Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রিয়ার ঔদ্ধত্যপূর্ণ সাফাই

‘প্রতিদিন ৬৩২ জন সংখ্যালঘু হারিয়ে যাচ্ছে’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আজগুবি তথ্য দিয়ে আলোচিত প্রিয়া সাহা আবারও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিলেন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেত্রী প্রিয়া সাহা গতকাল নিজের পক্ষ্যে সাফাই গেয়ে দাবি করেছেন তিনি তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতেই ট্রাম্পকে এ কথা বলেছেন। এমনকি তিনি আওয়ামী লীগ পন্থী বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আবুল বারাকাতের বইয়ের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বলেছেন, এখনো প্রতিদিন ৬৩২ জন হিন্দু বাংলাদেশ থেকে ‘নাই’ হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে টেনে এনেছেন তার বক্তৃতায়। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক গণমাধ্যমকর্মীকে দেয়া ভিডিও সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। পাশাপাশি তার ‘শারি’র ইউটিউব চ্যানেলে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের এই নেত্রী প্রিয়া সাহা বলেন, 'আমেরিকাও মৌলবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমি এ কথা বলেছি যাতে করে মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করে। যাতে আমাদের দেশে মৌলবাদের কোন উত্থান না ঘটে, বাংলাদেশে মৌলবাদের কবলে না পড়ে। সে জন্যাই আমি এ কথাটা বলেছি।'
প্রিয়া সাহাকে একজন প্রশ্ন করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে আপনি এমন কথা কেন বললেন যা নিয়ে এতো সমালোচনা হচ্ছে? এর জবাবে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলেন প্রিয়া সাহা। তিনি বলেন, এ কথাগুলো তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালে যখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্বাচনোত্তর চরম নির্যাতন চলছিল ৯৪ দিন ধরে। তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য সারা পৃথিবীতে ঘুরেছেন। সমস্ত জায়গায় বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে তার অনুসরণে আমি বলেছি। যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে কোন জায়গায় বলা যায় এটা আমি তার কাছ থেকে শিখেছি।
দেশের বিরুদ্ধে নয়, নিজেকে মৌলবাদ ও সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বলে দাবি করে বহুল আলোচিত প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার মৌলবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থানে রয়েছে। এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
প্রিয়া সাহার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে যা বলেছেন, তা তিনি তথ্যের ভিত্তিতেই তুলে ধরেছেন। দেশের বিরুদ্ধে নয়, নিজেকে মৌলবাদ ও সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার মৌলবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থানে রয়েছে। এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
প্রিয়া সাহার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে যা বলেছেন, তা তিনি তথ্যের ভিত্তিতেই তুলে ধরেছেন।
তিনি দেশ ছাড়বেন কেন এমন প্রশ্নও করা হয় ওই সাক্ষাতকারে। তিনি বলেন, 'আমি কেন দেশ ছাড়বো? আপনি আমাকে দেখেছেন, আমি বলেছি, আমি দেশে থাকতে চাই। ওটাই আমার প্রথম কথা। ওটাই আমার শেষ কথা।'
এদিকে গতকাল রোববার তার বেসরকারি সংস্থা ‘শারি’র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ওই বার্তায় বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ছিল ২৯ দশমিক ৭ ভাগ। আর ২০০১ সালের জরিপ অনুযায়ী এখন সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ৯ দশমিক ৭ ভাগ। এখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের লোক ১ কোটি ৮০ লাখ। তার মানে বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের লোক বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছেন। ১৯৪৭ সালের পর এখন যে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রয়েছেন, তার সঙ্গে হিসাব মেলালেই আপনারা বুঝতে পারবেন আমি কী বলতে চেয়েছি।
গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আবুল বারকাতের গবেষণার উদাহরণ দিয়ে প্রিয়া সাহা বলেন, আমি এক সময় তার (আবুল বারকাত) সঙ্গে কাজ করেছি। আবুল বারকাত বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই গবেষণায় দেখিয়েছেন প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। আমি সেই গবেষণা থেকেই রেফারেন্স দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন হয়েছে সেটা সকলেই জানেন। আর আমার নিজ গ্রামে ২০০৪ সালে ৪০টি হিন্দু পরিবার থাকলেও এখন সেই সংখ্যা মাত্র ১৩টি। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আমন্ত্রণে আমি এখানে এসেছি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার থেকে আয়োজিত ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনেও যোগ দেওয়ার উদ্দেশে আমি এখানে আসি। আমি হঠাৎ করেই এখানে আসি। সে কারণে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সেটা জানেন না। ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশ গুপ্ত বা বাদলদা এখানে আসার কথা জানতেন না। ##

 



 

Show all comments
  • Ash ২২ জুলাই, ২০১৯, ৭:০৮ এএম says : 0
    নিজ স্বার্থে সাপ নিয়ে খেললে একদিন ছোবল মারবেই, এটা আগে বোঝলে আজকে এরা এটা করতে সাহস পেত না
    Total Reply(0) Reply
  • Miah Muhammad Adel ২২ জুলাই, ২০১৯, ১০:২০ এএম says : 0
    বিশ্বব্যাপি দেশের বিরুদ্ধে এমন গোয়েবেলসি চালকে আইন মন্ত্রী মামুলি ব্যাপার বলছেন কেন? ভিন দেশীয়রা যখন আমাদেরকে প্রিয়ার রেফারেন্স্ দিয়ে দেশের সংখ্যালঘু অত্যাচারের কথা জিজ্ঞাসা করবেন, আইন মন্ত্রী তখন এসে কি জবাব দিয়ে থাকবেন?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ