Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বকীয়তা হরণের চেষ্টার অভিযোগ ডাকসুর জিএসের বিরুদ্ধে

নুর হোসেন ইমন | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

টিএসসির সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের স্বকীয়তা হরণের চেষ্টা করছেন ডাকসুর জিএস ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এসব সংগঠনের একাধিক নেতার অভিযোগ ডাকসুর গঠনতন্ত্র বিকৃত করে সাংস্কৃতিক অঙ্গণে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় মুখর ভিপি নুরুল হক নুরসহ অন্য একাধিক ডাকসু নেতা। গোলাম রাব্বানীর সিদ্ধান্তের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন।
ডাকসু সূত্রে জানা যায়, ‘গত ৩০ এপ্রিল ডাকসুর জিএস ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বনী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাবির সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে ডাকসুর তত্ত¡াবধানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানে যে কোন অংশগ্রহণ এবং প্রতিযোগিতামূলক সহশিক্ষা কার্যক্রমে ঢাবি প্রতিনিধি প্রেরণের বিষয়ে ডাকসু একক এখতিয়ার রাখে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘ডাকসু ঢাবি সহশিক্ষা কার্যক্রমে (যথা-বিতর্ক, নাটক, গান, নৃত্য, বক্তৃতা, আবৃত্তি ইত্যাদি) তত্ত¡াবধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সকল অংশীজনের সহায়তা কামনা করে। এ বিষয়ে ডাকসু সংশ্লিষ্ট সম্পাদকরা অতি দ্রæত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। এর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হয়ে যেকোনো সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পূর্বে ডাকসুর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ করা হল।’ ডাকসুর গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে একক এখতিয়ারের কথা বলা নেই বলে দাবি করেছেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক একাধিক সংগঠনের নেতা। তাদের দাবি, ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একক এখতিয়ার ডাকসুকে দেওয়া হয়নি। গঠনতন্ত্রে কোথাও বলা নেই যে, ডাকসুর কাছে জানিয়ে কোনো প্রতিযোগিতায় যেতে হবে। বরং অন্যান্য সংগঠনের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে ডাকসুর যদি সম্ভব হয় তবে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি পাঠাতে পারে এমন ধারা রয়েছে। এদিকে গোলাম রাব্বানীর এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের মনোজগতকে দাসত্বের শৃঙ্খলে বেঁধে ফেলার একটি চক্রান্ত উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রের সর্বশেষ মুক্তচিন্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার চর্চার পীঠস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও শৃঙ্খলিত করা হলো এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। সারাদেশে যখন চরম গণতন্ত্রহীনতা বিরাজ করছে তখন দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন সমগ্র জাতির মধ্যে আশার সঞ্চার করেছিলো। কিন্তু স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ চর্চার ধারাবাহিকতা আমরা ডাকসু নির্বাচনেও দেখতে পাই।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের মতোই ভোট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচনে নির্বাচিত ডাকসু এখন শিক্ষার্থীদের স্বাধীন মত প্রকাশ, মনন বিকাশ ও অবাধ গণতন্ত্র চর্চাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। সহশিক্ষা কার্যক্রমে এই ধরনের কেন্দ্রীকতার চর্চা শিক্ষার্থীদের মনোজগতকে দাসত্বের শৃঙ্খলে বেঁধে ফেলার একটি চক্রান্ত।
অন্যদিকে টিএসসির সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সক্রিয়তা নষ্টের পক্ষে নয় ডাকসুর এজিএস ও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক স্টাটাসে তিনি বলেন, টিএসসির সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের স্বাতন্ত্র্য, স্বকীয়তা ও স্বাধীনতার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ দায়বদ্ধ। কোন নিয়ন্ত্রণ বা নজরদারি নয়, নির্বাচিত নেতৃত্ব এবং সকল প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের দায় রয়েছে তাদের বিকাশে পাশে থাকার।
এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, এটা একটি ভূল বোঝাবুঝির অবকাশ হয়েছে। ইতোমধ্যেই টিএসসির সংগঠনগুলোকে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছি। মতবিনিময় সভা করে বিষয়টি পরিষ্কার করা হবে। গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির ব্যপারে সমালোচনা করে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, এই ধরনের কর্তৃত্বমূলক কোন আলোচনা ডাকসুতে করা হয়নি। এটা তিনি তার ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা থেকে দিয়েছেন। তার এ ধরণের স্বেচ্ছাচারিতামূলক সিদ্ধান্ত ডাকসুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিষয়টি নিয়ে ইনকিলাব থেকে গোলাম রাব্বানীকে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন ধরে কোন কথা বলেননি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ