Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বজ্রপাতে নিহত ১৫

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম | আপডেট : ১২:১৬ এএম, ১৪ জুলাই, ২০১৯

দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে পাবনায় বাবা-দুই ছেলেসহ ৪, চুয়াডাঙ্গা ও ময়মনসিংহে ৩ জন করে, সুনামগঞ্জে ২, শেরপুর, মাগুরা ও রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে একজন করে।
পাবনা : পাবনার বেড়া উপজেলায় বাবা ও দুই ছেলেসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা সোয়া ২টার দিকে উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের পাচুড়িয়া গ্রামে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- মোতালেব সরদার (৫০), তার ছেলে ফরিদ সরদার (২০) ও শরিফ সরদার (১৮) এবং একই গ্রামের রহমত আলী (৫৫)। তাদের সবার বাড়ি বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের পাচুড়িয়া গ্রামে ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে বাবা ও দুই ছেলেসহ চার কৃষক পাচুড়িয়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশে একটি ডোবায় পাট ধোয়ার কাজ করছিলেন। বেলা সোয়া ২টার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে হঠাৎ একটি বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের লাশ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়।
চাকলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বলেন, বাবা ও দুই ছেলেসহ চার কৃষক পাচুড়িয়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশে একটি ডোবায় পাট ধোয়ার কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বজ্রপাতে তিন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকেলে উপজেলার বগাদির মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবার বাড়ি মেহেরপুরের কলাইডাঙ্গা গ্রামে। নিহতরা হলেন- কলাইডাঙ্গা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আলামিন হোসেন, বরকত আলীর ছেলে হামিদুল ইসলাম ও মৃত গোলাম মিয়ার ছেলে হোদা মিয়া।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে বগাদির মাঠে ট্রাকে কলা লোড করছিলেন তারা। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। এতে গুরুতর আহত হন তারা। তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে পুথক বজ্রপাতের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার ফুলপুর ও ফুলবাড়িয়া উপজেলায় গতকাল দুপুরে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ফুলপুরের বওলা ইউনিয়নের রামসোনা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে সোহাগ মিয়া (২৫), পয়ারী গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে জামাল উদ্দিন (৪০) ও ফুলবাড়িয়া উপজেলার হাতিলেইট গ্রামের মলিন বর্মণের ছেলে চৈতন বর্মণ (২২)। স্থানীয়রা জানান, ফুলপুর উপজেলার বওলা ইউনিয়নের রামসোনা গ্রামের হাঁসের খামারি সোহাগ মিয়া দুপুরে বাড়ির পাশে পতিত জমিতে হাঁস চড়ানোর সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের পয়ারী গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন দুপুরে বাড়ির পাশে জমিতে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে দুপুরে উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বড়বিলা বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে চৈতন বর্মণ নামে এক জেলে নিহত হন। নিহতের পরিবার জানায়, বড়বিলা বিলে বুচনা (বাইর) দিয়ে মাছ ধরতে যান দুই ভাই মনু বর্মণ ও চৈতন বর্মণ। দুপুরে হঠাৎ বজ্রপাতে ছোট ভাই চৈতন বর্মণ পানিতে ঢলে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় বড় ভাইয়ের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে বিল থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন বাবা ও ছেলে । গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মানিকখিলা এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন- মানিকখিলা এলাকার নিয়াজ আলীর ছেলে হারিদুল ইসলাম (৪৭) ও তার ছেলে তারা মিয়া (১২)। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত হারিদুল ইসলামের বাড়ির পাশেই একটি চিংড়ির খামার রয়েছে। সকালে ছেলে তারা মিয়াকে নিয়ে তিনি ওই খামারে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। তাহিরপুর থানার এসআই ঘটনার বলেন, মানিকখলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত হারিদুল ইসলামের একটি চিংড়ি খামার ছিল। সকালে তিনি ও ছেলে সেই খামারে যান। এ সময় সেখানে হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা।
শেরপুর : শ্রীবরদী উপজেলার রূপারপাড়া গ্রামে শুক্রবার সন্ধ্যায় বৃষ্টির মধ্যে মাঠ থেকে গরু আনার সময় বজ্রপাতে কাশেম মিয়া (৪০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহত কাশেম ওই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। খড়িয়া কাজীর চর ইউনিয়নের স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জাবের মিয়া বলেন, বিকেলে আকাশ কালো করে বৃষ্টি শুরু হলে কাশেম মিয়া বাড়ি থেকে মাঠে গরু আনতে যায়। এসময় পর পর কয়েকটি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে কাশেম মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় লংগড়পাড়া বাজারের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যেই তার মৃত্যু ঘটে।
মাগুরা : মাগুরার মহম্মাদপুর উপজেলার ঘোষপুর রিজিয়া রুবিয়া দাখিল মাদাাসার শিক্ষক মো. মাজেদ মন্ডল (৪২) বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাজেদ মন্ডল মহম্মাদপুর উপজেলার ধোয়াইল গ্রামের মৃত দরবেশ মন্ডলের ছেলে।
গোদাগাড়ী (রাজশাহী) : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাছমারা এলাকায় বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।নিহত কৃষকের নাম দুরুল হুদা। জমিতে কাজ করার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাটিকাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলী আযম তৌহিদ। তিনি জানান, বিকালে জমিতে কাজ করছিলেন দুরুল হুদা। এসময় বৃষ্টিসহ হঠাৎ বজ্রপাত ঘটে। এতে মাঠেই তার মৃত্যু হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ