Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অব্যাহত তাপ প্রবাহের সাথে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ডায়রিয়া আর চিকেনপক্সের সংক্রমনে জনজীবন বিপন্ন

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৯, ৩:৩৪ পিএম

বৃষ্টিবিহীন লাগাতর তাপ প্রবাহের সাথে ডায়রিয়া ও চিকেনপক্স সহ না রোগ ব্যাধীতে দক্ষিণাঞ্চলের স্বভাবিক জনজীবন অনেকটাই বিপন্ন। ১২মে পর্যন্ত সরকারী হিসেবেই বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলায় প্রায় ৩১হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এহিসেব শুধুমাত্র সরকারী হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসার জন্য আসা ডায়রিয়া রোগীদের। বাস্তবে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশী বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। আক্রাšেতর বেশীরভাগই শিশু। গ্রামের চেয়ে শহরের বেশীরভাগ ডায়রিয়া আক্রান্ত মানুষই কোন সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাননা। ফলে তাদের কোন হিসেবও সিভিল সার্জন সহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই। পাশাপাশি চিকেনপক্স আক্রান্তের কোন পরিসংখ্যানও স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে নেই। 

অপরদিকে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ঘরে এখন চিকেনপক্সের রোগী। এরোগ ও রোগীর কোন পরিসংখ্যানই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে পাওয়া যায়নি। তবে সমগ্র দক্ষিনাঞ্চল যুড়েই ঘরে ঘরে চিকেনপক্সের সংক্রমন অব্যাহত রয়েছে। ডায়রিয়ার মত চিকেনপক্সে আক্রান্তের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাধীক্য লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রথমে জ্বর থেকে শরির ব্যাথা দিয়ে উপসর্গ শুরু হয়ে পরে পানি সহ বিচির মত ভরে যাচ্ছে। অনেকেরই গা ব্যাথা আর জ্বর ৫-১০ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। শরিরে ছড়িয়ে পড়া জলবসন্তের এ গোটাগুলো শুকাতে ১৫ থেকে কুড়ি দিনেরও বেশী সময় লাগছে অনেকের। ফলে লেখাপড়া থেকে শুরু করে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকতে হচ্ছে। শিশু-কিশোরদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।
তবে চিকিৎসকগন চিকেনপক্স আক্রান্ত রোগীকে ঘরে আলাদা পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়ে কোন মতেই ঘরের বাইরে বিশেষ করে রোদে বের না হবার পরামর্শ দিয়েছেন। এসময় যতটা সম্ভব ঠান্ডায় ও পরিপূর্ণ পরিস্কা পরিচ্ছন্ন থাকা সহ সহজপাচ্য খাবার গ্রহনেরও পরমর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত জানুয়ারী থেকে ১২মে পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে প্রায় ৩১হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হবার কথা বলা হয়েছে। তবে এসময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে। সরকারী হিসেবমতে এসময়কালে সবচেয়ে বেশী মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে দ্বীপজেলা ভেলাতে। সেখানে এসময়কালে প্রায় ১০হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর পরে ছোট্ট জেলা ঝালকাঠীর অবস্থান। এসময়কালে ৪টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝালকাঠীতে প্রায় ৭হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়াও পিরোজপুরের প্রায় ৬ হাজার, বরিশালে প্রায় ৩ হাজার এবং পটুয়াখালী ও বরগুনাতে প্রায় ৭ হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এবার বৃষ্টির ঘাটতির সাথে অব্যাহত তাপ প্রবাহে দক্ষিনাঞ্চলের জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত। গত জানুয়ারী মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি মাসেই দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান যথেষ্ঠ কম। অথচ তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ৩-৪ডিগ্রী সেলসিয়াস ওপরে। গত ২৪এপ্রিল বরিশালে মৌশুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৪ডিগ্রী বেশী।
যদিও গত দুদিন ধরেই দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি সহ বজ্র বৃষ্টির সম্ভবনার কথা বলছে আবহাওয়া বিভাগ, কিন্তু এখনো আকাশ যুড়েই মেঘের কোন দেখা নেই। তাপমাত্রা পারদ এখনো ৩৫ডিগ্রী সেলসিয়াসের ওপরে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ