৩

প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে শ্রীলঙ্কায় অন্তত ৬৩ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরো ৩৭ শিশুসহ ১৪৭ জন। এই ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচতে ২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, দুর্যোগ কবলিত এলাকার প্রায় ২ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় একটি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। রোয়ানুর প্রভাবে রাজধানী কলম্বোসহ আরো কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩শ’ মিলিমিটার ছাড়িয়েছে। দেশটির মাহাইল্লুপ্পালামা এলাকায় এক সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৫শ’ মিলিমিটারেরও বেশি। শ্রীলঙ্কার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কলম্বোর ১শ’ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কেগালি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই এলাকায় দু’টি পৃথক ভূমিধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪য়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কলম্বোর বড় একটি অংশ থেকে মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এই অভিযানে নৌকা ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। গত সপ্তাহান্ত থেকে এই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় ২৫ বছরের মধ্যে এটা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ঘটনা। এই বর্ষণের ফলে বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষ ৫০ ফুট মাটির নিচে চাপা পড়েছে। কর্মকর্তারা দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি অবিলম্বে অন্যত্র চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজধানীর নিম্নাঞ্চল থেকে ২ লাখ মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। ৪ লাখ মানুষ রাষ্ট্র পরিচালিত ত্রাণ শিবিরগুলোতে যেতে বাধ্য হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেলানি নদীর পাশে অবস্থিত কলম্বোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নদীটির পানি দুকূল উপচে জনপদগুলোকে প্লাবিত করে। প্রধানমন্ত্রী রানিল উইক্রেমেসিঙ্গের অফিস থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে দ্বিধা করছে। তারা তাদের জিনিসপত্র লুট হওয়ার আশঙ্কা করছে। তারা আশঙ্কা করছে যে সেনা সদস্য লুটপাট ঠেকাতে পারবে না। লিওন ব্রেওয়েরি কর্তৃপক্ষ জানায়, কলম্বোর প্রান্তে একটি শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত তাদের একটি কারখানা পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার পানির স্রোতের তোড়ে কয়েক হাজার খালি গ্যাস সিলিন্ডার ভেসে গেছে। শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমের ছবিতে এগুলোকে ভেসে যেতে দেখা যায়। গত শুক্রবার সকালেও কলম্বোয় বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে অপেক্ষাকৃত ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে কেলানি আবারো দুকূল উপচে যেতে পারে। কলম্বো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে অবস্থিত কেগাল এলাকা প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই এলাকার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ভূমিধসের পর ৩৭ শিশুসহ ১৪৪ জন নিখোঁজ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৫০ ফুট মাটির নিচে চাপা পড়াদের জীবিত উদ্ধারের কোন বাস্তবসম্মত আশা নেই। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণেই ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কায় রোয়ানুর আঘাতে নিহত ৬৩
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ