Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কেরালায় বন্যায় মৃত ৪৮, মহারাষ্ট্রে ২৮

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫৩ পিএম

বন্যায় ভারতের কেরালা ও মহারাষ্ট্রের অবস্থা ভয়াবহ। ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে কেরালায়। ওই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৮। মহারাষ্ট্রে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। কর্নাটক, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, গুজরাতের অবস্থাও ভয়াবহ।

চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেরালায়র ৯টি জেলায়। উদ্ধার ও ত্রাণে শুক্রবার সকাল থেকেই সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে বানভাসি কেরালায়। মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) আরও ১৩ কোম্পানি। ডুবে যাওয়া ওয়েইনাড় জেলায় উদ্ধার ও ত্রাণে শনিবার সকালেই পৌঁছে গিয়েছে নৌবাহিনীর চপার। মালাপ্পুরম জেলার অবস্থাও ভয়াবহ।

এদিকে, মহারাষ্ট্রের গোটা কোলহাপুর শহরটাই চলে গিয়েছে প্রায় ১০ ফুট গভীর পানির তলায়। ফ্লাইওভারের উপর থেকে দেখা যাচ্ছে শুধুই বহুতলগুলির ছাদ। এমনকী, পানি কোথাও কোথাও প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে ফ্লাইওভারকেও! রাজ্যের কোলহাপুর, সাতারা ও সাংলি জেলা থেকে কম করে দু’লাখ মানুষকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মহারাষ্ট্র, কেরালা ও কর্নাটকে মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফ-এর অন্তত ২৫০টি দল।

কর্নাটকের অবস্থাও খারাপ। বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় কৃষ্ণা নদীর বাঁধ থেকে প্রায় পৌনে ৬ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। তার ফলে ভেসে গিয়েছে সারপুর তালুকের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও গোটা ইয়াদগির জেলা। মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুর মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি পানির তলায় চলে গিয়েছে।

একটানা প্রবল বর্ষণের জেরে বানভাসি হয়ে গিয়েছে মালাপ্পুরম-সহ কেরালার বেশ কয়েকটি জেলা। পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে কম করে ৪২ জনের। সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য প্রশাসন। ওয়েইনাড় জেলায় ধসে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় ২২ হাজার মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩১৫টি ত্রাণ শিবিরে। কোঝিকোড় জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।

চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে ওয়েইনাড়, ইদুক্কি, মালাপ্পুরম ও কোঝিকোড়-সহ ৯টি জেলায়। জল ঢুকে পড়ায় কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোববার বিকেল পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের ১৪টি জেলার সব স্কুল, কলেজই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণে সেনাবাহিনী নেমেছে আলাপ্পুঝা, পাঠানামথিট্টা ও এর্নাকুলামে। বন্যায় ভয়াবহ অবস্থা কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। জানানো হয়েছে, ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে আর তার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা পাঠানামথিট্টা, কোট্টায়াম, ইদুক্কি, এর্নাকুলাম এবং ত্রিশূরে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়েইনাড়ের একটি চা বাগানে ধস নামে। তার জেরে বহু শ্রমিকের ঘরবাড়ি ভেসে যায় পানির তোড়ে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কম করে ১৫০ জন ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে পড়েছেন। জখম হয়েছেন ২০০ জন। ৬০ জনকে ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। মিলেছে ২ জনের দেহও। তবে ধসের জন্য উদ্ধারকাজ চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। গত ২০ বছরে এতটা ধস নামেনি এই অঞ্চলে।

মালাপ্পুরমের নীলামপুর গ্রামটির বহু এলাকায় ধসের ফলে ওই এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং সেখানে পানির স্তর দ্রুত বাড়ছে। সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফের দলগুলি ওই এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণে নেমে পড়েছে।

প্রবল বর্ষণে দক্ষিণ ও পশ্চিম ওড়িশায় গত এক সপ্তাহে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলায় চার মহিলা-সহ মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ