Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নাটোরে দেড় হাজারের আশ্রায়ণ

নাটোর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

 নাটোরে দেড় হাজার আশ্রয়হীনের আশ্রায়ন করা হয়েছে। অসহায় মানুষ-যাদের এক খন্ড জমি আছে, কিন্তু মাথা গোজার ঠাঁই নেই, তাদের জন্যে এগিয়ে এসেছে সরকার। সারাদেশের মত নাটোরেও বাস্তবায়িত হচ্ছে আশ্রয়ন প্রকল্প-২। প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে এক লাখ টাকার একটি করে বসতবাড়ি। প্রথম পর্যায়ে নাটোর জেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে এক হাজার ৬২০টি বাড়ি। যে ব্যক্তির এক থেকে ১০ শতাংশ জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই অথবা থাকলেও জরাজীর্ণ বসবাসের অনুপযোগী-এমন দুঃস্থ ব্যক্তি, অসহায় মুক্তিযোদ্ধা, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধি, উপার্জন অক্ষম ব্যক্তি, ভিক্ষুক, অতি বার্ধক্য ব্যক্তি প্রকল্প সুবিধা পাচ্ছেন।

প্রকল্পের মাধ্যমে উপকারভোগিদের জন্যে তৈরি করে দেয়া হচ্ছে-২৯৭ বর্গফুটের বারান্দাসহ টিনের একটি ঘর আর পাশেই টয়লেট। প্রতিটি বাড়ির উপকরণসহ নির্মাণ খরচ এক লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে আছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলী, সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। নলডাঙ্গা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের ৩০ বছর ধরে বিধবা জমেলা বেগম একদিন যার স্বামী ছিল, সংসারে প্রাচুর্য না থাকলেও স্বাচ্ছন্দ্য ছিল। স্বামী মারা যাওয়ার পরে কপাল পোড়ে জমেলা বেগমের। ছেলের চা স্টল থেকে উপার্জিত অর্থে কোনমতে সংসার চললেও ছিল না মাথা গোজার ঠাঁই। একই উপজেলার ব্রক্ষপুর গ্রামের প্রতিবন্ধি আব্দুর রাজ্জাক স্ত্রীকে সাথে নিয়ে থাকতেন পাটকাঠির বেড়া আর ছনের চালার ছোট একটা ঘরে। বৃষ্টি হলেই ছনের চালার ফাঁক ফোকড় দিয়ে ঘরের মধ্যে নেমে আসে পানি। প্রতিবন্ধি রাজ্জাকের স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসারের চাকা সচল রেখেছেন। এ ব্যাপারে নলডাঙ্গা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের গৃহবধূ শাহিনা, উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের ঠাকুর লক্ষিকোল গ্রামের দিনমজুর ঝড়– প্রকল্প থেকে নির্মিত ঘর পেয়ে উচ্ছ¡সিত।

নাটোর জেলায় প্রকল্প সুবিধা প্রাপ্তদের মধ্যে নলডাঙ্গা উপজেলায় রয়েছেন সর্বাধিক ৪০৮ পরিবার, কাছাকাছি ৪০০ পরিবার সুবিধা পেয়েছে নাটোর সদর উপজেলায়, সিংড়া উপজেলায় ২৯৩, লালপুরে ১৫৭, বড়াইগ্রামে ১৪০, গুরুদাসপুরে ১৩০ এবং বাগাতিপাড়া উপজেলায় ১০০ পরিবার রয়েছে। মোট এক হাজার ৬২৭ পরিবারের গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। প্রতিটি লাখ টাকা হিসেবে জেলায় এ খাতে খরচ হয়েছে মোট ১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

প্রকল্পের দিক নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করেই সুবিধাভোগী দুঃস্থ পরিবার নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানালেন নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রক্ষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান। নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আল রাব্বি জানান, প্রকল্পের নির্দেশিত ডিজাইন ও প্রাক্কলিত ব্যয়ে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।

নাটোর জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, যাদের জমি ও ঘর কোনটাই নাই, যাদের দশ শতাংশ পর্যন্ত জমি আছে কিন্তু ঘর নাই এবং যাদের দশ শতাংশ পর্যন্ত জমি ও জরাজীর্ণ ঘর আছে-এ তিন শ্রেণীতে জেলায় গৃহহীনের মোট সংখ্যা ১৪ হাজার ৭০০। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প তালিকার এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে কোন ব্যক্তি বা পরিবার আর গৃহহীন থাকবেনা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাটোরে দেড় হাজারের আশ্রায়ণ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ