Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিষ্প্রাণ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা ক্ষোভ ঝাড়লেন

কুমিল্লা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজনৈতিক দলের সম্মেলন মানেই সাজ সাজ রব, হৈহুল্লোড়, প্রতিনিধি, নেতাকর্মীদের প্রাণোচ্ছল উচ্ছ্বাস আর প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সরব উপস্থিতি। কিন্তু এসবের কোনটাই ছিলনা কুমিল্লা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে। মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা দায়সারা গোছের আয়োজনে নিষ্প্রাণ সম্মেলন দেখে চোখ কপালে তুলে কেবল বিরক্তিই নয়, চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সম্মেলনের দুরাবস্থা দেখে কেন্দ্রীয় নেতারা কমিটি ঘোষণা না করেই ঢাকায় ফিরে যান। আর কমিটির জন্য নগর মহিলা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়ির সামনে রাস্তার ধুলোবালিতে গড়াগড়ি খেয়েছেন। সম্মেলন নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ও ক্ষোভের ঝড় বইছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পর এই প্রথম আয়োজন করা হয় মহানগর আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। বৃহস্পতিবার মহিলা আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ তড়িঘড়ি করে কোন প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই কুমিল্লা নগরীর একটি কমিউিনিটি সেন্টারে সম্মেলন আহ্বান করে। কিন্তু সেই আহ্বানে সাড়া মেলেনি তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের। এমনকি নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩টি ছাড়া বাকিগুলো থেকে নেতাকর্মীদের ৫ভাগও উপস্থিতি হয়নি। সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাত মহিলা কাউন্সিলর পর্যন্ত সম্মেলনের খবর জানেননি।
এছাড়াও মিডিয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের কেউই জানেন না সম্মেলনের বিষয়ে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সম্মেলন সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও উপস্থিতি সন্তোষজনক না হওয়ায় বেলা সাড়ে ১২টায় চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে তা শুরু হয়। সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাফিয়া খাতুন, প্রধান বক্তা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দলের সহসভাপতি ইয়াসমিন হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রুখসানা ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া বেগম ইভা অনুষ্ঠানস্থলে এসে লোক সমাগম কম দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেন।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংগঠন করতে হলে আমাদের অনেক কিছুই জানতে হবে, বুঝতে হবে। কুমিল্লা মহানগরের ২৭ ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটি ওয়ার্ড থেকে লোক এসেছে। আর বাকিগুলো থেকে মনে হয় আসেইনি। বেশি করে লোক আসতে হবে। যারা দীর্ঘদিন দলের জন্য কাজ করছে, কিন্তু পদপদবি পাচ্ছেনা, তাদের বিষয়টি প্রাধান্য দেবো, বিবেচনায় রাখবো। প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাফিয়া খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কুমিল্লায় যখনই কমিটি করার কথা বলি তখনই হতাশ হয়ে যাই। এসম্মেলনের মধ্যদিয়ে কোন কমিটি ঘোষণা হবেনা। ঢাকায় গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলোচনা করে কমিটি দেয়া হবে। কুমিল্লা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগে কোন রকম গ্রুপিং আমরা দেখতে চাই না। কোন পকেট কমিটি দেবো না।
এদিকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করে গাড়িতে উঠে বসলে মহিলা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী গাড়ির সামনে রাস্তায় শুয়ে গড়াগড়ি শুরু করে এবং কমিটি ঘোষণার দাবি জানায়। এরকম দৃশ্যে চরম বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। অন্যদিকে রাস্তার উপর মহিলাদের এঅবস্থা পথচারি ও সাধারণ মানুষের হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়ায়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জোবেদা খাতুন পারুল। তিনি সম্মেলন সফল হয়েছে দাবি করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ