Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শঙ্কা আর প্রত্যাশায় হালদা

কয়েকদিনের মধ্যে ডিম দিতে পারে মা মাছ

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) : | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

অমবশ্যা ও ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’র প্রভাবে গতকাল শনিবার হালকা বৃষ্টি হলেও এশিয়ার বিখ্যাত মিঠা পানির নদী হালদায় মা মাছ ডিম দেয়নি। গতকাল মুশলধারে বৃষ্টি হবে তীব্র মেঘের গর্জন হবে হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়বে এমন প্রত্যাশায় শত শত ডিম সংগ্রহকারি ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’ কে উপেক্ষা করে প্রস্তুত থাকলেও অবশেষে নদীতে মা মাছের ডিম মিলেনি।
শনিবার ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়। বেলা সাড়ে বারোটার সময় ভারি বৃষ্টি আর মেঘের গর্জন থাকলেও মা মাছের ডিম দেয়ার পর্যাপ্ত ও উপযুক্ত সময় না হওয়ায় অমবশ্যা থাকলেও এই তিথীতে শেষ পর্যন্ত মাছের ডিমের দেখা পায়নি ডিম সংগ্রহকারিরা। তবে হয়তো আজ বা কাল বৃষ্টি আর মেঘের গর্জন থাকলে এই ভরা মৌসুমে ডিম দিতে পারে বলে মনে করছেন ডিম সংগ্রহকারিরা। এদিকে গত শনিবার হালদা নদীর পাড়ে বসবাসরত নব্বই দশকের পুরানো ডিম সংগ্রহকারি ও বর্তমান হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম বাশেকসহ আরও কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে হালদা নদীর পাড়ে অবস্থান করেছিল। এ সময় তারা বলেন, বৃষ্টি নেই, নেই তীব্র মেঘের গর্জন, নদীর পানির স্্েরাত নেই, তাই পর্যাপ্ত পরিবেশ না থাকায় মা মাছের জন্য ডিম দেয়ার উপযুক্ত নয় এখন। সেজন্য ডিম ছাড়তে পারেনি মা মাছ। মা মাছ ডিম না দিলেও গতকাল নদীতে মেল-ফিমেল মাছগুলো একসাথে বিচরণ করতে দেখা গেছে। সাধারণত মা মাছ ডিম দেয়ার ঘন্টা খানেক পূর্ব থেকে মেল-ফিমেল মাছগুলো একসাথে একে-অপরের গা ঘেঁষে চলাচল করে থাকে। এ দৃশ্য দেখে ডিম সংগ্রহকারিরা ধারণা করছেন হয়তো মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। এ আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা করলেও ডিম সংগ্রহকারিদের আশা অবশেষে পূরণ হয়নি। তবে মা মাছ দুই-একদিনের মধ্যে ডিম ছাড়বে বলে আশা করছেন।
এই অমবশ্যার সুযোগে ও ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুমে আজ বা কাল বৃষ্টি হয় তাহলে দুই-এক-দিনের মধ্যে মা মাছগুলো ডিম দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হালদা নদীর ওপর বিভিন্ন অত্যাচারে নদীর পুরানো ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যাওয়ার পথে। এদিকে হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কুম রয়েছে। মা মাছগুলো কুমগুলোতে ডিম ছাড়ে। এই কুমগুলো বর্তমানে প্রায় ভরাট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হালদা তীর ভাঙ্গনরোধে পাথরের বøক দেয়ার কারণে পেটে ডিম ভর্তি মা মাছগুলো বিচরণ করার সময় পাথরের বøকের ধাক্কা খেয়ে মারা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা। হালদা নদীতে মা মাছ অমবশ্যার কানায় কানায় ভরা নদীতে ডিম দেয়ার মৌসুম চলছে। কিন্তু এ মৌসুমে নানা কারণে ডিম না দেয়ায় মা মাছের জন্য বড় ধরণের অশনিসংকেত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ বছর যদি হালদা নদীতে মা মাছ ডিম না ছাড়ে তাহলে মা মাছ ও হালদা নদীর জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন ডিম সংগ্রহকারি ও হালদা বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল শনিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হালদা নদীর পাড়ে ডিম সংগ্রহকারিরা ডিম আহরণের আশায় নৌকা ও ডিম ধরার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে অপেক্ষায় ছিল। এ দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল যেন হালদা নদীর পাড়ে ডিম সংগ্রহকারিদের মিলনমেলা বসেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হালদা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ