Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চীন গেলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লী কেকিয়াং’র আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে চীন গেছেন। গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি-১৭২০) দালিয়ানের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। বিমানটি রাতেই চীনের লিয়াওনিং প্রদেশের দালিয়ানের দালিয়ান ঝৌশুজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা শেষে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে শাংগ্রি-লা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। দালিয়ান সফরকালে তিনি এ হোটেলেই অবস্থান করবেন। সফরকালে তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিবেন এবং বেইজিং এ চীনের প্রধানমন্ত্রী লী কেকিয়াংও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

আজ চীনের দালিয়ানে তিন দিনব্যাপী ‘ডব্লিউইএফ অ্যানুয়েল মিটিং অব দ্যা নিউ চ্যাম্পিয়নস-২০১৯’ শুরু হবে। যা ডব্লিউইএফ সামার দাভোস নামেও পরিচিত। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘লিডারশীপ ৪.০- সাকসিডিং ইন এ নিউ ইরা অব গ্লোবালাইজেশন।’ লিয়াওডং রাজ্যের দালিয়ান উত্তর পূর্ব এশিয়ার ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র এবং উত্তর চীনের হংকং হিসেবেও সুপরিচিত।

আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠেয় ডবিøউইএফ সামার দাভোস সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিবেন। শেখ হাসিনা দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে বিশ্ব অথনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস শোয়াবের কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বিকেলে ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন।

বিকেলে দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে শোয়াবের দপ্তরে অনুষ্ঠেয় ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারের সরবরাহকৃত একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় বেইজিংয়ের উদ্দেশে দালিয়ান ত্যাগ করবেন। একই দিন বিমানটি স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছবে।

বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে দিয়ায়োতাই স্টেট গেস্ট হাইজে নিয়ে যাওয়া হবে। চীনের রাজধানীতে সফরকালে শেখ হাসিনা এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।
বিকেলে তিনি বেইজিংয়ের লিজেনডাল হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দিবেন। আগামী বৃহস্পতিবার সকালে শেখ হাসিনা স্বাগত অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বীরদের স্মৃতিতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

পরে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক ভোজসভায় অংশ নিবেন। একই দিন বিকালে শেখ হাসিনার সিসিপিআইটিতে চীনা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি বিজনেস গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নিবেন। ৫ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রীর চাইনিজ থিংক ট্যাংক ‘পাঙ্গোয়াল ইনস্টিটিউশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।

চীনের বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ শেখ হাসিনার সঙ্গে তার হোটেল স্যুটে দেখা করার কথা রয়েছে এবং এনপিসি’র চেয়ারম্যান লি ঝাংশুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলে শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দিয়াওইয়ুতাই রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় এক বৈঠকে মিলিত হবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একই স্থানে চীনা প্রেসিডেন্টের আয়োজিত একটি ভোজ সভায় অংশ নেবেন। চীন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় ৬ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন এবং একই দিন বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) পৌঁছবেন।

‘ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম’স অ্যানুয়াল মিটিং অব দ্য নিউ চ্যাম্পিয়নস ২০১৯-এ অংশ নিতে ডালিয়ানে আগামী সপ্তাহে বিভিন্ন দেশ থেকে ১ হাজার ৮শ’র বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এদের মধ্যে সরকার প্রধান, রাষ্ট্র প্রধান, ব্যবসায়ী নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পীরাও থাকবেন। সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বিশ্বের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও কারিগরী সংকটের সঙ্গে কিভাবে খাপ খাওয়ানো যায় তার একটি নতুন কৌশলগত উপায় সম্পর্কে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করবেন।

চীন সফরকালে বাংলাদেশ এবং চীন অর্থনৈতিক, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে আটটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে। এগুলো হচ্ছে- ১. ডিপিডিসি এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহের সম্প্রসারণ এবং শক্তিশালীকরণে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি। ২. গভর্মেন্ট কনসেশনাল লোন এগ্রিমেন্ট অব এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেন্দেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিডিডিসি এরিয়া প্রজেক্ট। ৩. প্রেফারেন্সিয়াল বাইয়ার্স ক্রেডিট লোন এগ্রিমেন্ট অব এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেন্দেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রজেক্ট। ৪. ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অব পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেন্দেনিং প্রজেক্ট আন্ডার পিজিসিবি প্রজেক্ট।

৫. এগ্রিমেন্ট অন ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কোঅপারেশন বিটুইন দি গভর্নমেন্ট অব দি পিপল’স রিপাবলিক অব বাংলাদেশ অ্যান্ড গভর্নমেন্ট অব দি পিপল’স রিপাবলিক অব চায়না। ৬. মেমোর্যান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) অন দি ইস্ট্যাবলিশমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট কোঅপারেশন ওয়ার্কিং গ্রুপ। ৭. এমওইউ অ্যান্ড ইটস ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যান অন হাইড্রোলজিক্যাল ইনফরমেশন শেয়ারিং অব ইয়েলো জাংবো/ব্রহ্মপুত্র রিভার। ৮. সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পর্যটন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ