Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিএসএমএমইউ-এ পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ

আমরণ অনশনে চাকরিপ্রার্থীরা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জে ১৫ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। এই হামলার প্রতিবাদে বিএসএমএমইউর একাডেমিক ভবনের নিচে আমরণ অনশন শুরু করেছেন অর্ধশতাধিক চাকরিপ্রার্থী চিকিৎসক। গতকাল রোববার বেলা ১১ টার দিকে আন্দোলনকারীরা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কনক কান্তি বড়–য়াকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করলে এ ঘটনা ঘটে। বিএসএমএমইউ-এ পুলিশের লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন ডা. দাউদ চৌধুরী। তার অবস্থাগুরুত্বর।

তবে ডিএমপি রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, পুলিশ কোন হামলা করেনি। আন্দোলনকারীরা ভিসিকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃৃপক্ষ আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। এ কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের একজন ডা. শিপন জানান, তারা বেলা ১১টার দিকে তাদের দাবি নিয়ে ভিসির সঙ্গে দেখা করার জন্য যাচ্ছিলেন, তখনই পুলিশ হামলা চালায়। পুলিশ ও হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের লাঠিচার্জে অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের হামলায় ডা. দাউদ চৌধুরী নামে এক চাকরি প্রার্থী আহত হয়েছেন। পুলিশের হামলায় তার কাঁধের হাড় নড়ে গেছে। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, আমরা শুধু ভিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু উনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপুরের পর থেকেই বি-বøকের নিচতলায় আমরণ অনশনে অবস্থান নিয়েছেন আরও প্রায় ৫০ জন নিয়োগ প্রত্যাশী। তাদের মতে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অনশন চলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, নিয়োগপ্রত্যাশীরা এসেছিলেন উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু এখানে এসে তারা হট্টগোল শুরু করলে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেন। তাদের উপর কোনো আঘাত করা হয়নি।

এছাড়া ঈদের দিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেট্রোলবোমা উদ্ধারের ঘটনায় এদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, পেট্রোলবোমা উদ্ধার হওয়ার পর থেকে আমাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর কাজ চলছে। এছাড়া কারা এ কাজটি করেছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তার আগে কিছু বলা যাবে না।

এদিকে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে উপাচার্য় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া তার কার্যালয়ের প্রবেশদ্বারের বাইরে অনশনরত চিকিৎসকদের সামনে এসে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল তারা কোনো অনিয়ম খুঁজে পায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই ১০ জুন থেকে ভাইভা শুরু হবে। তবে এ সময় বঞ্চিত চিকিৎসকরা নানা উদাহরণ টেনে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করতে থাকেন।

এরপর অন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে পুলিশি প্রহরায় তিনি (ভিসি) চলে গেলেও বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা ব্যানার টাঙ্গিয় বসে পড়েন। তাদের ঘিরে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত আনসাররা। প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান নিয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ বিএসএসএমইউতে ২০০ ডাক্তার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। তবে এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ