Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কমেছে কর্মসংস্থান -সিপিডি

প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থান কমেছে, যা অর্থনীতির জন্য সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইন আগামী জুলাইতে চালু হলে হলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে বলে মনে করছে সংস্থাটি। এছাড়াও আগামী বাজেটে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০১৫-১৬ ‘তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ হবে বলে আশা করছে সরকার। কিন্তু জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়লেও সেই হারে আমাদের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান বাড়েনি। একই সঙ্গে অর্থনীতির উৎপাদন সক্ষমতা কমেছে। তাই প্রবৃদ্ধির সংখ্যা বিবেচনায় না নিয়ে এর সঙ্গে যুক্ত সূচকের গুণগতমান উন্নয়ন করা উচিত।
সিপিডি জানায়, গত (২০১৩-২০১৫) দুই বছরেই উৎপাদন ও শিল্পখাতে ১২ লাখ কর্মসংস্থান কমেছে। যা শিল্পখাতে মোট কর্মসংস্থানের ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
নতুন ভ্যাট আইন প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এখন বিদ্যুতের উপর ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। নতুন আইনে বিদ্যুতের আরো ১০ শতাংশ বেশি ভ্যাটযুক্ত হবে। এতে বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। ফলে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এতে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়বে।
নতুন ভ্যাট আইন আধুনিক ও যুগোপযোগী জানিয়ে সিপিডি আরো জানায়, এ আইনের বিপক্ষে নয় সিপিডি। তবে এটি বাস্তবায়নে এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা নেই। তাই আইনটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে বলে মনে করছে সিপিডি। এছাড়াও ভ্যাট আইন সম্পর্কিত ব্যবসায়ীদের যে ৭টি আপত্তি রয়েছে সেসব বিষয়ে সুরাহা করা প্রয়োজন বলে মনে করছে সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলনে এক পরিসংখ্যান প্রতিবেদন তুলে ধরে সিপিডি জানায়, বিশ্বের ১৬১টি দেশের মধ্যে শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৫তম। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যখাতে ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৯তম। স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দের দিক থেকে বাংলাদেশের নিচে রয়েছে কম্বোডিয়া। তাই আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ আরো বাড়ানো প্রয়োজন। শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষাখাতে গবেষণার বরাদ্দ আরো বাড়ানো প্রয়োজন। সেই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজন পর্যাপ্ত বরাদ্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থান কমছে, বিনিয়োগ কমছে এবং উৎপাদন ক্ষমতা কমছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় দ্বন্দ্ব। তাই প্রবৃদ্ধির গুণগতমানের প্রতি নজর দেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেশের আর্থিক খাতের স্বাস্থ্য ভালো না। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। ব্যবস্থাপকদের সুনির্দিষ্ট ধারণার অভাব রয়েছে। তাই এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে সুশাসনের প্রয়োজন। এজন্য ব্যাংক ও আর্থিক খাতে কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি জানান, খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এদিকে বাজেট বাস্তবায়নেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। এর দুর্বল দিক হলো- এডিপি বাস্তবায়ন কম ও উন্নয়ন খাতে সরকারি ব্যয় কম হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল পর্যালোচনাটি তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। দেশের আইন-শৃঙ্খলার সঙ্গে বিনিয়োগের সম্পর্ক তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভারত এবং শ্রীলংকার মতো হলে দেশের বিনিয়োগ ভালো হতো।
সামাজিক খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সামাজিক খাতগুলোতে বরাদ্দ কমে যাচ্ছে। এখানে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এছাড়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কমেছে কর্মসংস্থান -সিপিডি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ