Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নুসরাতের আবেগঘন চিঠি উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:০০ পিএম

গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টার শিকার নুসরাত জাহান রাফির লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তার পড়ার টেবিল থেকে আবেগঘন ওই চিঠিটি জব্দ করা হয়। পুলিশ বলছে, এটি তারা আলামত হিসাবে সংগ্রহে রেখেছেন।

চিঠিতে দিন তারিখ উল্লেখ না থাকলেও নিজ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার কাছে যৌন হয়রানীর শিকার হওয়ার পর যে তিনি চিঠিটি লিখেছেন সে বিষয়টি স্পষ্ট। এমনকি অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষক গ্রেপ্তার হলে তার পক্ষে সহপাঠীদের কর্মসূচি পালন তাকে মর্মাহত করেছে। চিঠিতে সেই বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেছেন। এই চিঠি থেকে জানা গেছে, এই ঘটনার কারণে তিনি একবার আত্মহত্যাও করতে গিয়েছিলেন। তামান্না ও সাথী নামে দু’জন সহপাঠিকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে তিনি তাদের বোন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবেগঘন ওই চিঠিতে তিনি নিপীড়নকারী শিক্ষকের শাস্তি দিতে প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেছেন।

নুসরাত তার চিঠিতে লিখেছেন,


‘সাথী, তামান্না
তোরা আমার বোনের মতো এবং বোনই।

ওইদিন তামান্না আমায় বলেছিল, আমি নাকি নাটক করতেছি। তোর সামনেই বললো। আরো কি কি বললো, আর তুই নাকি নিশাতকে বলেছিস আমরা খারাপ মেয়ে। বোন প্রেম করলে কি সে খারাপ??? তোরা সিরাজ উদ দৌলা সম্পর্কে সব জানার পরও কীভাবে তার মুক্তি চাইতেছিস।

তোরা জানিস না, ওইদিন রুমে কি হইছে? উনি আমার কোন জাগায় হাত দিয়েছে এবং আরো কোন জায়গায় হাত দেয়ার চেষ্টা করেছে, উনি আমায় বলতেছে- নুসরাত ডং করিসনা। তুই প্রেম করিস না। ছেলেদের সাথে প্রেম করতে ভালো লাগে। ওরা তোরে কি দিতে পারবে? আমি তোকে পরীক্ষার সময় প্রশ্ন দেবো। আমি শুধু আমার শরীর দিতাম ওরে। বোন এই জবাবে উত্তর দিলাম। আমি একটা ছেলে না হাজারটা ছেলে...। আমি লড়বো শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করবো না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরবো না, আমি বাঁচবো। আমি তাকে শাস্তি দেবো। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নিবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো। ইনশাআল্লাহ।’

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন চিঠিটি উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চিঠিটি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। চিঠিতে যাদের নাম আছে, প্রয়োজনে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

গত শনিবার আলিম পরীক্ষায় অংশ নিতে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে গেলে দুর্বৃত্তরা ওই ছাত্রীকে ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তার দেয়া শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নিতে বলে। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় দুর্বৃত্তরা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় বর্তমানে নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।



 

Show all comments
  • Mohammad Mansur Ahmed ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪৬ পিএম says : 0
    সিরাজুদ্দৌলা নামক মানুষ রুপী কুকুরটাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা করা হোক। আর ওর বিচারটা ভিডিও করে সকল টিভি চ্যানেলে আধা ঘন্টা পর পর দেখানো হোক, গোটা বাংলাদেশ ধর্ষণ মুক্ত হবে। ইনশা আল্লাহ। হে আল্লাহ। আপনি নুসরাত বোনকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন।ওর মা-বাবা ও ভাই ও আত্মীয় স্বজন সকলকে শোক ভুলে ধৈর্য ধারন করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Gazi rana ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:৪১ পিএম says : 0
    Vai oi meye ta amar kicu hoi na tar poreo keno jani amar du choker phani dore rakte pharci na jodi phartam ekbar hoileo or dekte jaitam ami sudu eta volbo asamir kothin sasti hoyar dorkar aj tw nusrate shate hoice kal je amar boner shate hobe na tar geranti ki
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চিঠি উদ্ধার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ