Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

টিএসসিতে ছাত্রীকে আ.লীগ নেতার ইভটিজিং, উল্টো অভিযোগকারীকেই থানায় দিলো ছাত্রলীগ নেতা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৯, ৫:১৪ পিএম

ইভটিজার নয় উল্টো ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়া দুই ছাত্রীসহ  রাজধানীর ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলো এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) তে এ ঘটনা ঘটে। 

তারা ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আড্ডা দিতে এসে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন । অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম (৪৭)। এ ঘটনার পরে তাকে ওই তিন শিক্ষার্থী মারধর করেছেন ।

ওই ছাত্রলীগ নেতা হলেন রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির এলাকার পরিচিত তিনি। অভিযোগকারীরা হলেন ফারিহা মাহমুদ রুমী, নাফিয়া সাদেকা মম এবং নাইম মাহমুদ রুমী। তারা তিনজনই একই ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে নাইম ছাড়া বাকি দুই জন তৃতীয় বর্ষে পড়ে। আর নাইম চতুর্থ বর্ষে পড়ে।

অভিযোগকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই তিন শিক্ষার্থী ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরতে এসেছেন। প্রায় এই ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে আসা হয় তাদের।
টিএসসিতে বসে আড্ডা দেয়ার সময় চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে লক্ষ্য অনেকক্ষণ যাবত গোপন অঙ্গ নাড়তে থাকে। পরে তাদের মধ্যে ফারিহা বিষয়টি বুঝতে পারলে তার পাশের বান্ধবীর সাথে বিষয়টি শেয়ার করেন। পরে তারা তিন বন্ধু-বান্ধবী বসা থেকে দাঁড়ালে ওই লোক আস্তে আস্তে টিএসসির গেইটের দিকে হাঁটতে থাকেন। 

এরপর তাজুলকে থামাতে ওই তিন শিক্ষার্থী টিএসসির গেইটম্যান কিরণকে ইশারা দিয়ে তাকে থামাতে বলেন। ওই লোক তখন টিএসসির মেইন গেইটের সামনে চলে আসেন। সেখানে তারা তিনজনই অভিযুক্ত তাজুল ইসলামকে মারধর করেন।

পরে ঘটনাটি তাজুল ইসলাম তার এলাকার পরিচিত ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনকে জানান। এর কিছুক্ষণ পর সুমন কিছু লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।

এর আগে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা এসে উপস্থিত হন। তারা তাজুল ইসলাম এবং ঔই শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। পরে রিয়াজ উদ্দিন সুমনও ওই দুই ছাত্রীর থেকে ঘটনাটি শুনেন। 

ঘটনাটি শুনে তিনি ওই তিন শিক্ষার্থীকে থানায় দিতে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যদের নির্দেশ দেন। এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্যের সামনে নিয়ে যান। সেখানে সুমনের নিদের্শে ওই তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেন প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। তখন সুমন সাথে করে অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাজুল ইসলাামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ফোনে কথা বলতেছি। কথা শেষে আমি টিএসসির বাইরের দিকে আগালে তারা পিছন থেকে আমাকে ডেকে মারধর করেন। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা সত্য নয় ।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনের ওই লোক আমার এলাকার। তিনি একজন চেয়ারম্যান, সম্মানিত ব্যক্তি। তার নামে তিন শিক্ষার্থী যে অভিযোগ করেছে তা সত্য-মিথ্যা কতটুকু জানিনা। তারা তাঁকে ব্যাপক মারধর করেছে। এটা খুবই খারাপ করেছে তারা। এজন্যই তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান  বলেন, ‘একজন ছাত্রসহ দু’জন ছাত্রীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। কি অভিযোগে সোপর্দ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি থানায় নাই, বিষয়টি এখনও জানি না। তবে, তাদেরকে অভিভাবকের হাতে দিয়ে দেওয়া হবে।’



 

Show all comments
  • Mohammad shah zahan ২২ এপ্রিল, ২০১৯, ১০:২৩ পিএম says : 2
    জনাব তাজুল সাহেব একজন ভাল মানুষ। আমি তাহাকে দশ বছর ধরে জানি। তার চরিত্র খুবই উন্নত। সে পরিস্থিতির শিকার।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইভটিজিং

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ