আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নুসরাত ফারিয়া হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়েছে। বরগুনায় যে নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটেছে তারও বিচার অবশ্যই হবে। আমরা সরকারের দায়িত্ব পালন করব। কিন্তু যে জিনিষটা আমাদের আমলে নিতে হবে সেটা হচ্ছে বরগুনায় যে ঘটনা ঘটেছে তাতে দেখা গেছে যে, একটা ছেলেকে কয়েকজন গুন্ডা মারছে এবং সেটাকে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে এবং তা ভাইরাল করে দেয়া হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে ঢাকাস্থ রতনপুর পরিষদ আয়োজিত বার্ষিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, ছেলেটাকে রক্ষা করার জন্য কেউ এগিয়ে আসছে না বা তাকে রক্ষা করার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এই যদি সমাজের অবস্থা হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু আমাদের দুঃশ্চিন্তা হওয়ার কারণ আছে।
তিনি বলেন, আমাদের যারা ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের যারা ছোট ছোট বাচ্চারা আছে তারা যদি দেখে যে তাদের মুরব্বিরা এই ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না কিংবা সমাজ থেকে এই ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদ আসছে না তাহলে কিন্তু আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ভালো থাকবে না। এদেরকে কিন্তু আমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারব না। সে কারণে আমি সকলকে এ বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ করছি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। এজন্য ৩০ লাখ মানুষকে শহিদ হতে হয়েছে। আড়াই লাখ মা-বোনকে সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসির কাষ্ঠে যাওয়ার মতো অবস্থা মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা যদি স্বাধীনতাকে সার্থক করতে চাই, তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রয়োজন আছে। কিন্তু আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা ও কাঠামোও কিন্তু সুদৃঢ় করতে হবে। মানুষে মানুষে বন্ধুত্ব গভীর করতে হবে। আমার মনে হয় এখন এটাই আমাদের খুব প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের মনের উদারতা বৃদ্ধি পাক এবং তা দেখে সারা বিশ্ব মনে করুক যে বাংলাদেশে উদার ও ভালো মানুষ আছে। এই জিনিষটা যেন পরিচয় পায় আমরা সকলে মিলে সেই চেষ্টায় থাকব।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে, আমার গ্রাম, আমার শহর। সরকার এ বিষয়ে নিশ্চয়ই কাজ করে যাবে কিন্তু সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেকের নিজস্ব গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই আমাদের সেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য একটাই। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী, মর্যাদাশীল, উন্নত দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত করা। তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে রতনপুর পরিষদের মতো সংগঠন থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ তারা একটা সমাজ ব্যবস্থাকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তারা যে চেষ্টা করছে তার ছাপ কিন্তু গ্রামেও পড়বে। পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী মনজুর কাদের এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী হাবিব উল্লাহ, সহ-সভাপতি ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক আবুল হাসান খান প্রমুখ।