Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মঠবাড়িয়ায় তিন হাজার একর আবাদী জমিতে পানিবদ্ধতার আশঙ্কা

পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে সড়ক সংস্কার

প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল হালিম দুলাল, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে

উপজেলার ধানী সাফা বাজার থেকে মিরুখালী বাজার পর্যন্ত সড়ক ও জনপদের (সওজ) প্রায় ৬ কিলো মিটার রাস্তা সংস্কার কাজে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়ায় ৭ গ্রামের প্রায় ৩ হাজার একর আবাদী জমিতে ভয়াবহ পানি বদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গ্রামগুলো হলো মিরুখালী ইউনিয়নের ওয়াহেদাবাদ, উত্তর মিরুখালী, বাদুরা, বড় শৌলা, ছোট শৌলা, ঘোপখালী এবং ধানী সাফা ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া গ্রাম। জানা যায়, মিরুখালী বাজারের উপকণ্ঠ দিয়ে প্রবাহিত লাইনের খালের উত্তর পাশের ধানী সাফা বাজার থেকে মিরুখালী বাজার পর্যন্ত সওজের প্রায় ৬ কিলো মিটার রাস্তাটি সম্প্রতি কার্পেটিং করা হয়েছে। উক্ত রাস্তার ভিতরের ৭ গ্রামের প্রায় ৩ হাজার একর আবাদী জমির বর্ষা মৌসুমে জমা পানি ছোট খাল ও নালা দিয়ে লাইনের খালে নিষ্কাশন হয়। রাস্তা কার্পেটিংয়ের সময় বাদুরা বাজার থেকে মিরুখালী কলেজ পর্যন্ত অংশে অপরিকল্পিতভাবে ২/৩টি পানি নিষ্কাশনের নালার মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ডাক্তার বাড়ি ও কলেজ সংলগ্ন প্রায় ১৫ মিটার প্রশস্থ ২টি খালে ৬ মিটার প্রশস্থ কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। এই সরু কালভার্ট দিয়ে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন না হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাছাড়া কলেজের ১শত গজ পূর্ব পাশে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে যার দু’মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি উঠা-নামা করে না। ফলে এই কলভার্টটি কোন কাজেই আসবে না বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরুখালী খালের দক্ষিণ পাশে বেড়ি বাঁধ আছে। খালের উত্তর পাশে বেরি বাঁধ না থাকায় বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানির চাপ বেড়ে যায় এবং তার সাথে বৃষ্টির পানি ৭ গ্রামের প্রায় ৩ হাজার একর নিচু জমিতে আটকে পানি বদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি বদ্ধতার কারণে গত প্রায় ১০ বছর ধরে কৃষকরা এই জমিতে ইরি-বোরো ছাড়া আর কোনো ফসল আবাদ করতে পারে না। কৃষকদের আশঙ্কা পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেলে পানি বদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে ইরি-বোরো ও রবি শস্য আবাদও বন্ধ হয়ে যাবে বলে। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে আবাদী জমিতে প্রবেশ করা পানি নামছে না বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। বাদুরা গ্রামের কৃষক মো. আবু (৫৫) জানান, “যেরহম কায়দা হেতে পানি ওঠবে আর নামবে না, আমন ধানতো অ-ইনা, সামনে ইরিও অ-ইবেনা, ঘরের মধ্যেও পানিতে পইচ্চা মরা লাগবে। বড় শৌলা গ্রামের কৃষক মো. শাহ আলম আকন (৫০) জানান, পানি নিষ্কাশনের পথ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর পানি নামছে না। আগামী বর্ষা মৌসুমে পানি বদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নেবে বলে শাহ আলম জানান। সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন জানান, পানি নিষ্কাশন না হলে আমনের পর ইরি-বোরো ও রবি শস্য আবাদের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এ ব্যাপারে সওজের পিরোজপুর অফিসের এসও মো. মতিয়ার রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সড়ক সংস্কারে পানি নিষ্কাশনের নালা মুখ বন্ধ করা এবং সরু কালভার্ট নির্মাণ পরিকল্পনা ভুল ছিল বলে তিনি স্বীকার করেন। এ ব্যাপরে সওজের পিরোজপুর অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলে রাব্বির সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জেলা সদরের বাইরে থাকায় পরে কথা বলবেন বলে জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মঠবাড়িয়ায় তিন হাজার একর আবাদী জমিতে পানিবদ্ধতার আশঙ্কা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ