Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দাম পড়ে যাওয়ায় মাঠের ফুল মাঠেই ফেলে দিচ্ছে কৃষকরা

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০১৯, ৩:২৬ পিএম

দাম না থাকায় চাষীরা ফুল তুলে ক্ষেতের সারিগুলোতে ফেলে দিচ্ছে। অনেকে ক্ষেত থেকে তুলে ফেলে দিচ্ছে ঝোপঝাড়ে। আর যে সব কৃষকরা গাঁ করছে তাদের গাছের ফুল গাছেই ফুটে থাকছে। সৌন্দর্য বর্ধনে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ নামি-দাবি সব ফুলে সাজানো থাকে অতিথিদের আসন। ফুল ছাড়া বিয়ে অনুষ্ঠান আর সভা-সমাবেশে আগত অতিথিদের মঞ্চ-টেবিল যেন কল্পনাতীত। বাজারে ফুলের দাম না থাকায় সেসব ফুল এখন ধুলোয় লুটপুটি খাচ্ছে। পড়ে থাকছে ঝোপ-ঝাড় এবং রাজপথে। মাঠের পর মাঠ ফুল বাগানের এমন দৃশ্য দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুল উৎপাদনকারী এলাকা ঝিনাইদহের। তবে এমন অবস্থা বেশিদিন থাকবে না বলে আশা কৃষকদের।
বাজারে চাহিদা থাকলে যে গাঁদা ফুলের ঝোপা ২’শ থেকে আড়াই’শ টাকা পর্যন্ত ঝোপা বিক্রি হয়। সে ফুল এখন ২০ থেকে ৫০ টাকায় ঝোপা বিক্রি হচ্ছে। আর রজনীগন্ধার ১টি স্টিক ৫টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে পঞ্চাশ পয়সা দরে।
জেলার সবথেকে বেশি ফুলের চাষ হয় কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা এলাকায়। কথা হয় সেখানকার কৃষক আনোয়ার হোসেনের সাথে। ফুলচাষী আনোয়ার জানায়, এক ঝোপা গাঁদা ফুল জমি থেকে তুলে আড়তদারের কাছে পৌছাতে খরচ হয় প্রায় ৪৫ টাকা। সে ফুল এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। যে কারনে কৃষকরা ফুল তুলে বিক্রি না করে ফেলে দিচ্ছে। ফুল গাছ থেকে তুল না ফেললে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। যে কারনে কৃষকরা গাছ বাঁচাতে ফুল তুলে ঝোপ ঝাড়ে ফেলে দিচ্ছে।
আনোয়ার হোসেন আরো জানায়, এবছর আমি তিন বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছি। বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা। রমজানের শেষের দিক থেকে আবারো ফুলের দাম পাওয়া যাবে বলে আশা এই ফুলচাষীর।
ফুল চাষীরা বলছে পুরো রমজান মাস জুড়ে তেমন কোন সামাজিক ও রজনৈতিক অনুষ্ঠান বা ইভেন্ট না থাকায় দীর্ঘ এ সময়টাতে ফুলের কেনা-বেঁচা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাগানজুড়ে ফুটে থাকা গাঁদা, রজনীগন্ধ্যাসহ বিভিন্ন প্রকার নামি-দামি তরতাজা সব ফুল তুলে ফেলে দিতে হয়। রমজান মাস জুড়ে কমপক্ষে চারটি চালান বিক্রি করতে না পারায় কৃষকদের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হবে। তবে, ফুল সংরক্ষণের জন্য হিমাগারের থাকলে এ ক্ষতি কিছুটা হলে কমিয়ে আনা যেত বলে কৃষকরা জানালেন।
এদিকে কৃষকদের এমন দুঃসময়ের খবর জানে না জেলার কৃষি বিভাগ।

চলতি মৌসুমে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুল উৎপাদনকারী এলাকা হিসাবে পরিচিত ঝিনাইদহে ৪শ হেক্টরের বেশী জমিতে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগদ্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরাসহ নানা জাতের দেশী-বিদেশী ফুলের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে জেলার কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার মাঠে সবথেকে বেশি ফুলের চাষ হয়ে থাকে।

এদিকে কেন ফুল ফেলে দিচ্ছে কৃষকেরা সে খবর জানা নেই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের। তবে এভাবে ফুল ফেলে দেয়ার কথা শুনে বললেন কৃষকেরা যেন নিরুৎসাহিত না হয়ে পড়ে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন। কর্মকর্তারা বলছেন পরিকল্পিত ভাবে ফুলের চাষ করতে হবে। আর ফুল সংরক্ষণ করতে হলে বিশেষায়িত হিমাগারের জন্য সরকারী বেসরকারী উদ্যোগ নিতে হবে বলেও জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝিনাইদহ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ