Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হত্যায় অবৈধ অর্থ লেনদেনের খ্ােজ পেয়েছে সিআইডি

আ.লীগ নেতা রুহুল আমিন ৫ দিনের রিমান্ডে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

মাদরাসাছাত্রী নুসরাত হত্যাকান্ডে অবৈধ অর্থ লেনদেনের খোঁজ পেয়েছে সিআইডি। হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জুবায়ের আহমেদ যে বোরকা পরেছিলো, তা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আসামি উম্মে সুলতানা পপি (ছদ্মনাম শম্পা) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যদিকে আসামি জাবেদ হোসেনকে আদালত আরও তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। জাবেদ হোসেন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
পুলিশ সদরদফতর সূত্রে জানা গেছে, নুসরাত হত্যাকান্ড তদন্তে পুলিশ সদরদফতরের যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তারা তদন্ত কাজ শেষ করেছেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে ওই তদন্ত কমিটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবেন।
শনিবার সকালে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, মাদরাসাছাত্রী নুসরাত হত্যাকান্ডে অবৈধ অর্থ লেনদেনের খোঁজ পাওয়া গেছে। হত্যার হুকুমদাতা ও আলোচিত ওই হত্যাকান্ডে যারা অংশ নিয়েছে তাদের মধ্যে অবৈধ অর্থ লেনদেন হয়েছে। অর্থের জোগানদাতা থেকে শুরু করে কয়জনকে সে অর্থ দেওয়া হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, এ সপ্তাহেই আমরা একটি টিম পাঠাব, ওখানে আমাদের টিম অনুসন্ধান করে দেখবে যে, মানিলন্ডারিং হয়েছে কি না। যদি হয়ে থাকে তাহলে আমরা নিয়মিত মামলা রুজু করব।
সূত্র জানায়, আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় অভিযুক্ত সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন, জাবেদ ও কামরুন নাহার ওরফে মনিকে গতকাল বিকেলে আদালতে নেয় পিবিআই।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, রুহুল আমিনকে গতকাল বিকেলে আদালতে হাজির করে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রুহুল আমিনকে শুক্রবার সোনাগাজী তাকিয়া রোড থেকে আটক করা হয়। অপর আসামী মনিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
ফেনী জেলা ও সোনাগাজী উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নুসরাত হত্যাকান্ডে যে ৪টি বোরকা ব্যবহার করা হয়েছিল তার একটি বোরকা উদ্ধার করেছে (পিবিআই)। গতকাল দুপুরে মামলার এজহারভুক্ত আসামি যোবায়ের আহাম্মদকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পিবিআই তদন্ত টিম। মামলা তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই’র পরিদর্শক মো: শাহ আলম বলেন, তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সোনাগাজী সরকারি কলেজ সংলগ্ন ডাঙ্গি খাল থেকে একটি বোরকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও তাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই। বোরকা এ হত্যা মামলার অন্যতম আলামত। যোবায়ের আহাম্মদ আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি। সে সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলী গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে। নুসরাত হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে এখন পর্যন্ত ৫ জন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এদের সবাই কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যোবায়ের আহাম্মদ।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন বলেন, নুসরাত হত্যার ঘটনায় পপি প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তিনিই (পপি) নুসরাতকে ৬ এপ্রিল নিচতলা থেকে ডেকে সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে যান। এরপর নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার ঘটনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এসব কথা স্বীকার করেন পপি। আরও কিছু তথ্য দিয়েছেন পপি। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এদিকে জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদকে গত ১৩ এপ্রিল গ্রেফতার করে ওই দিনই আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের আবেদন করা হয়। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাকে আবার আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নুসরাত জাহান রাফির গ্রামের বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়ায় যান বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি ফেনী জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। সেখানে তারা নুসরাতের কবর জিয়ারত করেন এবং তার শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানান। তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাও. শাহ্ মোহাম্মদ ইয়াছিন, সেক্রেটারী মাও. মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, সহ-সভাপতি মাও. মজিবুর রহমান, মাও. মহিব্বুল্লাহ, সদস্য মাও. আমির হোসেন, মাও. আতিক উল্লাহ প্রমুখ।

 



 

Show all comments
  • Kabir ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৪৮ এএম says : 0
    ফেনীর সোনাগাজির মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাাফির হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • পাবেল ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৪৯ এএম says : 0
    এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তাহমিনা ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৪৯ এএম says : 0
    এদের এমন সাজা দেওয়া হোক, যেন ভবিষ্যতে আরও কেউ এমন ঘৃণ্য কাজ করতে সাহস না পায়।
    Total Reply(0) Reply
  • সফিক আহমেদ ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৫১ এএম says : 0
    অপরাধীদের দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের মাধ্যমে বিচার করে সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • কাওসার আহমেদ ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৫৩ এএম says : 0
    কোন অপরাধী যেন পার না পায়
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ