Inqilab Logo

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগে শীর্ষে চীন

নতুন সরকারি তথ্য প্রকাশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের পদচিহ্ন ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে এবং বেইজিং এখন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সবচেয়ে বড় বিদেশী বিনিয়োগকারী। অফিসিয়াল তথ্যে দেখা যাচ্ছে, যেসব বিদ্যুৎ খাতে চীনা বিনিয়োগ এসেছে, সেগুলোতে আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
২০১৮ সালে বেইজিং বাংলাদেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যায়। এ বছর ঢাকা ৩.৬ বিলিয়ন ডলার মার্কিন সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) পেয়েছে বলে হিসেবে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলপমেন্ট অথরিটির (বিআইডিএ) পরিচালক জেনারেল শামস আল-মুজাহিদ বলেন, ‘চীনারা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগকারী। বিআইডিএ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিসের অধীনে কাজ করে। ২০১৮ সালে চীন সার্বিকভাবে ১.০৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০১৬ সালে তাদের বিনিয়োগের তুলনায় এটা ১৬ গুণ বেশি। ২০১৬ সালে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬১ মিলিয়ন ডলার।
আল-মুজাহিদ বলেন, ‘চীনারা এখন বলতে গেলে বিশ্বের সবখানেই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম নয়’। বিআইডিএ’র তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চীনের পরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী ছিল নেদারল্যান্ডস, যাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৯২ মিলিয়ন ডলার, ব্রিটেনের অবস্থান তৃতীয় যাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৭১ মিলিয়ন ডলার। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী ছিল ব্রিটেন এবং তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩১৩ মিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী এবং তাদের সরাসরি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১৭৪ মিলিয়ন ডলার।
১৯৮০ সালে ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট অ্যাক্ট চালু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের বিদেশী পুঁজির অন্যতম প্রধান উৎস হলো এফডিআই। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতে বিদেশী বিনিয়োগের দ্বার খুলে দেয়, কারণ দেশে গ্রাউন্ড-টেলিফোন অবকাঠামোর ঘাটতি ছিল। এ সময় নরওয়ের টেলিনর এবং মিশরের ওরাসকমের কাছ থেকে বিনিয়োগ এসেছিল।
কিন্তু বাংলাদেশ বিদ্যুৎ নিয়েও সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে স্মরণকালের ভয়াবহতম বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়ে দেশ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের একটি মাত্র ব্ল্যাক আউটের ফলেই প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেটা জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি।
বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ
ওবিওআরের অংশ হিসেবে চীনা ব্যাংকগুলো ২৩টি দেশে কয়লা চালিত বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য ২৩ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে। যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালিসিস (আইইইএফএ) এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ৭ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো শুধুমাত্র বিদ্যুৎ খাতেই ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। গত বছর চায়না হুয়াদিয়ান হংকং কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের মহেশখালি দ্বীপে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য স্থানীয় অংশীদারের সাথে চুক্তি করেছে।
‘কোন দায়বদ্ধতা নেই’
বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু দেশে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য তিনটি চীনা কোম্পানি লবিং শুরু করেছে – কর্মকর্তাদের এ ধরনের মন্তব্যের পর দুর্নীতির অভিযোগ আবারও চাঙ্গা হয়।
বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক বেনারনিউজকে বলেছেন যে, তিনটি চীনা কোম্পানির কর্মকর্তারা বিগত কয়েক মাসে তার সাথে দেখা করেছেন এবং দ্বিতীয় একটি পারমাণবিক প্ল্যান্ট নির্মাণের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ জানিয়েছেন। এটা নির্মাণে ১.৫ ট্রিলিয়ন টাকা ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৯ সালে সংসদে একটি আইন পাশ করা হয় যেখানে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে বেসরকারী খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে দুই বছরের জন্য এই সুযোগ দেয়া হয় যাতে জনগণের চাহিদা পূরণ করা যায়। কিন্তু প্রতি দুই বছর পর পর সেটার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অর্থনীতিবিদ রহমান বলেন, ‘পিডিবি তাদের কাজের জন্য দায়মুক্তি পেয়ে গেছে। তাই এই খাতে কোন দায়বদ্ধতা নেই’। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ