Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অটিজম আক্রান্ত শিশুর জন্য অকুপেশনাল থেরাপি

প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অটিজম কি? অটিজম শিশুদের একটি বিকাশজনিত রোগ যা শিশুর ৩ বছরের আগে সনাক্ত করা হয়। এটি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট করে যার ফলে শিশুদের সামাজিক আচার-আচরণ এবং যোগাযোগ দক্ষতা বাঁধাগ্রস্ত হয়। অটিজমকে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅরডার, কোন কোন ক্ষেত্রে এস্পারগার সিনড্রোম এবং পারভেসিভ ডেভলপমেনটাল ডিজঅর্ডারও বলা হয়।
অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য অকুপেশনাল থেরাপির আকর্ষণ :
অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসার লক্ষ্য হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম যেমন খাওয়া-দাওয়া, জামা-কাপড় পরিধান করা, সামাজিক কাজকর্মে চলাফেরা, নিরাপত্তা পদ্ধতি অবলম্বন, শিক্ষা, চাকরি, অবসরমূলক কাজ, সামাজিক কাজ ইত্যাদি কাজে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা। অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য অকুপেশনাল থেরাপি মূলত অংশগ্রহণের জন্য ব্যক্তির চাহিদা, কাক্সিক্ষত লক্ষ্য এবং প্রাধান্য পূরণে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে।
অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবায় প্রথমে অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির সমস্যা নির্ণয়, সমস্যার আলোকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হয়। চিকিৎসার মাঝামাঝি একটা পর্যায়ে কিংবা শেষে চিকিৎসা পদ্ধতি মূল্যায়ন করা হয়। চিকিৎসাসেবার এই পুরো পদ্ধতিতে একজন অকুপেশনাল থেরাপিসট অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তি, তার পরিবার, সেবাশুশ্রƒষাকারী, শিক্ষক এবং তার সমর্থনকারীদের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করেন এবং অটিস্টিক সেই ব্যক্তিটির জীবন অভিজ্ঞতা, পারস্পরিক আদান-প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে অবগত হন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে, অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবা অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিকাশ, জীবনযাপনের মান উন্নয়ন এবং পরিবারের প্রত্যাশাকে লক্ষ্য রেখে সাধ্যমত সেবা দিয়ে থাকেন। পরবর্তীতে অকুপেশনাল থেরাপি সেবা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি, বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদনে প্রতিবন্ধকতার সাথে তার সামর্থ্য মূল্যায়ন করা হয়।
অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতিতে মূলত অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসাগত বিভিন্ন কলাকৌশল ও পদ্ধতির মাধ্যমে তার বাড়িতে, স্কুলে, কর্মস্থলে তার দৈনিক কাজকর্মে সর্বাধিক পরিমাণে সামর্থ্য বাড়িয়ে যথাসম্ভব অংশগ্রহণ করায়, এমনকি তার সামাজিক পরিবেশে অংশগ্রহণ করাতে সহায়তা করে। সাথে সাথে তার কর্ম সামর্থ্য ও পরিধি মূল্যায়ন করে। ফলে অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির কর্মদক্ষতার উন্নতি কিংবা তার সাথে খাপ খাওয়ানো, প্রয়োজনীয় এবং অর্থবহ দৈনিক কাজে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, ব্যক্তিগত তৃপ্তি, স্বাস্থ্য এর উন্নতি এবং সুস্থতা, নতুন অবস্থার সাথে সফলভাবে সংযোজন ইত্যাদির উপরে উন্নতির ফলাফল নির্ভরশীল। এই বিষয়গুলোর ফলাফল একজন অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তি, তার পরিবার এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রশংসিত করে যার ফলে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য অকুপেশনাল থেরাপিসট অবস্থা অনুযায়ী চাহিদাভেদে চিকিৎসা পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারেন। এছাড়াও একজন অকুপেশনাল থেরাপিসট অটিস্টিক ব্যক্তিকে তার দরকারি কাজের সাথে চাহিদা সক্ষমতা অনুযায়ী অবস্থা ভেদে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে থাকেন। উদাহরণ স্বরূপ, অটিস্টিক ব্যক্তিকে তার বহির্জগতের চিন্তা-ভাবনা এবং অমনোযোগিতা থেকে নতুন একটি পরিবেশে কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুনভাবে মিশতে সাহায্য করে থাকেন। তাছাড়া কম্পিউটারের বিভিন্ন সফটওয়্যার কিংবা অটিস্টিক ব্যক্তির আলাদা দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাকে কোন কাজ সম্পাদনে বেগবান করে থাকেন।
স্বাধীন ও স্বাবলম্বী হতে কে না চায়? একজন অভিভাবকও প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন যে তার অটিস্টিক শিশুটিও স্বাভাবিক ছেলেমেয়েদের মত একদিন বড় হবে, স্কুলে যাবে, খেলাধুলা করবে, দৈনিক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আর অভিভাবকদের এই প্রত্যাশা আর শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ উন্নয়নের মাধ্যমে শিশুকে যথাসম্ভব স্বাবলম্বী করে তোলার কাজটি অকুপেশনাল থেরাপিসট অনায়াসে করে থাকেন।
ষ শ, ম, ফারহান বিন হোসেন
ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট,
অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগ,
ফেইথ বাংলাদেশ,
৯/১ স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৬৮৫৬৫৬১৯৯
ভধৎযধহথপৎঢ়@ুধযড়ড়.পড়স



 

Show all comments
  • মো:সুমন তালুকদার ২৬ জুন, ২০২১, ৪:১৩ এএম says : 0
    আমার ছেলের বয়স ৪ বছর ৮ মাস। সে বয়স অনুযায়ী কথা কম বলে।তবে কথা বলে দুই শব্দের।যেমন:পানি,বাস,মধু পানজাবি,ইত‍্যাদি। এখন করনীয় কি?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অটিজম আক্রান্ত শিশুর জন্য অকুপেশনাল থেরাপি
আরও পড়ুন