Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খুলনার সেই ওসিসহ পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

থানা হাজতে নারীকে গণধর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

খুলনা জিআরপি থানায় পুলিশের হেফাজতে এক গৃহবধুকে গণধর্ষণের ঘটনায় ওই থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি ও এক এসআইসহ পুলিশের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠার ৬ দিন পর গত শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে জিআরপি থানায় মামলাটি করেন। হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলাটি করা হয়।

কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ বলেন, নির্যাতিত নারীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খুলনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এর বিচারকের নির্দেশে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ চলবে বলে তিনি জানান। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, গত ২ আগস্ট রাতে খুলনা রেলস্টেশন থেকে তাকে আটক করা হয়। রাতে রেলওয়ে থানায় ওসি ওসমান গনি পাঠান, এসআই গৌতম কুমার পাল, এএসআই নাজমুল হক এবং কনস্টেবল মিজান ও হারুন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ফিরোজ আহমেদ বলেন, আদালতের নির্দেশে এবং জেল গেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ভিকটিম নিজেই এ মামলার বাদী। মামলায় জিআরপি থানার ক্লোজ হওয়া ওসি উসমান গণি পাঠান, ঘটনার রাতের ডিউটি অফিসার এবং অজ্ঞাত আরও তিন পুলিশকে আসামি করা হয়েছে। হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর ১৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসার পথে খুলনা রেল স্টেশনে কর্তব্যরত জিআরপি পুলিশের সদস্যরা ওই গৃহবধূকে মোবাইল চুরির অভিযোগে আটক করে। পরদিন শনিবার তাকে পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত ফুলতলায় পাঠানো হয়। ৪ আগস্ট আদালতে জামিন শুনানিকালে বিচারককে ওই নারী জিআরপি থানায় তিনি নির্যাতন ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানান। আদালতকে তিনি বলেন, থানা হাজতে ওসি ওসমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করে। এরপর আদালতের নির্দেশে গত সোমবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

এ ঘটনায় পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে কমিটি করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের ডিআইও-১ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) শ ম কামাল হোসেইন ও দর্শনা রেলওয়ে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. বাহারুল ইসলাম। তদন্ত কমিটি গত মঙ্গলবার তদন্ত শুরু করে এবং ৮ আগস্ট জেল গেটে ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করে।

এদিকে, অভিযুক্ত ওসি ওসমান গণি পাঠান ও এসআই নাজমুল হককে গত বুধবার জিআরপি থানা থেকে ক্লোজ করে পাকশী জেলা রেলওয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। ফিরোজ আহমেদ বলেন, প্রাথমিক তদন্তকালে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কারণে পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন হওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ