Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভাড়ার টাকা চাওয়াতে চালককে পেটালো কুবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

কুবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৯, ৭:০৩ পিএম

মাইক্রো বাসের ভাড়া বাবদ পাওনা টাকা না দিয়ে উল্টো চালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দক্ষিণ মোড়ে এই মারধরের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলম দীপ্তসহ শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী স্থানীয় মাইক্রোবাস চালক মো. ফারুককে নিয়ে চট্টগ্রামের বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণায় ঘুরতে যায়। যেখানে তাদের মধ্যকার ৫০০০ টাকার চুক্তি হয়। কিন্তু তারা চালককে ৩০০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে দেয়ার কথা বলে। পরবর্তীতে ফারুক রাতে দীপ্তকে ফোন দিয়ে টাকা চাইলে সে তাকে হলে যেতে বলে। ফারুক টাকা নিতে হলে গেলে তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা না দিতে চাইলে এক পর্যায়ে চালকের সাথে বাক-বিতন্ডা হয় এবং দীপ্ত চালকের তার সাথে খারাপ আচরণ করে ও তাকে মারধরের হুমকি দেন। পরের দিন শুক্রবার (২৮ জুন) ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ^বর্তী দক্ষিণ মোড়ে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আলী বোখারীর নেতৃত্বে অর্থনীতি বিভাগের ১২ তম ব্যাচের সিফাত, মাহাদী, রিজওয়ান, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১২ তম ব্যাচের সালমানসহ বেশ কয়েকজন উশৃঙ্খল নেতা-কর্মী চালককে বেধড়ক মারধর করে। এতে ফারুকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয় এবং মারাত্মক আহত হয়। ফারুককে আহত অবস্থায় কুমিল্লা শহরের মুন স্পেশালাইজ হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। এ ঘটনা এলাকাবাসী জানতে পারলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদেরকে শান্ত করে।
মারধরের শিকার চালক মো. ফারুক বলেন, ‘আমাকে পাঁচ হাজার টাকার চুক্তিতে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে এসে তারা আমাকে তিন হাজার টাকা দিলে বাকি টাকার জন্য রাফিউল আলম দীপ্ত আমাকে দত্ত হলে যেয়ে টাকা আনতে বলে। সেখানে গেলে তিনি আমাকে মাত্র পাঁচশত টাকা দেন। আমি বাকি টাকা চাইলে তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ করে হুমকি দেন। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় আলী বোখারীর নেতৃত্বে ১০-১২ জন নেতা কর্মী আমাকে বেধড়ক মারধর করে।

কিন্তু ভাড়া নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে এই বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান অভিযুক্ত রাফিউল আলম দীপ্ত বলেন, ‘মাইক্রোবাসের ভাড়া বাবদ যে টাকা ফারুক চেয়েছে আমি তাকে দিয়ে দিয়েছি। পরে সে হলে এসে আমার কাছে নেশা করার জন্য টাকা চায়। আমি না দেয়ায় সে অকথ্য ভাষায় আমার সাথে কথা বলে এবং আমাদের হলের ছেলেদেরকে হল থেকে বের করে মারবে বলে হুমকি দেয়।’
অভিযুক্ত আলী বোখারি বলেন, ‘ফারুককে ক্যাম্পাসের দক্ষিণ মোড়ে পেয়ে দীপ্ত ভাইকে হলে হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে উনি আমার সাথে খারাপ আচরণ করে আমাকে মারতে আসলে আমি ও আমার সাথে থাকা বন্ধুদের সাথে তার হাতাহাতি হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘চালক ফারুকের সাথে আমার কথা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী যদি কোন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, মারধরে নেতৃত্ব দেয়া শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আহমেদ আলী বুখারীকে এর আগে দলীয় আচরনবিধি লঙ্ঘনের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অপর অভিযুক্ত রাফিউল আলম দীপ্তর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইকবাল খানকে ও ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর রায়হান ইসলাম নামের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সপ্তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ