Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আল-কোরআনে তাগুত প্রসঙ্গে

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

মানবের চির দুশমন ইবলিশ-শয়তানের অপর বিখ্যাত নামটি হচ্ছে ‘তাগূত’। কোরআন এর ৮টি স্থানে ‘তাগূত’ শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। স্থানগুলো এই: সূরা বাকারা- ২৫৬, ২৫৭, সূরা নিসা- ৫১, ৬০ ও ৭৬, সূরা মায়েদা- ৬০, সূরা নাহল- ৩৬ এবং সূরা যুমার- ১৭ নং আয়াত।

‘তাগূত’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ অবাধ্যতা। শয়তান, প্রতিমা ও দূরাত্মাকেও ‘তাগূত’ বলা হয়। ‘তাগূত’ এর আরও অর্থ রয়েছে, যেমন- সীমালংঘনকারী, দুষ্কৃতির মূল বস্তু যা মানুষকে বিভ্রান্ত করে ইত্যাদি। শয়তান, কল্পিত দেব-দেবী এবং যাবতীয় বিভ্রান্তিকর উপায়-উপকরণ ‘তাগূত’ এর অন্তর্গত। ‘তাগূত’ সম্বলিত আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে কোরআন এর ভাষ্যকারগণ ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন।

শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাব্বির আহমদ উসমানী (রহ:) সূরা নাহলের ৩৬ নং আয়াতে উল্লেখিত ‘তাগূত’ শব্দের অর্থ করতে গিয়ে হযরত শাহ সাহেব (রহ:) কে উদ্ধৃত করে বলেন, “এবং হুড় ডাঙ্গুদের থেকে বেঁচে থাক।” অর্থাৎ হুড়ডাঙ্গা সে ব্যক্তি, যে অন্যায়ভাবে সর্দারীর (নেতৃত্বের) দাবি করে এবং তার কোনো সনদ বা প্রমাণ রাখে না, এমন লোককে ‘তাগূত’ বলা হয়। ভ‚ত, শয়তান এবং জবরদস্ত জালেম সবাই এর অন্তর্ভুক্ত।”

শব্দটির আভিধানিক বিভিন্ন অর্থ রয়েছে। যেমন- অলস মস্তিষ্ক, নাদান-মূর্খ, আহমক-বেকুফ, অগোছালো, অনুভ‚তিহীন, ছেলেদের হুড়াহুড়ি, লাফালাফি করা (খেলায়), ভবঘুরে, লম্পট ইত্যাদি। ‘তাগূত’ শব্দের মধ্যে এই সকল অর্থই অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু ‘তাগূত’ শব্দটি বহু শয়তানি কার্যকলাপের উৎস-কেন্দ্র, তাই ‘তাগূত’ শব্দ ব্যবহৃত আয়াত গুলোর অর্থ ও ব্যাখ্যা সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরা হল:

‘তাগূত’ শব্দের প্রচলন সামাজিক জীবনেও এত ব্যাপক যে, মানুষ শক্তিধর ও প্রভাবশালীদের অত্যাচার-নির্যাতনকেও ‘তাগূত’ শক্তির কার্যকলাপ বলে আখ্যায়িত করে থাকে। কোরআন এর যে সকল স্থানে ‘তাগূত’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে সে সকল আয়াতের শানে নুজুল ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ তফসীর গ্রন্থগুলোতে রয়েছে।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে আরবের ইহুদী, মোনাফেক এবং মোশরেক কাফেরগণ মহানবী (সা:) ও মুসলমানদের সাথে যে অসদাচরণ ও নির্যাতনমূলক আচরণ করে ‘তাগূত’ শব্দের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে যেমন শয়তানের অনুসারী আখ্যায়িত করেছেন, তেমনি প্রাচীনকালে নবীগণের সাথে ইহুদীদের দুর্ব্যবহারকেও ‘তাগূতি’ শয়তানি ও অন্যায় কার্যকলাপ বলেছেন। এ সম্পর্কে সূরা বাকারায় আল্লাহ বলেন;

“দীন সম্পর্কে জোর জবরদস্তি নেই। সত্য পথভ্রষ্ট হতে সুস্পষ্ট হয়েছে, যে ‘তাগূত’ কে অস্বীকার করবে ও আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে সে এমন এক মজবুত হাতল ধরবে যা কখনও ভাঙবে না। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও প্রজ্ঞাময়।” (আয়াত- ২৫৬)
কোরআন এর এ বিখ্যাত আয়াতটির বিশদ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ রয়েছে তফসীর গ্রন্থগুলোতে। এখানে আমাদের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘তাগূত’। এ আয়াতে ‘তাগূত’ বলতে কুখ্যাত ইহুদী নেতা কাব ইবনুল আশরাফ এবং বনি নজির ইহুদী গোত্রের হাই ইবনে আখতাব এবং তাদের অনুসারীদেরকে বোঝানো হয়েছে বলে বিভিন্ন তফসীর গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।

হিজরতের পর রসূলুল্লাহ (সা:) এর মদীনার জীবনে মক্কার মোশরেক, কাফের, ইহুদীরাই ছিল রসূলুল্লাহ (সা:) এর প্রধান শত্রু এবং তাদের মধ্যে মোনাফেক- বিশ^াসঘাতকদের ভ‚মিকা ছিল জঘণ্য। কাব ইবনুল আশরাফ রসূলুল্লাহ (সা:) কে খুবই কষ্ট দিত, নিন্দা সূচক কবিতা রচনা করত, কবিতায় সাহাবায়ে কেরামের স্ত্রীগণ সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করত। বদর যুদ্ধে মক্কার কাফেরদের শোচনীয় পরাজয়ে কাব ইবনুল আশরাফ মক্কায় গমন করে এবং কোরাইশকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেঝিত করে। তার জঘণ্য কার্যকলাপের কারণে রসূলুল্লাহ (সা:) এর নির্দেশে কয়েকজন সাহাবা কাবকে হত্যা করেন। সীরাত গ্রন্থগুলোতে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

হাই ইবনে আখতাব ছিল বনি নজির গোত্রের। এ গোত্রকে রসূলুল্লাহ (সা:) মদীনা হতে বহিষ্কার করেন। তাদের একটি দল খাইবারে গিয়ে বসবাস করতে থাকে। ওহোদ যুদ্ধের পর আবু সুফিয়ান কর্তৃক পুনরায় যুদ্ধের হুমকির প্রেক্ষিতে বনি নজির ও বনি ওয়ায়েলের যে সব সর্দার মক্কায় গিয়ে কোরাইশকে রসূলুল্লাহ (সা:) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে উস্কে দেয়, তাদের মধ্যে হাই ইবনে আখতাব অন্যতম। তারা কোরাইশকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। তাদের সাথে কোরাইশদের যে কথোপকথন হয়, সীরাত গ্রন্থগুলোতে তার বিবরণ রয়েছে। এ ঘটনা প্রসঙ্গে সূরা নিসার ৫১ নং আয়াতটি নাজেল হয়। তাতে বলা হয়:

“তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যাদেরকে কিতাবের এক অংশ দেয়া হয়েছিল। তারা ‘জিবত’ ও ‘তাগূত’ এ বিশ^াস করে! তারা কাফের সম্পর্কে বলে, এদেরই পথ মুমিনদের অপেক্ষা প্রকৃষ্টতর।”

আয়াতে ‘জিবত’ অর্থ প্রতিমা এবং আল্লাহ ব্যতীত সকল পূজা সত্তা বুঝানো হয়েছে। ‘জিবত’ শব্দের পাশাপাশি ‘তাগূত’ বলা হয়েছে। এ ঘটনাটি ছিল খন্দক বা পরিখা যুদ্ধের পটভ‚মিকা। সুতরাং, ‘তাগূত’ ও ‘জিবত’ এর অনুসারী সবাই শয়তানের অনুসারী, এটি কোরআন এর স্পষ্ট ঘোষণা।

‘তাগূত’ শব্দ ব্যবহৃত সূরা নিসার ৬০ নং আয়াত নাজেল হওয়ার একটি চমৎকার কাহিনী রয়েছে। ‘তাগূত’ এর অনুসারী এক ইহুদীকে হত্যা করার ঘটনায় হজরত উমর (রা:) ‘ফারুক’ উপাধীতে ভ‚ষিত হন। আয়াতটির অর্থ এই:

“তুমি কি তাদেরকে দেখনি যারা দাবি করে যে, তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তারা বিশ^াস করে, অথচ তারা ‘তাগূত’ এর কাছে বিচার প্রার্থী হতে চায় যদিও ওটা প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং শয়তান তাদেরকে ভীষণ ভাবে পথভ্রষ্ট করতে চায়!”
তফসীরে আয়াতটির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:
ইহুদীরা ঝগড়া, বিবাদ মীমাংসার ব্যাপারে সুযোগ সুবিধা ও উৎকোচ লেনদেনে অভ্যস্ত ছিল। তাই যে সব লোক মিথ্যাবাদী, মোনাফেক এবং দুর্নীতি পরায়ণ হত, তারা নিজেদের মামলায় ইহুদী আলেমদের নিয়ে যাওয়া পছন্দ করত এই জন্য যে, তারা ইহুদী আলেমদের সহানুভ‚তি লাভ করবে এবং এ সব লোক রসূলুল্লাহ (সা:) এর নিকট তাদের মামলা পেশ করা এই কারণে পছন্দ করত না যে, তিনি সত্যের প্রতি সহায়তা করবেন। সুতরাং, এক ইহুদী ও এক মোনাফেক প্রকাশ্যে যে মুসলমান ছিল, কোন ব্যাপারে দুই জনের ঝগড়া হয়, যে সত্যবাদী ছিল সে বলল, “চল আমরা মোহাম্মদ (সা:) এর খেদমতে গমন করি।” আর যে মোনাফেক মিথ্যাবাদী ছিল সে বলল; “চল আমরা কাব ইবনে আশরাফ এর নিকট গমন করি।” কাব একজন ইহুদী আলেম ও সর্দার। শেষ পর্যন্ত দু’জনই রসূলুল্লাহ (সা:) এর খেদমতে উপস্থিত হয় এবং বিষয়টি পেশ করে। রসূলুল্লাহ (সা:) ইহুদীর পক্ষে রায় দেন। মিথ্যাবাদী মোনাফেক বের হয়ে এসে বলতে থাকে, “চল, হযরত উমর (রা:) এর নিকট, তিনি মদীনায় ঝগড়া বিবাদের মিমাংশা করে থাকেন। তিনি যে ফয়সালা দেবেন, তা গ্রহণ করা হবে”। রসূলুল্লাহ (সা:) এর ফয়সালা সে মানতে রাজি ছিল না। সম্ভবত সে ভেবেছিল যে, সে ইসলামের দাবীদার হওয়ার সুবাদে ইহুদীর স্থলে রসূলুল্লাহ (সা:) তার পক্ষেই রায় দেবেন। অত:পর তারা উভয় হজরত উমর (রা:) এর নিকট গমন করে। তিনি তাদের বর্ণনা শুনেন এবং ইহুদীর বক্তব্য হতে জানতে পারেন যে, বিষয়টি রসূলুল্লাহ (সা:) এর খেদমতেও পেশ করা হয়েছিল এবং এ ব্যাপারে তিনি ইহুদীকে জয়ী সাব্যস্ত করেন। এ কথা শুনে হজরত উমর (রা:) মোনাফেককে হত্যা করেন (রসূলুল্লাহ (সা:) এর রায় না মানার ধৃষ্টতার জন্য) এবং বলেন, “যে কেউ এমন কাজির ফয়সালাকে মানবে না, তার ফয়সালা এটাই।” তার ওয়ারিশগণ রসূলুল্লাহ (সা:) এর খেদমতে এসে হজরত উমর (রা:) এর বিরুদ্ধে হত্যার বিচার দাবী করে এবং শপথ করে বলতে লাগল যে, হজরত উমর (রা:) এর নিকট এ জন্য গিয়েছিল যে, হয়তো এ বিষয়ে তাদের মধ্যে পরস্পর সন্ধি করিয়ে দেবেন, এই উদ্দেশ্য ছিল না যে, রসূলুল্লাহ (সা:) এর ফয়সালা অস্বীকার করা। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আয়াতগুলো নাজেল হয়, যাতে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করে দেয়া হয় এবং হজরত উমর (রা:) এর উপাধি হয় ‘ফারুক’। (তফসীরে উসমানী)

সূরা নিসার ৭৬ নং আয়াতে ‘তাগূত’ এর উল্লেখ এই ভাবে করা হয়েছে:

“যারা মু’মিন তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে এবং যারা কাফির তারা ‘তাগূত’ এর পথে যুদ্ধ করে। সুতরাং, তোমরা শয়তানের বন্ধুদের যুদ্ধ কর! শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল।”
‘তাগূত’ শয়তানের স্বার্থে কাফেররা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। তাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এ আয়াতে মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা দুর্বল মুসলমানদের ওপর কাফেরদের জুলুম ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পূর্বের আয়াতে তার উল্লেখ রয়েছে। ‘তাগূত’ এর বন্ধু-দোসর কাফেরগণের কথাই আয়াতে বলা হয়েছে।

‘তাগূত’ (শয়তান) এর যারা ইবাদত করে তাদের কতিপয়কে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরে পরিণত করে ছিলেন। সূরা মায়েদায় তার বর্ণনা রয়েছে। আয়াতে বলা হয়েছে:

“বল! আমি কি তোমাদেরকে এটা অপেক্ষা নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব, যা আল্লাহর নিকট আছে? যাকে আল্লাহ লানত করেছেন, যার ওপর তিনি ক্রোধান্বিত, যাদের কতক কে তিনি বানর ও কতক কে শূকর করেছেন এবং যারা ‘তাগূত’ এর ইবাদত করে, মার্যাদায় তাই নিকৃষ্ট এবং সরল পথ হতে সর্বাধিক বিচ্যুত।” (আয়াত: ৬০)

এ আয়াতে ইহুদীদের কথা বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর অবাধ্য ছিল। ফলে আল্লাহর অভিশপ্ত হয়েছিল এবং আল্লাহ তাদের আকার পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। প্রতিটি ‘তাগূত’ শব্দের ব্যবহৃত আয়াতের শানে নুজুল এবং প্রাসঙ্গিক ঘটনাবলী আলোচনা পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হবে যে, দুনিয়ার মানুষরূপী ‘তাগূত’ এর অনুসারীরা যত সব ধ্বংসাত্মক তৎপরতা ও মানবতাবিরোধী সকল কার্যকলাপের হোতা-নায়ক। কোরআন এর নানা স্থানে বহু প্রাচীন জাতির ধ্বংস কাহিনী এবং তাদের ওপর আজাবে এলাহী নাজেল হওয়ার বিবরণ রয়েছে। তাতে ‘তাগূত’ (শয়তান) এর আসল স্বরূপ প্রতিফলিত হয়েছে। বরবাদ হচ্ছে ‘তাগূত’ এর দোসর অনুসারীরা এবং ধ্বংস করছে মানব ও মানবতাকে।

‘তাগূত’ আস্ফালন বন্ধের একমাত্র নোসখা কোরআন ও হাদীসের দিকে প্রত্যাবর্তন করা। আল কোরআন এর বিভিন্ন স্থানে ‘তাগূত’ শব্দের উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা প্রচীন যুগের বিভ্রান্ত, খোদাদ্রোহী জাতি, ইহুদী, খৃষ্টান এবং ইসলাম যুগের ইহুদী, মোনাফেক, মোশরেক কাফেরদের বুঝানো হয়েছে, সাথে সাথে ‘তাগূত’ এর দোসর বন্ধুদের ন্যায় তফসীরের ব্যাখ্যানুযায়ী সকল যুগের অন্যান্য শ্রেণীর তাগূতি শক্তিবর্গও আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলা সকলকে এসব ‘তাগূত’ এর কবল হতে রক্ষা করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন