পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষ আয়োডিন স্বল্পতার শিকার। আর ৩ কোটি মানুষ জানেন না তারা আয়োডিন ঘাটতির শিকার হয়ে স্বল্প বুদ্ধি ও শেখার ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। এদেশের মাটি আয়োডিন ঘাটতি অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ও শাকসবজিতে আয়োডিন থাকার সম্ভবনা নেই। ফলে ঘাটতি পূরণের জন্য একমাত্র আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু আয়োডিনের নামে লবণের মাত্রাতিরিক্ত দাম নিলেও তাতে নেই পর্যাপ্ত আয়োডিন। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টার’র উদ্যোগে গতকাল পবা কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ অভিযোগ করা হয়।
‘আয়োডিনের স্বল্পতা ও অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ভয়াবহতা’-শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান সভাপতিত্ব করেন। ট্যালেন্ট প্রমোশন ইনিশিয়েটিভের সভাপতি মো. আবদুল মান্নান-এর সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মো. মোনজুরুর হক। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, সম্পাদক ডা. খালেদ শওকত আলী, এম এ ওয়াহেদ, আইসিডিডিআরবি’র সাবেক পরিচালক ও রোগতত্ত¡ বিশেষজ্ঞ ডা. মুস্তাক হোসেন, কলাবাগান থানার আওয়ামী লীগ-এর সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, ঢাবি’র পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এম আখতারুজ্জামান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সোনিয়া বেগম, অধ্যাপক রীনাথ ফওজিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, লবণে আয়োডিন মিশানোর জন্য কেজি প্রতি ২০-২৫ টাকা অতিরিক্ত দাম নিলেও সঠিক পরিমানে আয়োডিন দেয়া হচ্ছে না। এই বিষয়ে নীতিমালা থাকা সত্তে¡ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে তদারকি না করার ফলে স্বাস্থ্যগত সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা অনেকটা নিরবে গণহত্যার শামিল।
বক্তারা আরো বলেন, আয়োডিন একটি উদ্বায়ী মৌলিক পদার্থ, খোলা অবস্থায় থাকলে বাতাসে উবে যায়। আয়োডিনের ঘাটতি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাববিস্তারক সমস্যা, যা মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করে দেয়। বর্তমানে আয়োডিনের অভাব হয়ত কমেছে, তবে গলগন্ড ছাড়া অন্যান্য সমস্যা যে বৃদ্ধি পায় নাই তা জোর দিয়ে বলার সুযোগ নেই। আয়োডিনের অভাব হয় শিশু জন্মের আগেই। মহিলাদের গর্ভবতী অবস্থায় আয়োডিনের ঘাটতি বেশি হলে মৃত সন্তান প্রসব, গর্ভপাত, শিশুর জন্মগত অস্বাভাবিকতা, বামনত্ব এবং অনিরাময়যোগ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।
বৈঠক থেকে জাতীয় লবণ নীতি ২০১৬ অনুসারে নির্ধারিত ভোজ্য লবণের মাত্রা (১৪.৫ গ্রাম) জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় পুন:নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয়। মানবদেহে ফলমূল-শাকসবজি ও বিভিন্ন খাদ্যে এলাকা ভিত্তিক দৈব চয়নের ভিত্তিতে নিয়মিত জরিপ করা-তার ভিত্তিতে এলাকা ভিত্তিক মাত্রা নির্ধারণ করা দাবি উঠে। খাদ্যে এবং ফুড সাপ্লিমেন্টে আয়োডিনের মাত্রা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা। তারা বলেন, লবণ উৎপাদন পর্যায়ে আয়োডিনের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করা ও বিধিভঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লবণের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমানো, আয়োডিন যুক্ত লবণ ব্যবহার ও সঠিকভাবে লবণ সংরক্ষণে জনগণকে সচেতনতা বাড়াতে মিডিয়ার সম্পৃক্ততা বাড়ানো ও সরকারী ভাবে প্রচার ও প্রচরণার ব্যবস্থা করার দরকার। এছাড়া পাঠ্য বইয়ে আয়োডিনের স্বল্পতা ও লবণের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ভয়াবহতার বিষয় অন্তভূক্তির পরামর্শ দেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।