Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভোগান্তিতে সোয়া লাখ গ্রাহক

কুমিল্লায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি ও চাহিদার দিক থেকে কুমিল্লায় বিদ্যুতের সার্বিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেকটা উন্নত। তবুও চৈত্রের শুরু থেকে শেষের দিকে এসেও প্রতিদিনই কমবেশি বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রায় সোয়া লাখ গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়ছেন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবি) কুমিল্লার প্রধান প্রকৌশলীর দাবি এখানে কোন লোডশেডিং নেই। ঝড় বৃষ্টির কারণে কোথাও গাছপালা ভেঙে সঞ্চালন লাইনের তার ছিড়ে গেলে বিদ্যুৎ না থাকার মতো স্বাভাবিক ঘটনা ঘটে। তবে বজ্রপাতের কারণে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার বিষয়টি হাস্যকর বলে দাবি করেন প্রধান প্রকৌশলী।
রাজধানী ঢাকার বাইরে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে একাধিক প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। কুমিল্লায় এধরণের প্রতিষ্ঠানের নাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। কুমিল্লা শহরও শহরতলীকে ঘিরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণের তিনটি বিভাগ কাজ করে থাকে। এ তিনটি বিভাগে কুমিল্লা শহরের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চল, পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা এবং শহরের দক্ষিণাঞ্চলের টমসমব্রীজ থেকে জাঙ্গালিয়া, পদুয়ারবাজার, চৌয়ারা বাজার, সোয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি এলাকা পর্যন্ত প্রায় সোয়া লাখ গ্রাহক রয়েছে। এছাড়াও লাকসাম, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রামেও রয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কার্যক্রম। কুমিল্লার অন্যান্য উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) গ্রামীণ জনপদে কাজ করছে।
তবে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের উন্নয়নে পবিস যথাযথ ভ‚মিকা রাখতে পারছেনা। বিউবো কুমিল্লা অঞ্চলের অধীনে নগরীর জাঙ্গালিয়ায় রয়েছে ১লাখ ৩২ হাজার কিলোভোল্টের (কেভি) গ্রীড সাব-স্টেশন। এখান থেকে কোটবাড়ি, কালিয়াজুড়ি, বালুতুপা, জাঙ্গালিয়া, চৌদ্দগ্রাম, লাকসামের দৌলতগঞ্জ, কসবা/বুড়িচং ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২এর সাবস্টেশনে ৩৩ কেভি ফিডারের মাধ্যমে ট্রান্সফরমার হয়ে সঞ্চালন লাইনে গ্রাহক বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
কিন্তু বিউবোর আওতায় কুমিল্লার বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের তিনটিতে প্রায় সোয়া লাখ গ্রাহক চৈত্রের শুরু থেকেই বিদ্যুতের যথাযথ সরবরাহ প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। এনিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রগুলোতে গ্রাহকের অভিযোগের শেষ নেই। গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিদিনই দিনে-রাতে এক থেকে দুই আড়াই ঘন্টা বা ঘনঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। ঘনঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে বাসা বাড়িতে পানি সঙ্কট চরম আকার ধারণ করে থাকে।
ইতোমধ্যে এসএসসি ও অনার্স পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। গত কয়েকদিন ধরে ঝড় বৃষ্টিতেও বিদ্যুতের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এখনো ঝড় বৃষ্টি হলে বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ থাকে। গ্রাহকরা জানান, আকাশে বজ্রপাতের বিকট আওয়াজের পরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়। এটা পরীক্ষিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু বিউবোর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী সরদার আজম মোহাম্মদ গ্রাহকদের এ ধরণের যুক্তি হাস্যকর বলে দাবি করে জানান, কুমিল্লার কোথাও লোডশেডিং নেই। কখনো বিদ্যুৎ না থাকলে এটা স্থানীয় কারিগরি ক্রুটি হতে পারে। বর্তমানে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টিপাতের কারণে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হচ্ছে। আকাশের বজ্রপাতের সাথে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। বেশির ভাগ বিদ্যুৎ লাইন ঘেষেই শতশত গাছপালা রয়েছে। বিদ্যুৎ লাইন সংলগ্ন গাছের ডালপালা পরিচ্ছন্ন না করার কারণে ঝড়ের সময় এসব ভেঙে লাইন ছিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ