Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভাবুন

সরকারকে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সরকারকে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভাবতে বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এক মাঘে শীত যায়না। পরিস্থিতি সব সময় এক থাকে না। সময় বদলাতে তো সময় লাগে না। মানুষের আওয়াজ শুনুন। পায়ে পা মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে জনতা। ফুঁসছে মানুষ। জনতার আদালত তৈরি হচ্ছে। তাই নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র বন্ধ করে দ্রুত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর বাধা দিবেন না। জনগণের নেত্রীকে জনগণের মাঝে ফিরতে দিন। গতকাল (সোমবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে নিষ্ঠুর তামাশা করা হচ্ছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, চিকিৎসা ও জামিনে বাধা প্রদানের পেছনে সরকারের ভয়ংকর নীলনক্সা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন দেশনেত্রীকে হয় দুনিয়া থেকে না হয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে। গত কয়েকদিন ধরে সরকারদলীয় লোকদের মিডিয়া এবং মন্ত্রী ও তাদের নেতাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সাহেবের বক্তব্য বিপরীতধর্মী, এতে বোঝা যায় তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে নিষ্ঠুর তামাশা করছেন।
তিনি বলেন, মানবিক কারনে বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে এটর্নি জেনারেল যে বক্তব্য দিয়েছেন, যদি তাই হয় তবে তিনি বারবার মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়ার জামিন পেতে বাধা দিচ্ছেন কেন? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেতে সরকারের নির্দেশই সবচাইতে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। যে মিথ্যা মামলায় তাঁকে জোর করে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেই মামলায় অন্যান্য ব্যক্তিরা সবাই জামিনে রয়েছেন। আদালতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে শুধু দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। নতুন নতুন গ্রেফতারী পরোয়ানা দেয়া হচ্ছে। আসলে মামলা কিছু নয়, আসল উদ্দেশ্য দেশনেত্রীকে তিলেতিলে শেষ করা অথবা চিরজীবনের জন্য রাজনীতির ময়দান থেকে সরিয়ে দেয়া।
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বলতে বলতে সত্য বলা ভুলে গেছেন। মুখস্ত করা কবিতার মতো অবলীলায় তিনি গড়গড় করে মিথ্যা বলতে পারেন। গত ৫ এপ্রিল গণভবনে আওয়ামী লীগের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-বিএনপি থেকে চিৎকার করা হচ্ছে, তাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। অথচ বিএনপির কারও বিরুদ্ধে একটিও মিথ্যা মামলা করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর একথাটি শুনে একটি প্রবাদ মনে পড়ে যায়-অল্পশোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর। তাঁর এই পর্বতসমান মিথ্যা বক্তব্যে দেশের মানুষ পাথর হয়ে গেছে। অথচ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ১ লাখের বেশী মিথ্যা মামলায় আসামি ২৫ লাখেরও বেশী। এর মধ্যে ২৫ হাজার গায়েবী মামলা। ঘটনার দিন-তারিখ-স্থান যাই হোক, বিবরণ প্রায় একই।
কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের বিষয়ে রিজভী বলেন, যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারান্তরীণ আছেন। তাকে বর্তমানে কারাগারের ফাঁসির সেলে রাখা হয়েছে। সরকার তাকে পরিকল্পিতভাবে কারাগারে আটকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। এটি বর্তমান অমানবিক, নির্দয় ও নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকারের দ্বারা সংঘটিত অপকর্মগুলির মধ্যে আরেকটি ঘৃণ্য আচরণের বহিঃপ্রকাশ। প্রচন্ড অসুস্থ অবস্থায় সে কাতরাচ্ছে। এর ওপর তাকে ফাঁসির সেলে রাখা শুধু অমানবিকই নয়, তার মানবাধিকারকেও হরণ করার সামিল। এসময় তিনি বেগম খালেদা জিয়া, গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, এ্যাড: শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, হাবিব উন নবী খান সোহেল, লায়ন আসলাম চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শেখ রবিউল ইসলাম রবি, মামুনুর রশিদ মামুন, শেখ মোহাম্মদ শামীম, হযরত আলী, মিয়া নুর উদ্দিন অপু, ইসাহাক সরকারসহ দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ