Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অল্প দামের কারণে পার্শ্ববর্তী দেশে ব্যাপকভাবে চামড়া পাচার হচ্ছে -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৯ পিএম | আপডেট : ২:০৮ এএম, ১৪ আগস্ট, ২০১৯

গরীব, ইয়াতিম, মিসকিনের হক কুরবানির চামড়ার দাম কমাতে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কুরবানির পশুর চামড়ার টাকা গরীব, মিসকিন, ইয়াতিমদের হক। এই চামড়া বিক্রির টাকা তাদের মাঝেই বিতরণ করার নিয়ম। এটা তাদের ঈদের আনন্দের একটা উৎস। বিএনপি সরকারের সময়ে এদেশে যে চামড়া কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি হতো এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২/৩ শ' টাকায়। ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর চামড়ার দাম এখন ২২০ টাকা!!এক লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২২৫ টাকায়। সব জিনিসের দাম হু হু করে বাড়লেও দফায় দফায় কমতে কমতে দশ ভাগের এক ভাগে নেমেছে গরীব-মিসকিনের হক এই কাঁচা চামড়ার দাম। এই অল্প দামের কারণে চামড়া ব্যাপকভাবে পাচার হচ্ছে পার্শবর্তী দেশে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, চামড়ার মূল্যের এমন করুণ অবস্থা দেখে, নীরব প্রতিবাদ হিসাবে সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি না করে কোরবানির চামড়া মাটির নিচে পুঁতে রাখছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার অজুহাতে অনির্বাচিত আওয়ামীলীগের সিন্ডিকেট চামড়া নিয়ে এ কারসাজি করছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এই চক্রের স্বার্থ রক্ষা করছে নিশুতি সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়ার বর্গফুট প্রতি একটা হাস্যকর দাম বেধে দিয়ে তাদেরকে সহায়তা করছে।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট করে এতিমের হক মারার এ কান্ডকারখানা যারা চালাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে তারাও নিজেদের ধার্মিক বলে প্রচার করে। এদের হোতা সরকারী দলের এক বড় নেতা। যেভাবে পাট শিল্প ধ্বংস করা হয়েছে ঠিক সেই পথেই ধ্বংস করা হচ্ছে বাংলাদেশের ট্যনারি শিল্প। প্রশ্ন করবার কেউ নাই। জবাব দেয়ার কেউ নাই। সুইস ব্যাংকে আর কত টাকা পাঠানো সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের জনগণ মুক্তি পাবে! আজ সুষ্ঠু নির্বাচনকে দূরে ঠেলে জনগনের সরকার নেই বলেই এভাবে জনগনের সর্বনাশ করা হচ্ছে।
ঈদযাত্রায় মানুষের চরম কষ্ট ক্লান্তি -মহাদুর্ভোগ নিয়ে সরকারের মন্ত্রী কদর্য ঊপহাস করেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, রাতের অন্ধকারে সরকারের দায়বদ্ধহীনতার কারণে দেশের মানুষের ঈদ কেটেছে নিরানন্দে। একদিকে ঈদযাত্রায় সীমাহীন পথের দুর্ভোগ, সারাদেশে ডেঙ্গু মহামারি এবং দেশের বৃহৎ অঞ্চলজুড়ে ত্রান বঞ্চিত বন্যার্ত মানুষের হাহাকার অন্যদিকে গ্রামীণ জনপদে সরকারী দলের ক্যাডারদের অত্যাচার সব আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে। সড়ক এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পুর্ন ভেঙ্গে পড়ার কারনে বহু মানুষকে পথে ঘাটে ঈদ করতে হয়েছে। স্বস্তি ছিলনা ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রায়। আর এদিকে মিডনাইট সরকারের কতিপয় মন্ত্রী এই ঈদযাত্রায় মানুষের চরম কষ্ট ক্লান্তি -মহাদুর্ভোগ নিয়ে রীতিমত কদর্য ঊপহাস করেছে।
তিনি বলেন, গতকাল নোয়াখালীর নিজ গ্রামে ঈদের নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “মানুষ স্বস্তিতে বাড়িতে ফিরেছে। একইভাবে স্বস্তিতেই কর্মস্থলে ফিরে যাবে। তিন দিন আগে যখন মহাসড়কে প্রায় শত কিলোমিটারের দীর্ঘ যানজট আর ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কষ্ট করেছেন তখন ওবায়দুল কাদের সাহেবকে আমরা বলতে শুনেছি -“বাংলাদেশের মানুষ ঈদযাত্রার দুর্ভোগকে দুর্ভোগ হিসেবে মনে করে না। এটা তারা ঈদ আনন্দের অংশ হিসেবে মনে করে'। “ঈদের আনন্দে মানুষ ডেঙ্গু ভুলে গেছে'।”
বিএনপির এই নেতা বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, কতটা স্বাভাবিক বোধ-বুদ্ধি শূন্য হলে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এমন উপহাসমুলক অবান্তর কথা বলতে পারেন! তারা মানুষকে মানুষ মনে করেন না, মনে করেন তাদের কেনা ক্রীতদাস । কারন জনগনের ভোটেতো আর তারা নির্বাচিত হননি! যখন দেশে রোজ অপঘাতে মারা পরছেন মানুষ। মানুষের জন্য নিরাপদ নয় খাদ্য, ঔষধ, সড়ক, নিরাপদ নয় কর্মস্থলও। অকাল মৃত্যুর বিভীষিকা নিয়ে হাজির হয় বিভিন্ন দূর্ঘটনা। দম বন্ধ করা এক দু:সহ পরিস্থিতিতে মানুষ দিন যাপন করছে। তারপরেও সব স্বস্তিদায়ক বলে ক্ষমতাসীনরা আহ্লাদে আটখানা। সরকারের চরম ব্যর্থতার কারনে সড়ক- রেলপথ বিপর্যয়ের জন্য বিএনপির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে হাসির উদ্রেককারী মন্তব্য করেছেন এক এমপি। সড়ক ব্যবস্থা নির্বিঘ্নতায় ব্যর্থ কাদের সাহেবের পদত্যাগের দাবী ওঠার পর সামঞ্জস্যহীন কথা বলার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সেতুমন্ত্রী কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে মানুষের চোখকে বিভ্রান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন কিন্তু ভুক্তভোগি মানুষ হাড়ে-হাড়ে টের পেয়েছে সড়ক, নৌ ও রেল পথে ঘরে ফেরার যন্ত্রনা। আমরা মিডিয়ায় দেখেছি: ঢাকা থেকে খুলনা যেতে ৩৬ ঘন্টা সময় লেগেছে। কুষ্টিয়া যেতে সময় লেগেছে ২৭ ঘন্টা। ঢাকা থেকে পাবনা পৌছাতে সময় লেগেছে ২২ ঘন্টা। রাত-দিন পার করেছে মানুষ রাস্তায়। এরপরও মন্ত্রী সাফাই গাচ্ছেন নিজের সাফল্যের, এইরকম নির্লজ্জতা দেশবাসী আগে কখনও দেখেনি। যতদিন আপনি সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী আছেন প্রতিটি ঈদে বাড়ী ফেরা মানুষের নাকের পানি চোখের পানি এক করে ছাড়ছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, এদেশের জনগনের প্রানপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবৈধ কারাবন্দীত্বের আজ ৫৫২ তম কালিমালিপ্ত দিবস। গতকাল ঈদের দিন তার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাত করার সুযোগ পেয়েছিলেন। চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাঁর জীবন এখন সংকটময় অবস্থায় উপনীত হয়েছে। কারাগারে নেয়ার সময় সম্পুর্ন সুস্থ নেত্রী এখন হুইল চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারছেন না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে গেছে। দেশনেত্রীর উপর ইনস্যুলিনের কার্যকারিতা অনেক কমে গেছে। দেশবাসী দেশনেত্রীর প্রান বাঁচাতে দ্রুত তাঁর মুক্তি চায়। মুক্তি না দিলে জনগন আর বসে থাকবে না। সরকারী ষড়যন্ত্র তছনছ করে দিবে।



 

Show all comments
  • Tarin ১৩ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩১ পিএম says : 0
    akdom thik kotha bolesen
    Total Reply(0) Reply
  • Mobashir ahmed ১৪ আগস্ট, ২০১৯, ৯:৪১ এএম says : 0
    যা বলেছে একদম ঠিক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ