Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খাবার ফুরিয়ে যাচ্ছে কাশ্মীরে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৯, ২:৫০ পিএম

বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন কাশ্মীর। কারও সঙ্গে যোগাযোগ নেই। গাড়ি চলাচল বন্ধ। বন্ধ হয়ে গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহও। দোকানগুলোতেও টান পড়েছে খাবারের। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। সোমবার থেকে শুরু হওয়া টানা চারদিনের এ অচলাবস্থায় না খেয়ে দিন কাটছে নিুবিত্ত অনেক কাশ্মীরির। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে কাশ্মীরবাসীর এ দুর্দশা উঠে এসেছে।

বাস-ট্রাক কোনো যানবাহনই ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না শহরে। ব্যাংকে টাকা নেই। এটিএম বুথও ফাঁকা। ভয়ংকর কিছু একটা ঘটতে চলেছে উপত্যকায়- আগাম হাওয়া বুঝে যারা মজুদ বাড়িয়েছিল, তাদের রসদেও টান পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় দরিদ্র জনসাধারণ ও খেটে খাওয়া দিন মজুরেরা। না আছে কাজ, না জুটছে খাবার। সচ্ছল-ধনী পরিবারের মতো মজুদ সামর্থ্যও নেই।

হাট-বাজার-দোকান থেকে কিনবে সে পথও বন্ধ। রাস্তায় শত শত চেকপোস্ট। পা বাড়ালেই হাজার প্রশ্ন। ওদিকে বাজারের অবস্থাও বেহাল। সরবরাহ নেই। মুদি দোকান, তরকারি বাজার, মাছ-মাংসের হাট- সবখানেই নেই দশা, যা আছে তা আকশচুম্বী।

সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে।

এ পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। পুরো কাশ্মীর এখন থমথমে, সুনসান-স্তব্ধ। সানা নামে ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, খুব কমসংখ্যক নাগরিককে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। তার কাছে পাঁচ-ছয়জন এসে বলেছে তাদের পরিবার না খেয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘মুদি দোকানে যেন মানুষের বন্যা ছিল।

মসলা ও শাকসবজির দোকানেও ছিল ভিড়। হাজার হাজার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এছাড়া পেট্রল পাম্প, গ্যাস স্টেশনগুলোতেও ছিল গাড়ির লম্বা লাইন।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের উপ-সম্পাদক মুজামিল জলিল টেলিগ্রাফকে বলেন, তিনি শ্রীনগরের আশপাশের অন্তত ১০টি এটিএম বুথে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন সেখানে টাকা নেই। বেশির ভাগই এখন হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছে। আর দরিদ্রগোষ্ঠীর কোনো জমা টাকাও নেই।

তবে ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ খাদ্যাভাবের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, কাশ্মীর উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি খাবার মজুদ রয়েছে। অধিকার কর্মীদের আশঙ্কা, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধী পক্ষের নেতাকে গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত শতাধিক গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহও রয়েছেন। বিরোধী দলের অভিযোগ, সরকার ভারতের জনতাত্ত্বিক নকশাই পরিবর্তন করে দিতে চাইছে। সানা বলেন, এই অচলাবস্থায় অনেক নৈরাজ্য ও দ্বিধা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি খুবই ভয়াবহ ও দুঃখজনক। বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে সবাই। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হতাহতের খবর পাওয়া গেলেও তা নিশ্চিত করতে পারেনি কোনো সংবাদমাধ্যম।



 

Show all comments
  • মোঃ আককাছ আলী মোল্লা ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১০:০৬ পিএম says : 0
    ইয়া আল্লাহ কাশ্মীরে ভাই বোনদের রক্ষ্মা করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ