Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আকাশপথে ঢাকা ছাড়ছে দিনে ১২ হাজার মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ঈদযাত্রায় সড়ক ও রেলপথে ভোগান্তির শঙ্কায় আকাশপথে যাত্রী চাহিদা বেড়েছে। অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে অভ্যন্তরীণ রুটের সব ফ্লাইটের টিকিট। বাড়তি যাত্রী চাহিদার কারণে অতিরিক্ত ফ্লাইট দিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। ফলে চার এয়ারলাইন্স মিলে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে অন্য গন্তব্যগুলোয় দৈনিক আসন সক্ষমতা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ এবার ঈদযাত্রায় আকাশপথে ঢাকা ছাড়ছে দৈনিক ১২ হাজার মানুষ।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, দেশের অভ্যন্তরে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত ও নিরাপদ হওয়ায় যাত্রীদের আগ্রহ বাড়ছে। সে কারণে সরকারি-বেসরকারি বিমানে প্রতিদিন ঢাকা ছাড়ছেন ১২ হাজার মানুষ। তারপর আমরা বিমানের টিকিট দিতে পারছি না। অভ্যন্তরীণ যে রুটে যাত্রীর চাপ বেশি, আগামীতে সে এলাকায় বিমানের ফ্লাইট বাড়ানোর চিন্তা রয়েছে। তিনি বলেন, দিনে দিনে দেশের অভ্যন্তরে আকাশপথ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

জানা গেছে, আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত ও নিরাপদ হওয়ায় যাত্রীদের আগ্রহ বাড়ছে। ঈদে সড়ক, রেল ও নৌপথে ভোগান্তি কমাতে গ্রাহকরা সাধারণত জুনেই ঈদের টিকিট সংগ্রহ শুরু করে। অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে সৈয়দপুর ও রাজশাহী রুটে। এরই মধ্যে এ দুই রুটের প্রায় ৯৯ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। বাড়তি চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত ফ্লাইট দেয়ায় চার এয়ারলাইন্স মিলে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে অন্য গন্তব্যগুলোয় দৈনিক একমুখী ছয় হাজারের বেশি আসন সক্ষমতা অর্জন করেছে। ফলে সমানসংখ্যক যাত্রী ফিরতি ফ্লাইটগুলোয় ঢাকায় ফিরতে পারছে।

অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে দেশের চারটি এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি এয়ারলাইন্স সব মিলে প্রতিদিন শতাধিক অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করছে। চাহিদার কথা বিবেচনা করে ঢাকা-সৈয়দপুর ও ঢাকা-রাজশাহী রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

স্বাভাবিক সময়ে নভোএয়ার ঢাকা থেকে প্রতিদিন যশোর পাঁচটি, চট্টগ্রাম পাঁচটি, কক্সবাজার পাঁচটি, সৈয়দপুর পাঁচটি, সিলেট দু’টি, বরিশাল ও রাজশাহীতে একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে চারটি রুটে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্লাইট দিয়েছে এয়ারলাইন্সটি। এ ছাড়া ঈদের আগে ঢাকামুখী যাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।

নভোএয়ারের সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার এ কে এম মাহফুজুল আলম জানান, যাত্রী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে নভোএয়ার সৈয়দপুর রুটে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি ৮ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন অতিরিক্ত দু’টি ফ্লাইট, যশোর ও রাজশাহী রুটে ৮ থেকে ১১ আগস্ট নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি প্রতিদিন অতিরিক্ত একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এছাড়া ৯ থেকে ১১ আগস্ট বরিশাল রুটে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি প্রতিদিন অতিরিক্ত একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে নভোএয়ার। এ দিকে ৬ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল ও রাজশাহী থেকে ঢাকামুখী যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারছে সর্বনিম্ন মাত্র ২ হাজার ১৯ টাকায়।

আকাশপথে ঈদের আগের প্রায় ৯৫ শতাংশ টিকিট শেষ। অল্প কিছু ফ্লাইটে তিন-চারটি করে টিকিট অবশিষ্ট থাকলেও নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে তিন গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে এসব টিকিট। ঢাকা থেকে সৈয়দপুর রুটে যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৭ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা। অন্য সময়ে একই টিকিট বিক্রি হতো ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। একইভাবে ঢাকা-যশোর, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-রাজশাহী রুটের বাকি থাকা টিকিটগুলোও বিক্রি হচ্ছে ৬-৭ হাজার টাকায়। তবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফ্লাইট বেশি থাকায় কিছুটা কমে ৪ হাজার টাকায় টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ঢাকা-কক্সবাজার ও ঢাকা-সিলেট রুটে ৬-৭ হাজার টাকায় টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে সৈয়দপুর রুটে দৈনিক চারটি, যশোরে চারটি, রাজশাহী ও বরিশালে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক চারটি, কক্সবাজারে দু’টি ও সিলেটে দু’টি ফ্লাইট চলছে এয়ারলাইন্সটির।

আর্ক ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান হাবিব বলেন, ঈদের আগের মতো ঈদের পর ঢাকায় ফিরতি ফ্লাইটগুলোর টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে। ২০ আগস্ট পর্যন্ত টিকিটের জন্য যাত্রীদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। যদিও টিকিট দেয়া যাচ্ছে না। এবার অভ্যন্তরীণ রুটে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৫০০ টাকায় ওয়ানওয়ে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এতে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। কারণ হাজার হাজার মানুষ টিকিট চাচ্ছে। বাড়তি ফ্লাইট দেয়া ছাড়া এত বড় জোগান দেয়া এয়ারলাইন্সগুলোর পক্ষে সম্ভব নয়।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সৈয়দপুর, যশোর ও রাজশাহী রুটে নিয়মিত ফ্লাইটের তিনটি করে অতিরিক্ত ফ্লাইট দেয়া হয়েছে। সব ফ্লাইটের প্রায় সব টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে সব এয়ারলাইন্সের অনেক ফ্লাইট থাকে, যে কারণে চট্টগ্রামে চাপ তুলনামূলক একটু কম। তাই চট্টগ্রাম রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট দেয়া হচ্ছে না। তবে ঈদের পর চট্টগ্রামে চাপ অনেক বেশি থাকে।



 

Show all comments
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৬ এএম says : 0
    সব ফ্লাইট ঢাকা টু কেন? এক সিটি থেকে অন্য সিটি কি কেউ যাবে না? যেমন, সিলেট তো চট্টগ্রাম, সিলেট টু কক্সবাজার, চট্টগ্রাম টু রাজশাহী? এরকম?
    Total Reply(0) Reply
  • G.M. Rezwan Rasul ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৭ এএম says : 0
    The passengers of airplane should afford this seasonal increase of ticket price. Airplane ticket price goes high during festivals in everywhere in the world. Only thing needs to be monitored that those don't sell in black market.
    Total Reply(0) Reply
  • MUHAMMAD ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৭ এএম says : 0
    There is no extra flights for Dhaka-Sylhet route, although demands are high in this route
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৭ এএম says : 0
    বিমানের ভাড়া ইচ্ছে করেই বেশী রাখা হয় যাতে দেশের পর্যটন শিল্প ফ্ল্যারিশ না করতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৭ এএম says : 0
    বিমানের ভাড়া ইচ্ছে করেই বেশী রাখা হয় যাতে দেশের পর্যটন শিল্প ফ্ল্যারিশ না করতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • tushar ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৮ এএম says : 0
    দেশের লোকের টাকা আছে, তারা আকাশপথেই যাবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Razzak ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৮ এএম says : 0
    বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাই হল এমন কোন পার্বন বা উপলক্ষ পেলেই মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য একটাকার জিনিস দশটাকায় বিক্রি করবে।।এরা হল জোঁকের জাত; রক্ত চোষাই এদের নীতি।।
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Amin Al Anas ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫৯ এএম says : 0
    প্রতি বছর এই কাজ হয়, বাসেন টিকেট ২০০ টাকা বেশি দাম নিলে জেল জরিমানা হয় অার এয়ার টিকেট কমপক্ষে ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা বেশি রাখা হয় কিন্তু কোনও প্রশাসনের কর্তারা এর বিরুদ্ধে অভিযান চালান না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ