দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের জিডিপি কেবল বাড়ছে : জাতিসংঘ

কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর
ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর প্রস্তাবিত বাজেটকে একটি ধারাবাহিক বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন। তবে এ ধরনের বড় বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছেন। বৃহষ্পতিবার (১৩ জুন) বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে আদায় করতে হবে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরের তুলনায় এত বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা চ্যালেঞ্জিং। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেট পূরণে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অর্থায়ন করা হবে, যা সহনশীল বলে মনে করছে ডিসিসিআই। তবে এ জন্য বেসরকারীখাতে ঋণ প্রবাহ যেন কমে না যায় সেদিকেও সরকারের খেয়াল রাখতে হবে। আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এডিপি ব্যয় বৃদ্ধি দেশের অবকাটামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও গুণগত মান নিশ্চিত করা, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও সময়মতো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানান।
বিগত অর্থবছর বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ৫ শতাংশ যদিও মূদ্রানীতি অনুযায়ী বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। দেশের খেলাপি ঋণের ৪৮ শতাংশ সরকারি ব্যাংক খাতের। এছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে ‘ইনসলভেনসি অ্যান্ড ব্যাংক্রাপসি ল’ শিরোনামে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং এ ধরনের উদ্যোগ কে ঢাকা চেম্বার স্বাগত জানাচ্ছে। সরকারি ব্যাংকগুলোতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য প্রতিবছর বিপুল পরিমান অর্থ বাজেট থেকে বরাদ্দ রাখতে হয়। ফলে রাজস্বখাত থেকে আহরিত অর্থ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করার ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে প্রতিবছর খেলাপি ঋণের কারণে ঋণে সুদের হার হ্রাস করা যাচ্ছে না। ফলে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস বা ব্যবসা পরিটালন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংকিং কমিশন গঠন, মার্জার ও অ্যাকুইজিসন এর উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজেটে নিয়ে আসার প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করে। যদি মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, সেক্ষেত্রে জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ব্যাক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ টাকা করা যেতে পারে। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি ও ভ্যাট রিটার্ন পদ্ধতি সহজীকরণ করা প্রয়োজন। ভ্যাটের আইন সহজীকরণ ও হয়রানি যেন না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়ন ও করপোরেট কর হার হ্রাস না করা হলে, সরকারের প্রত্যাশিত বেসরকারি বিনিয়োগ ও উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগ বাড়বে না। আর বিনিয়োগ না বাড়লে, বাজেটে নতুন কর্মসংস্তান সৃষ্টির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি ইজ অব ডুয়িং বিজনেস এ উন্নয়নে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসসহ সকল ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রত্যাশা করছি। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশের লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব বলে মনে করি তবে এর সুফল ভোগ করতে হলে কর্মসংস্থান সহায়ক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং দেশি বিদেশি বিনিয়োগ আর্কষণ করা প্রয়োজন। বিশেষত বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে ৬৪টি জেলায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস বাস্তবায়ন এবং এখানে বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।