Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কলড্রপের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গ্রাহকদের কাছ থেকে কলড্রপ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। কলড্রপের ক্ষেত্রে আইটিইউ’র (আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা) বেঁধে দেওয়া কলড্রপ মান বজায় রাখা এবং সে অনুযায়ী কলড্রপের ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়। ক্ষতিপূরণের তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদের জানিয়ে দিতে বলেছেন প্রতিমন্ত্রী। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তারানা হালিম একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কলড্রপের ক্ষেত্রে আইটিইউ’র বেঁধে দেয়া মান বজায় রাখতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গ্রাহক অভিযোগ জানালে সে অনুযায়ী বিটিআরসি কলড্রপ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করবে। কলড্রপে ক্ষতিপূরণ প্রদান কার্যকর হয়েছে কিনা নির্দেশনা দেয়ার পর মোবাইল ফোন অপারেটররা তা কার্যকর করেছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দেশনা পাঠানোর পরই তা কার্যকর হয়েছে। তারানা হালিম বলেন, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে গ্রাহককে জানাতে হবে, গ্রাহক এ বিষয়ে জানতে না পারলে মনে করে তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। তাদের এসএমএস করে জানাতে হবে। জবাবদিহিতা থাকতে হবে, নইলে গ্রাহক মনে করে এখানে কোনো ফাঁক আছে, আমরা কোনো ফাঁক রাখতে চাই না। বিটিআরসি ও আইটিইউ নির্ধারিত মান অনুযায়ী, কলড্রপের হার ৩ শতাংশের কম হলে তা হবে মানসম্পন্ন সেবা।
বৈঠকের পর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহজাহান মাহমুদ জানান, মোবাইল ফোনে প্রতি কলড্রপে এক মিনিট করে ক্ষতিপূরণ দিতে অপারেটরগুলো নির্দেশনা পালন করছে কিনা- সে বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। কলড্রপের ক্ষতিপূরণ দিতে গত ১৯ জানুয়ারি অপারেটরদের ওই নির্দেশনা পাঠায় বিটিআরসি। চেয়ারম্যান বলেন, শুধু কলড্রপ নয়, বিটিআরসি ‘কোয়ালিটি অব সার্ভিস’ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। গ্রাহক সন্তুষ্টিতে প্যারামিটার আছে, একটি কল সেন্টার করা হচ্ছে। গ্রাহকরা সেই কল সেন্টারে অভিযোগ জানাতে পারবে। খুব শিগগিরই তা হবে। শিগগিরই একটি ‘শর্টকোড’ চালু করে গ্রাহকদের অভিযোগ নেয়ার বিষয়ে উদ্যেগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন না হলেও প্রতি সপ্তাহে গ্রাহককে জানাতে হবে তার কত কলড্রপ হয়েছে এবং কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ তাকে দেওয়া হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বলেন, কলড্রপের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে বিটিআরসির সাথে আলোচনা হয়েছে। প্রতিমাসে অপারেটররা বিটিআরসিতে রিপোর্ট করে। কলড্রপসহ মোবাইল ফোন গ্রাহকদের নানা ভোগান্তির প্রেক্ষাপটে তা নিরসনে গত অগাস্টে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) সঙ্গে বসে দুই মাস সময় বেঁধে দেন প্রতিমন্ত্রী। কলড্রপ সমস্যার সমাধান করতে না পারলে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান বা গ্রাহকদের টকটাইম ফেরৎ দেয়া যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখতে সে সময় বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন তারানা। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের কয়েকটি অপারেটর পরীক্ষামূলকভাবে কলড্রপে ক্ষতিপূরণের সুবিধা চালু করে ব্যাপক প্রচার চালালেও পরে কোনো ঘোষণা ছাড়াই তা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সরকারের মন্ত্রীরাও পরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভারতে গত বছর প্রতিটি কলড্রপের জন্য গ্রাহকদের এক রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে।
একই সভায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন বা পুনঃনিবন্ধনের সময় গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় করলে সংশ্লিষ্ট ‘রিটেইলারকে’ কালো তালিকাভুক্ত করে তার অনুমোদন বাতিল করা হবে বলে জানান তারানা হালিম। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার ফেইসবুক পেইজে অনেক অভিযোগ এসেছে- সিম নিবন্ধনে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ পর্যায়ে বাড়তি টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন,  আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অপারেটররা এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের ব্ল্যাকলিস্টেড করবে এবং তাদের রিটেইলারশিপ বাতিল করবে। অপারেটরগুলোকে এ ব্যাপারে দ্রুততার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অতি দ্রুত দৃষ্টান্ত দিতে হবে, এভাবে যারা টাকা আদায় করছে তাদের মধ্যে কমপক্ষে দুই থেকে তিনজনকে ব্ল্যাকলিস্টেড করে জানাতে হবে। গত ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হয়। এর ফলে গ্রাহকরা এখন আর আঙুলের ছাপ ছাড়া নতুন সিম কিনতে পারছেন না। পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরনো সিমের পুনঃনিবন্ধন চলছে, যা আগামী এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। ওই সময়ে পুনঃনিবন্ধন শেষ হবে কি-না জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, “আশা করছি, এ সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
নুরুল কবির বলেন, টাকা নিলে রিটেইলারদের ব্ল্যাকলিস্টেড করে তাদের অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্তে সব অপারেটর একমত হয়েছেন। এসময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মোবাইল অপারেটরদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কলড্রপের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ