Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

কুড়িগ্রামে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শেষ হল ৪০তম জাতীয় সাইক্লিং প্রতিযোগিতা

চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৯, ৮:২৯ পিএম

চরম অবহেলা, অব্যবস্থাপনা, অনিয়মের মধ্যদিয়ে শনিবার কুড়িগ্রামে যবনিকা ঘটল ৪০তম জাতীয় সাইক্লিং প্রতিযোগিতার। প্রতিযোগিতায় ১২টি পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা ৭টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ ও ২টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে। রানার আপ বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ পেয়েছে ১০টি পদক। তারা ৬টি স্বর্ণ ও ৪টি রৌপ্য পদক নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। এছাড়াও বিজেএমসি ৩টি স্বর্ণ ৬টি রৌপ্য ও ৫টি ব্রোঞ্জসহ ১৪টি পদক পেয়ে তৃতীয়স্থান অধিকার করে। বাংলাদেশ আনসার ১টি স্বর্ণ, ৪টি রৌপ্য ও ৮টি ব্রোঞ্জসহ ১৩টি পদক, মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থা ১টি স্বর্ণ, বাংলাদেশ জেল ১টি রৌপ্য ও ১টি ব্রোঞ্জসহ ২টি পদক এবং ঢাকা ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থা ১টি করে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছে।
তবে ৬টি ইভেন্ট বাদ দেয়ায় সাইক্লিস্টদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। প্রচার-প্রচারণা না থাকায় খেলোয়াড় ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ছাড়া গ্যালারী ও মাঠ ছিল দর্শকশূন্য। এদিকে একদিন আগে মাইকিং করে স্টেডিয়ামে হাতে গোনা কয়েকটি ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়েই জাতীয় সাইক্লিং এর প্রচারের দায় সারিয়েছে ফেডারেশন। অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেও পায়নি সম্মানী ও যাতায়াতভাতা।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবুল জানান, প্রচার-প্রচারণা ছিল দায়সারা গোছের। জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও প্রশাসনের সাথে সাইক্লিং ফেডারেশনের কোন সমন্বয় ছিল না। তারা একক সিদ্ধান্তে কাজ করায় তার মান নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয়েছে। ফলে জৌলুষ হারিয়েছে এবারের ৪০তম সাইক্লিং প্রতিযোগিতা। তাদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্রীড়া সংগঠক কাজিউল ইসলাম অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং প্রচার প্রচারনা অপ্রত্যুল অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, সাইক্লিনিং ফেডারেশনের এ দায় সরকার নেবে না।
তিন দিন ব্যাপী এ প্রতিযোগীতায় ৫টি মাইক্রোবাসসক্রিয় ছিল। এসব গাড়ির ড্রাইভার মকবুল হোসেন, জুয়েল, লুৎফর, সাজু ও রফিকুল অভিযোগ করে-চুক্তি করেও তাদের ন্যায্য ভাড়া দেয়নি কর্মকর্তারা। তাদের ঠকানো হয়েছে। ড্রাইভার রফিকুলের অভিযোগ তিনি আরো ৬হাজার টাকা পাবেন ফেডারেশন কর্মকর্তাদের কাছে। তাঁরা পাওনা টাকা না দিয়ে পালিয়েগেছেন।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান জানান, সুষ্ঠু,সুন্দর ও সফলভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি বিশাল একটি আয়োজন। ব্যাপকভাবে করা গেলে আরো ভাল হতো। তবে এ আয়োজনের সব নিয়ন্ত্রণ ছিল ফেডারেশন নেতাদের হাতে। কাজেই আমাদের কিছুই করার ছিল না।
বাংলাদেশ সাইকেল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হাসান প্রতিযোগিতা সফল হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন- আবহাওয়া, মাঠ এবং রোড রেসে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে টেকনিক্যাল কারণে ৬টি ইভেন্ট বাতিল করা হয়। এছাড়া সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে। বাজেট এবং অব্যবস্থাপনার বিষয়ে কথাবলতে চাননি তিনি। এ আয়োজনে ১২ লাখ টাকা বাজেট ছিল এমন প্রশ্নের উত্তোর তিনি এড়িয়ে যান।
অভিযোগ রয়েছে-তাঁরা বিভিন্ন হোটেল, গেস্ট হাউস, ভাড়া গাড়ীর এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ফাঁকা ভাউচার সংগ্রহ করেছেন। এতেই প্রমান হয় কর্মকর্তারা ভুয়া-বিল ভাউচার দিয়ে টাকা আতœসাৎ করার পথ তৈরী করেছেন। এ প্রতিযোগীতায় ১০/১২জন আহত হলেও তাদের সঠিক চিকিৎসা হয়নি। তারা চিকিৎসা করেছেন নিজ খরচে। এ রকম এন্তার অভিযোগ রয়েছে।
ইনডেক্স গ্রুপ, জেডটি মোবাইলের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ সাইক্লিনিং ফেডারেশন এবং কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় তিনদিন ব্যাপি এ প্রতিযোগিতায় ৬টি কর্পোরেট এবং ১৫টি জেলা দলের আড়াই শ’জন সাইক্লিস্ট অংশগ্রহন করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ