Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাট চাষে স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা

মো. নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সোনালী আশ পাট চাষ করে স্বপ্ন ভঙ্গের আশঙ্কায় রয়েছেন রাজবাড়ীর কৃষকেরা। অতিরিক্ত গরম, সময় মতো বৃষ্টির অভাব আর পোকাড় আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্ত তারা। দ্রæত সময়ে পোকাড় আক্রমন কমাতে না পারলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজবাড়িতে গত বছর ৪৬ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল। এ বছর হয়েছে ৪৭ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ৩২০ হেক্টর বেশি। এ থেকে লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৯ হাজার মেট্টিক টন পাট। যা সারাদেশের উৎপাদিত পাটের ১৭ শতাংশ যোগান দিবে বলে মনে করছেন কার্যালয়টি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন, আলীপুর ইউনিয়ন ও খানখানাপুর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, এ সব এলাকায় মাঠের পর মাঠ শুধু পাটের আবাদ হয়েছে। কিন্তুু বাড়েনি পাটের আকার। বেশিরভাগ পাটেরই ডগা খেয়ে ফেলেছে পোকায়।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আহলাদিপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন। বাড়তি লাভের আশার এ বছর ২০ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। তিনি জানান, এ বছর সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় বৃদ্ধি পায়নি পাট। তাছাড়া পোকার আক্রমনে পাটের পাতা খেয়ে নষ্ট করায় ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

একই এলাকার কৃষক হোসেন মোল্লা জানান, গত বছর বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মন পাট পাওয়া গেলেও এ বছর পোকার আক্রমনে পাটের ডগা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিঘা প্রতি ফলন ৭ থেকে ৮ মনে নেমে আসবে বলে মনে হচ্ছে। এতে লোকসান গুনতে হবে সকল কৃষককে।

সুলতানপুর ইউনিয়নের কৃষক হারেজ ফকির জানান, এ বছর সার, কিটনাশক ও অন্যন্য খরচ বেড়েছে। এর উপর পোকার আক্রমন। এ বছর লাভ তো দূরের কথা আসল উঠা নিয়েই চিন্তায় আছি। আবার পানির অভাবে পাট পচানো নিয়েও আছে দুশ্চিন্তা। পোকার আক্রমন থেকে কিভাবে পাটকে রক্ষা করবো তা আমাদের জানা নেই। তাছাড়া আমাদের এলাকায় কোন কৃষি কর্মকর্তা আসেন না। আমাদের খোজও নেন না।

খানখানাপুর ইউনিয়নের ছোটব্রিজ এলাকার কৃষক মফিজুল জানান, পাট চাষ করে কৃষক এ বছর অনেক ক্ষতিতে পরবে। এ সময় পাট ৬ থেকে ৭ ফুট লম্বা হওয়ার কথা। আপনি সব ক্ষেতে গিয়ে দেখেন ৪ ফুটের চেয়ে বড় কোন পাট নেই। আমি কৃষি অফিসে ফোন করেছিলাম তবে কোন লাভ হয়নি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. বাহাউদ্দিন জানান, আর কয়েকদিন পর পাট কাটা হবে। আমি শুনেছি সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে পোকার আক্রমন হয়েছে। তবে মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। এতে কৃষকের তেমন ক্ষতি হবে না।

রাজবাড়ীর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, রাজবাড়ী জেলায় ৭৭ হাজার ৮ শ’ হেক্টর আবাদী জমি রয়েছে এর মধ্যে ৪৭,১২০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এ বছর কৃষকেরা যাতে বেশি ফলন পায় সেজন্য বিজে আট জাতের পাট বপনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সময় মতো পাট চাষ, সুষমভাবে সার প্রয়োগ ও কিটনাশক প্রয়োগে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তাছারাও পাট পঁচানোর আধুনিক পদ্ধতির পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ