Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঈদ অজুহাতে কাটা হচ্ছে যাত্রীদের পকেট

বগুড়ায় সিএনজি ভাড়া দ্বিগুণ

মহসিন রাজু : | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ভাড়া কোথাও দ্বিগুণ কোথাও দ্বিগুণের কাছাকাছি বেড়েছে। ভাড়া বৃদ্ধির যুক্তি হিসেবে যাত্রীদের বলা হচ্ছে ঈদের এই সময়টায় দুটো পয়সা না কামালে কখন কামাবো। আরেকটি কারণ বলা হচ্ছে, চাঁদাও দ্বিগুণ হয়েছে তাই বাড়ানো হয়েছে যাত্রী ভাড়া।

বগুড়া শহরের বাসিন্দা জিয়া শাহীন প্রায়ই তার গ্রামের বাড়ি ধুনটে যান। বগুড়া থেকে ধুনটের রেগুলার ভাড়া ৬০ টাকা। কিন্তু গত শনিবার সকালে তিনি যখন ধুনটে যাওয়ার জন্য সিএনজি অটো রিক্সায় উঠেন তখন নিচু গলায় সিএনজি চালক আস্তে বললো স্যার ভাড়া কিন্তু ৭০ টাকা। ঈদের মওশুম মনে করে যাত্রী সেটা মেনে নিলেন। কিন্তু একই যাত্রী সন্ধ্যায় যখন ধুনট থেকে বগুড়ায় ফেরার উদ্দেশ্যে সিএনজিতে উঠতে গেলেন এবার সিএনজি চালক ভাড়া বললো ৮০ টাকা। বিরক্ত যাত্রী এবার প্রতিবাদের সুরে বললো, ঈদ বলেতো ১০ টাকা বাড়ালেই বেশি আরো ১০ টাকা কেন?

এবার সিএনজি চালক আঞ্চলিক ভাষায় বললো, স্যার আংগোরে চাঁদা যে ডবল হইছে। যাত্রী এবার সিএনজি চালকের সাথে যাত্রা পথের দীর্ঘ আলাপে জানতে পারলো, সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি সিএনজি প্রতি মালিক সমিতি যে টাকা তোলে সেটাই চেইন চাঁদা। বগুড়ায় সিএনজি থেকে চ্ইেন চাঁদা নেওয়া হয় ৬০ টাকা । এখন নতুন নিয়ম করা হয়েছে রাত ১১টার পর সিএনজি চললে আরেক দফা চাঁদা দিতে হবে। অর্থাৎ বগুড়ায় এখন প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি ৩২ হাজার রেজিস্টার্ড ও নন রেজিস্টার্ড সিএনজির প্রত্যেকটি থেকে ১২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। যার মোট পরিমাণ ৩৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। প্রতিদিন ওঠা এই চাঁদার টাকা ৩ শতাধিক আদায়কারীর মধ্যে সামান্য বেতন / ভাতা হিসেবে দিয়ে পুরোটাই মেরে দেয় ৫টি মালিক সমিতির হর্তাকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, চেইন চাঁদা ছাড়াও সিএনজি চালকদের বিভিন্ন পৌরসভার কালেক্টর ও মূল মালিক সমিতির বাইরের শ্রমিক সংগঠন ও সন্ত্রাসীদেরও দিতে হয়। এছাড়া যেসব নন রেজিস্ট্রার্ড (নম্বর বিহীন) সিএনজি আছে তাদের চালককে মাসে দিতে হয় আরো ৮শ’ টাকা করে। নতুন সিএনজি রুটে নামানোর আগে মালিক সমিতিকে চাঁদা দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। তবে যেসব সমিতির নামে এই বিপুল পরিমাণ টাকা তোলা হয় সেই টাকা নিয়ম মাফিক একাউন্ট করা হয় না। খরচের হিসাব জানানো হয় না সাধারণ সদস্যদের। পুরো টাকাই মেরে দেয় সিএনজি মালিক সমিতির প্রভাবশালী সদস্যরা ।

এই ভয়াল চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট সিএনজি মালিক ও চালকরা বলেছেন, এই সেক্টরে চাঁদাবাজি বন্ধ করলে যাত্রী ভাড়া অনেক কমানো যেত। উপকৃত হবে সিএনজি মালিক, চালক যাত্রী সকলেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ