Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জেরুজালেমে ৯ হাজার বছর পুরনো বসতির খোঁজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

৯ হাজার বছর আগের কোনও এক ভুলে যাওয়া অতীত। জানা ছিল না তার কথা। কিন্তু মাটি খুঁড়ে প্রত্মতত্ত্ববিদেরা যা দেখলেন তাতে চক্ষু চড়কগাছ। জেরুজালেম লাগোয়া প্রস্তরযুগের সেই বসতিতে রীতিমতো আধুনিক নগর পরিকল্পনার ছোঁয়া, ছিল চাষবাসেরও ব্যবস্থা। খুঁজতে খুঁজতে মিলেছে তিরের ফলার টুকরো, সে যুগের কোনও নারী তার প্রসাধনে ব্যবহার করতেন এমন কানের দুল-ও। সব মিলিয়ে নিওলিথিক জমানার এক বড় শহরের ছবি এখন প্রত্মতত্ত্ববিদদের সামনে। স¤প্রতি এমনই দাবি করেছেন ইজরায়েলের পুরাতত্ত্ব বিভাগের কর্তারা।

তাঁদের দাবি, ওই বসতিতে অন্তত ৩০০০ বাসিন্দার বসবাস ছিল। জেরুজালেম থেকে তিন মাইল পশ্চিমে, এখন যেখানে ইজরায়েলের মোৎজা শহর, সেখানেই বসতিটি গড়ে উঠেছিল। খননকার্যের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা জেকব ভার্দি অবশ্য জানাচ্ছেন, প্রত্মতাত্তি¡ক দিক থেকে ওই এলাকার গুরুত্ব অনেকদিন ধরেই স্বীকৃত। তবে এই সা¤প্রতিক আবিষ্কার গোটা দক্ষিণ

লেভান্ত অর্থাৎ ইজরায়েল, প্যালেস্তাইন, জর্ডন, দক্ষিণ লেবানন ও দক্ষিণ সিরিয়ার মধ্যে বৃহত্তম এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভার্দি। তার কথায়, ‹বাকি বসতিগুলির তুলনায় এটি অনেক বড় শহর।›

ঠিক কী রকম ছিল নব্য প্রস্তর যুগের ওই বসতি?

বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্লাস্টার ব্যবহারে রীতিমতো চমকে দিতে পারতেন সেখানকার বাসিন্দারা। যেভাবে সেখানকার দু›টি বাড়ির মধ্যে রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তাতে উন্নত নগর পরিকল্পনার ছাপ-ও স্পষ্ট। বিভিন্ন জায়গায় গুদামে শস্যদানা মজুত করে রাখা হত যার অর্থ চাষাবাদও চলত সে বসতিতে। তবে তিরের ফলা থেকে বিশেষজ্ঞদের আন্দাজ, জীবিকা হিসেবে শিকারকেই প্রাধান্য দিতেন বাসিন্দারা। তবে পশুপালন-ও যে হত, সেটা পশুদের হাড়ের অবশিষ্টাংশ থেকে স্পষ্ট।

ভার্দির দলের দাবি, যে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির সন্ধান মিলেছে ওই এলাকা থেকে, তা থেকে এটা বোঝাও কষ্টকর নয় অস্ত্র তৈরিতে রীতিমতো দক্ষ ছিলেন সে যুগের মানুষজন। ছুরি, গাছ কাটার অস্ত্র তো বটেই, ছিল প্রসাধনের জন্য ব্যবহৃত গয়না তৈরির মতো সু² হাতের কাজের পারদর্শিতাও। তার প্রমাণ স্বরূপ মিলেছে পাথরের ব্রেসলেট, বিভিন্ন ধরনের পাথরের তৈরি পুতুল, ইত্যাদি। এঁরা যে বর্র্হিজগতের সঙ্গে বাণিজ্যসম্পর্কও তৈরি করেছিলেন, সে ব্যাপারেও মোটামুটি নিশ্চিত প্রতœতত্ত¡বিদের দল। সব মিলিয়ে এই আবিষ্কারকে তাই ‹যুগান্তকারী› বলে মনে করছেন তারা।

এর অবশ্য আরও একটি কারণ রয়েছে। এর আগে জেরুজালেম থেকে যে সবচেয়ে পুরোনো ধ্বংসাবশেষটির সন্ধান মিলেছিল, সেটি ছিল ৭০০০ বছরের পুরনো। সে দিক থেকে দেখলে এই সা¤প্রতিক আবিষ্কার আরও পুরনো। ভার্দির কথায়, ‹আগে ধারণা করা হত, জেরুজালেম সংলগ্ন এলাকা ইতিহাসের ওই পর্বে ক‚ন্য ছিল। এ রকমও শোনা যেত যে নিওলিথিক সমাজ তখন ভেঙে পড়ছিল, গ্রামগুলি ছোট হয়ে আসছিল। কিন্তু মোৎজায় আমরা যা পেয়েছি তা ইতিহাসের সব ধারণা পুরো ভেঙে দিতে পারে।›

এই আবিষ্কারকে তাই ‹গেম চেঞ্জার› বলেই ধরছেন তারা। আপাতত তাই পরের ধাপের কাজ শুরু হয়েছে। থ্রি-ডি প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরো এলাকার তথ্য ধরে রাখার চেষ্টাই এখন মুখ্য যাতে সমস্ত খুঁটিনাটি ডিজিটালি ধরা পড়ে। কে জানে হয়তো তা থেকেই আরও নতুন কোনও রহস্যের খাসমহল খুলে যাবে! সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ