Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশের অর্জিত আকাশসীমায় ফ্লাইট, রাজস্ব নিচ্ছে ভারত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৯, ৬:৪৩ পিএম

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অর্জিত জলসীমার ওপর দিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল করলেও অবকাঠামো সমস্যার কারণে সেই রাজস্ব আদায় করা যাচ্ছে না। ওই আকাশপথ এখনো ভারতের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে রয়েছে এবং এসব ফ্লাইটের কাছ থেকে রাজস্বও আদায় করছে ভারত।

জানা গেছে, মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে বিশাল সমুদ্রসীমা জয়লাভের পর বাংলাদেশের অর্জিত জলসীমার ওপর দিয়ে বিমান চলাচলের জন্য পাঁচটি আন্তর্জাতিক রুটের খোঁজ পাওয়া গেছে। এয়ার ট্রাফিক সার্ভিস প্রদানের জন্য এ রুটগুলোর ট্রাফিক কন্ট্রোল বাংলাদেশ বুঝে নিতে পারলে রাজস্বপ্রাপ্তির খাতায় বছরে যোগ হবে প্রায় ২৫৫ কোটি টাকা। সূত্রগুলো জানায়, বর্ধিত জলসীমায় পাঁচটি রুটের মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক রুট চিহ্নিত করা গেলেও সেগুলো বাংলাদেশের রাডার ব্যবস্থার কাভারেজের বাইরে অবস্থিত। এ তিনটির মধ্যে ‘পি ৬৪৬’ নামে একটি রুটের সন্ধান পাওয়া গেছে যে রুট দিয়ে দৈনিক গড়ে প্রায় ৫৫টি এয়ারক্রাফট যাতায়াত করে। সম্প্রতি কারওয়ান বাজারের পেট্রোসেন্টারে ‘ব্লু ইকোনমি’-সংক্রান্ত এক সভায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচকের প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশের অ্যারোনটিক্যাল চার্জ অনুযায়ী ‘পি৬৪৬’ রুটে চলাচলকারী মাঝারি টাইপের এয়ারক্রাফটের চার্জ হিসাব করলে দৈনিক গড় রাজস্ব দাঁড়ায় (৫৫ গুণক ৩০০ মার্কিন ডলার) ১৬ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। দেখা যাচ্ছে এই একটি রুট থেকে বার্ষিক সম্ভাব্য রাজস্বের পরিমাণ ৬০ লাখ ২২ হাজার ৫০০ ডলার। সূত্র জানান, বাংলাদেশের অর্জিত আকাশসীমায় আরও দুটি আন্তর্জাতিক রুট চিহ্নিত করা গেছে ‘এন ৮৯৫’ ও ‘এম ৭৭০’ নামে। তবে রাডার এরিয়ার বাইরে থাকায় ওই দুটি রুটে চলাচলরত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের হিসাব সংগ্রহ করতে পারেনি বেবিচক। বেবিচকের তথ্যানুযায়ী অর্জিত জলসীমায় একটি আন্তর্জাতিক রুট থেকে যদি বছরে ৬০ লাখ ২২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার আয় হয়, তবে পাঁচটি রুটে সম্ভাব্য রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ ডলার।

স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ অর্জিত জলসীমার ওপর বাংলাদেশের যে আকাশসীমা রয়েছে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় সেখান থেকে বছরে ওই পরিমাণ রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে দেশ। এ বিষয়ে জানতে বেবিচকের ডিরেক্টর (এটিএস অ্যান্ড অ্যারোড্রোমস) আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ ফ্লাইট ওভারফ্লাইং করে। প্রতিটি বড় আকারের এয়ারবাস থেকে আমরা ৪০০ মার্কিন ডলার রাজস্ব পাই। এ রাজস্ব কোনোভাবেই মিসিং হওয়ার সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, কলকাতা থেকে “লিমা ৫০৭” একটি রুট বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে কিছুটা আকাশসীমা ব্যবহার করে আবার ভারতের আকাশসীমায় পড়েছে। ওই রুটে চলাচলকারী ফ্লাইটের যে কথোপকথন (বিএইচ) তা আমরা ঠিকভাবে শুনতে পাই না। আমাদের অনুরোধে কলকাতা পোর্ট কর্তৃপক্ষ সেই কথোপকথন পরিচালনা করছে, কিন্তু চার্জ আমরা আদায় করছি।’ তবে তিনি বঙ্গোপসাগরে অর্জিত জলসীমার ওপর দিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার কোনো তথ্য দিতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অর্জিত জলসীমার ওপর দিয়ে যে আকাশসীমা রয়েছে তা পাশের দেশ ভারতের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বঙ্গোপসাগরে অর্জিত ওই বিশাল এলাকার ওপর যেহেতু বাংলাদেশের আগে একচ্ছত্র অধিকার ছিল না, সেহেতু ওই আকাশসীমায় ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিওন গড়ে তোলার কোনো সুযোগ ছিল না। তবে এখন সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে এফআইআর বর্ধিত করতে হলে চট্টগ্রামে অবস্থিত রাডারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি অন্যান্য অবকাঠামো সুবিধাও গড়ে তুলতে হবে।



 

Show all comments
  • Mizan ২ আগস্ট, ২০১৯, ১১:৪৯ এএম says : 0
    Blue economy
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্লাইট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ