Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জর্জ ওয়াশিংটন-গান্ধীর চেয়ে বড় নেতা শেখ মুজিব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ব্রিটিশ মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা প্রয়াত লর্ড ফেনার ব্রকওয়ে একবার মন্তব্য করেছিলেন, ‘এক অর্থে, শেখ মুজিব (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) জর্জ ওয়াশিংটন, মহাত্মা গান্ধী ও ডি ভ্যালেরার চেয়ে বড় নেতা।’ এ ছাড়া অন্য আরো বড় বড় ব্যক্তি আছেন, তারাও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। এর মধ্যে একজন হলেন- ভারতের মনিপুর ও ঝাড়খন্ড রাজ্যের সাবেক গভর্নর বেদ মারওয়া। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার স্মৃতিচারণ করে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি আমার কর্মজীবনে জওয়াহেরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধীসহ অনেক ক্যারিশমেটিক বিশ্বনেতার সঙ্গে মিশেছি। কিন্তু আমি অবশ্যই বলব, তার মধ্যে তিনি (শেখ মুজিব) ছিলেন সবচেয়ে বেশি ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন।’

নয়াদিল্লি বিমানবন্দরে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বৈঠকের কথা স্মরণ করে মারওয়া আরো লেখেন, “ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সাধারণত রিজার্ভ ব্যক্তিত্বের মানুষ। কিন্তু এ দিনের ঘটনা ছিল ব্যতিক্রম। এর আগে তার মুখে এত বড় হাসি আমি কখনও দেখিনি। তিনি একজন যুবতী মেয়ের মতো হাসছিলেন। দু’জনের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল।”

ফেনার ও মারওয়ার মতো বিশ্বের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালির ভক্ত হয়ে উঠেছিলেন। যিনি ১৯২০ সালে বিশ্বের এই অঞ্চলের পলিমাটিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শেখ মুজিব, তার ক্যারিসমেটিক নেতৃত্ব, আকাশচুম্বী ব্যক্তিত্ব, তার অদম্য সাহস এবং জাতির প্রতি তার নিঃশর্ত শ্রদ্ধা ও অঙ্গীকারের ব্যাপারে তারা ব্যাপক প্রশংসা করেছেন।

এদের অনেকেই বঙ্গবন্ধুকে একটি প্রতিষ্ঠান, একটি আন্দোলন, একটি বিপ্লব, একটি গণ-অভ্যুত্থান এবং সবার ওপরে একটি দীর্ঘ অপশাসনের হাত থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির প্রধান স্থপতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে দেয়া তার ভাষণকে একটি মহাকাব্য হিসেবে মনে করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মতো খুব কমসংখ্যক বিশ্বনেতাই এ ধরনের ভাষণ দিয়েছেন।

১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বাংলাদেশের জাতির জনককে জড়িয়ে ধরে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। তবে আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতার দিক থেকে এ মানুষটি হিমালয়। তাই আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা পেলাম।’

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের খবর শোনার পর সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন এক বাঙালি সাংবাদিককে লিখেছিলেন ‘এটা তোমাদের জন্য একটি সর্বোচ্চ জাতীয় ট্র্যাজেডি। আমার জন্য এটা গভীর মাত্রায় ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি।’

সাংবাদিক ক্রিল ডান একবার তার সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে শেখ মুজিব একমাত্র নেতা যিনি রক্ত, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি ও জন্মগতভাবে একজন পুরোপুরি বাঙালি। তার শারীরিক গঠন ছিল বিশাল। ছিল তার বজ্রকণ্ঠ। তার ক্যারিশমা জনগণের ওপর ম্যাজিকের মতো কাজ করত। তার সাহস ও ক্যারিশমা তাকে এ সময়ের একজন সুপারম্যান-এ পরিণত করেছিল।’

প্রখ্যাত ব্রিটিশ সাংবাদিক স্যার মার্ক টালি তার মধ্যে এক মহান ক্যারিশমা আবিষ্কার করেন। তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবের বেশ কয়েকটি জনসমাবেশে আমি উপস্থিত ছিলাম। তার চমৎকার কণ্ঠস্বরে জনগণ সম্মোহিত হয়ে উঠত। সমাবেশে উপস্থিত জনগণের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি তা উপলব্ধি করি।’ উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুকে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল মার্ক টালির।

নয়া মিসরের প্রখ্যাত সাংবাদিক হাসনাইন হেইকল (আল-আহরাম পত্রিকার সাবেক সম্পাদক এবং প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসেরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী) বলেন, ‘নাসের কেবল মিসর ও আরব জগতের নন। তার আরব জাতীয়তাবাদ ও আরব জনগণের জন্য একটি মুক্তির বার্তা। একইভাবে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের একার নন। তিনি সব বাঙালির মুক্তির অগ্রদূত। তার বাঙালি জাতীয়তাবাদ বাংলার সভ্যতা ও সংস্কৃতির নতুন অভ্যুদয়। মুজিব বাঙালির অতীত ও ভবিষ্যতের একজন বীর।’

উপনিবেশ বা দখলদারদের হাত থেকে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জাতির জনক উপাধিতে ভূষিত করা হয়। যেমনÑ জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের, পিটার আই রাশিয়ার, সুন ইয়াট-সেন চীনের, স্যার হেনরি পার্কস অস্ট্রেলিয়ার, মিগুয়েল হিদালগো মেক্সিকোর, সাম নুজমা নামিবিয়ার, উইলিয়াম দি সিলেন্ট নেদারল্যান্ডসের, ইনার গারহার্ড নরওয়ের, জুলিয়াস নিরেরে তানজানিয়ার, জোমো কেনিয়াত্তা কেনিয়ার, কার্লোস মানেল কিউবার, মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক তুরস্কের, ড. আহমেদ সুকর্ন ইন্দোনেশিয়ার, টেংকু আবদুল রহমান মালয়েশিয়ার, মহাত্মা গান্ধী ভারতের এবং ডন স্টিফেন সেনানায়েক শ্রীলঙ্কার জাতির জনক। তাই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জাতির জনক।

 



 

Show all comments
  • Momin Mollah ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 2
    আলহামদুলিল্লাহ্‌
    Total Reply(0) Reply
  • Momin Mollah ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 2
    সারা জীবন থাকবে বংগবন্ধুর আদর্শ, সততা। দুনিয়ার সব নেতারা অবাক দেখে বংগবন্ধুর মহানুভবতা।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamrul Islam ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 2
    They are best for them and Mujib for us.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Maniruzzaman ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 2
    Of course & there are many reason of it
    Total Reply(0) Reply
  • Freedomfighter Mahmud Hasan Miah ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 1
    কারন, জাতির একচ্ছত্র ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে নেতা হয়েছিলেন।
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদী হাসান মিরাজ ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৫ এএম says : 2
    এটা সারা পৃথিবীর মানুষেরই জানা
    Total Reply(0) Reply
  • Humaun Kabir ২ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৫ এএম says : 2
    সালাম তোমায় , জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
    Total Reply(0) Reply
  • Bijan ২ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৩৪ পিএম says : 0
    Thanks for great news about Father of National.
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ২ আগস্ট, ২০১৯, ৯:০২ পিএম says : 0
    শতাব্দীর পর শতাব্দী শত শহস্র বসর বঙ্গবন্ধুর বিশাল ব্যাক্তিত্ব রাজনৈতিক সংগ্রামী জীবনের কঠিন কঠোর আর্ত ত্যাগ জীবন মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলা এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ত্রিশ লক্ষ শহীদের বুকের রক্তে রন্জীত সারা বাংলাদেশের পবিত্র মাঠি রক্তাক্ত গঙ্গা ক্ষত বিক্ষত শহীদের লাশ আর লাশ। লক্ষ লক্ষ মা বোনর ইজ্জতের বিনিময়ে লাল সবুজের পতাকা। এইদেশে নই সারাবিশ্বে বঙ্গবন্ধুর মত নৈতিকতা আদশ্যবান মানবতা বাদী মহান নেতা আর একটি নেই। আবার বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের আন্তর্জাতিক দেশীয় গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইতিহাসের বর্ররতম নিকৃষ্টতম ঘৃন্য হামলায় শহীদ হলো। বঙ্গবন্ধুর কন্যা কে বার বার হত্যা করতে চেয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর আদশ্যের কাছে পরাজিত রাজনৈতিক অরাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কুশিলভরা এখনো গভীর পরিকল্পনাই ব্যস্হ। শোকাবহ আগষ্টের এই দিনে কঠোরভাবে ভাবে সমগ্রজাতি রাষ্ট্র সবাই কে সফত নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে বিশ্ব মানবতার মা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। বিশ্ব বরন্য প্রভাবশালী নেতা শেখ হাসিনা আমাদের শেষ ঠিকানা। আছে থাকবে।
    Total Reply(0) Reply
  • বাবুল ১৮ মে, ২০২১, ৫:৩১ পিএম says : 0
    সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের উপর নির্যাতনে নিন্দা জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেখ মুজিব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ