রক্তপাত নৈরাজ্যে ভোট

সব আশঙ্কাই হলো সত্য। খুনোখুনি, ব্যাপক সংঘাত, সহিংসতা, হানাহানি, গোলাগুলি, বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্রের মহড়া, এজেন্টদের
০ ধীরগতির ট্রেনের সিডিউল লন্ডভন্ড
খানাখন্দের সড়ক-মহাসড়কে যানজট। দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন। তারপরেও থেমে নেই নাড়ির টানে ছুটে চলা। ভোগান্তিকে সঙ্গী করেই উৎসবমূখর পরিবেশে ঘরে ফিরছে মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢল শুরু হয়েছে। আজও অব্যাহত থাকবে শেষ মুহূর্তের ঢল। ভুক্তভোগিদের মতে, এবার বেহাল সড়ক-মহাসড়ক সময়মতো মেরামত করা হলে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি হতো না। এজন্য ভুক্তভোগিরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অবহেলাকে দায়ী করেছেন। অন্যদিকে, গতকাল বেশিরভাগ ট্রেন দেরিতে ছাড়লেও যাত্রীর কমতি ছিল না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্যায় বেশ কিছু এলাকায় রেললাইন ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই সব স্থানে ট্রেনের গতিবেগ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাড়তি যাত্রীর চাপে ট্রেন দাঁড়ালে ছাড়তে দেরি হচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে সাপ্তাহিক ছুটি বন্ধ করায় একবার সিডিউল বিপর্যয় ঘটলে তা আর সমন্বয় করা যাচ্ছে না। সব মিলে ঈদযাত্রায় ট্রেন সময় মেনে চলতে পারছে না। সামনের কয়েকদিন আরও পারবে না। অন্যদিকে নৌপথে গতকালও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ঘাটে নৌ চলাচলে বিঘœ ঘটায় দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে সদরঘাটে তেমন ভিড় ছিল না, ছিল না ভোগান্তি।
খোঁজ নিয়ে জানা গতকাল বৃহস্পতিবার সড়কপথে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর, চন্দ্রা, সাভারের বাইপাইল, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা-গাউসিয়া, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের হাঁটিকুমরুলে যানজটে আটকা পড়ে কয়েকশ’ যানবাহন। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ব্যতিক্রম ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুর অংশে সামান্য যানজট ছিল।
ঘরে ফেরার পথে যানজটে আটকা পড়লেও গতকাল পর্যন্ত ঢাকার টার্মিনালগুলোতে বাসের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি যাত্রীদের। দুরপাল্লার বাসগুলো তাই সময়মতোই ছেড়েছে।
আগামী ১২ আগস্ট পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন হবে। ঈদে ঘরমুখি যাত্রীদের যাত্রা শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। গতকাল অফিস শেষ করেই অনেকেই রওনা করেছেন গ্রামের পথে। এজন্য সকাল থেকে রাজধানীর বাস, লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেল স্টেশনে ছিল উপচে পরা ভিড়। গাবতলী বাস টার্মিনালে খবর নিয়ে জানা গেছে, আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কাটার কারনে গাবতলীতে এবার যাত্রীদের হুড়োহুড়ি নেই। গাবতলী টার্মিনাল কেন্দ্রিক বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের এক নেতা জানান, এখনও পর্যাপ্ত বাসের টিকিট রয়েছে। যারা অগ্রিম টিকিট পাননি তারা টার্মিনালে এসে অনায়াসে টিকিট নিয়ে রওনা করতে পারছে। মহাখালী ও সায়েদাবাদ টার্মিনালেও যাত্রীদের ভিড় থাকলেও টিকিটের জন্য কোনো হাহাকার ছিল না। এজন্য যাত্রীদেরকে বেশ উৎফুল্লই দেখা গেছে।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের হাঁটিকুমরুলে গতকাল সকাল থেকে অনেকটা ধীরগতিতে চলেছে যানবাহন। মহাসড়কে নকলা সেতু ও ধোপাকান্দি সেতুতে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ যানজটের জন্য ভাঙাচোরা মহাসড়ককে দায়ী করেছেন বাস চালকরা। তাদের ভাষ্য, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর আগে থেকে একটু দায়িত্বশীল হলে এরকম ভয়াবহ অবস্থা হতো না। তারা সময়মতো সংস্কার না করায় মহাসড়কের এই বেহাল দশা। ভুক্তভোগিরা জানান, প্রতি বছরই এ অংশে সড়ক ভেঙে যায়। ঈদ এলেই শুরু হয় জোড়াতালির মেরামত। সেই জোড়াতালির মেরামতও এবার সঠিক সময়ে করতে পারেনি সওজ। যতোটুকু কাজ হয়েছিল বৃষ্টিতে তা সবই ভেঙে গেছে।
এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গাউসিয়া এলাকায় ভোর থেকে যানজটে বহু গাড়ি আটকা পড়ে। ভুক্তভোগিরা জানান, ভুলতা ফ্লাইওভারের উপরেও যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যা দিনের শেষভাগে একেবারে কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত গিয়ে ঠেকছে। যার প্রভাব পড়ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের মহাসড়কেও।
সাভার থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, গতকাল বিকালে সাভারে আশুলিয়ায় দুটি মহাসড়কে ধীরগতিতে যান চলাচল করেছে। এতে দুই মহাসড়কে প্রায় ৮ কিলোমিটার যানজট ৃৃষ্টি হয়েছে। টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়কের বাইপাইল ত্রিমোড় থেকে নারী ও শিশু হাসপাতাল পর্যন্ত উভয় লেনে ৫ কিলোমিটার ও নবীনগর-চন্দ্র মহাসড়কে বাইপাইল ত্রিমোড় থেকে শ্রীপুর বাজার পর্যন্ত নবীনগরমুখী ৩ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।