‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এ অভিমত পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা এক আসামির আবেদন শুনানির জন্য ১৬ মে দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। অন্যদিকে আসামির রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার শিশির মনির।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল এ বিষয়ে আইনি মতামত দিতে সুপ্রিমকোর্টের ৪ বিশিষ্ট আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিষ্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এএফ হাসান আরিফ, আবদুর রেজাক খান ও মুনসুরুল হক চৌধুরী। ২০০১ সালে গাজীপুরে জামান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়ে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ পর্যবেক্ষণ আসে।
জানা যায়, ২০০১ সালে জামান হত্যার পর নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম গাজীপুর মডেল থানায় তখন হত্যা মামলা করেন। দ্রুত বিচার আদালত ২০০৩ সালে ওই মামলার রায়ে তিন আসামি- আনোয়ার হোসেন, আতাউর রহমান ও কামরুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্টেও রায় বহাল থাকে। পরে আনোয়ার ও আতাউর সাজা কমানোর জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। কামরুল পলাতক থাকায় আপিলের সুযোগ পাননি।
দুই আসামির আপিল শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৪ বিচারকের আপিল বেঞ্চ বলেছেন, এটি আমৃত্যু কারাবাস হিসেবে গণ্য হবে। পরে ২৪ এপ্রিল আপিল বিভাগের যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় সেখানেও বলা হয়েছে, দন্ডবিধির ৫৩ ধারা ও ৪৫ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড হবে আমৃত্যু কারাবাস। ফলে যাবজ্জীবন দণ্ডে দণ্ডিত সবাইকে আমৃত্যু কারাগারে থাকতে হবে বলে ওই সময় জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামিদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে এ রায়ের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র সচিব এবং কারা মহাপরিদর্শককে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ফৌজদারি কার্যবিধিতে বলা হয়েছে- ‘দণ্ডের মেয়াদসমূহের ভগ্নাংশসমূহ হিসাব করার ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাবাসকে ৩০ বছর মেয়াদি কারাবাসের সমতুল্য বলে গণ্য হবে।’