Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খুলনায় ছয়দিন পানিবন্দী বাস্তুহারাবাসী

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৯, ৬:১৯ পিএম | আপডেট : ৬:৫২ পিএম, ১৫ আগস্ট, ২০১৯

টানা ৬ দিন পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে খুলনা নগরীর খালিশপুরের বাস্তহারা কলোনির বাসিন্দারা। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার বসবাসকারী মানুষের জীবন। রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ঘরের ভিতরে পানিতে থৈ থৈ করছে।

বেশ কয়েকটি রাস্তায় এখনও হাটু সমান পানি রয়েছে। শুধু মানুষই নয়, এখানকার গবাদি পশু-পাখিও চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টির ফলে এ দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছে। অপর দিকে অসংখ্য খানাখন্দের কারণে মুজগুন্নী মহাসড়কের বেহাল দশা। বিশেষ করে মুজগুন্নী পার্কের সামনে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বয়রা মোড় পর্যন্ত রয়েছে অসংখ্য গর্ত। ফলে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাইপাস সড়ক থেকে বাস্তহারা কলোনীতে প্রবেশের প্রধান সড়কটিতে হাটু সমান পানি। এখানে থাকা পুকুর ও রাস্তা পানিতে সমান হয়ে গেছে। দেখলে বোঝার অবস্থা ছেয় যে এখানে রাস্তা রয়েছে। হাটু পানি পেরিয়ে কিছু দূর যেতেই সেমিপাকা ১নং সড়ক দিয়ে শুরু। এ সড়কটি সম্পূর্ণ পানিতে সয়লাব। শুধু এই সড়কই ছয়, সবগুলো রাস্তার প্রায় একই অবস্থা। দু-একটি স্থানে কিছুটা কম রয়েছে।

রাস্তায় ও নিচু স্থানে জাল, বড়সি, কোস ও নেটের জাল হাতে মাছ ধরছে শিশু থেকে মধ্যবয়সীরা। বৃহস্পতিবার বাস্তহারা কলোনী ঘুরে এমনই দুর্দশার দৃশ্য চোখে পড়ে। এখানের একটি মাত্র ড্রেন যেটা বাইপাস লিংক রোড দিয়ে খালে গিয়ে মিলেছে। বাইপাস সড়ক পাশে অবৈধ জমি দখল করে রাখায় সেই ড্রেনটি ছোট ও সরু হয়ে গেছে। ফলে পানির নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

বাস্তহারা কলোনীর ৮নং রোডের বাসিন্দা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ৬ দিন পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছি। পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। খালিশপুরের সব ওয়ার্ডের পানি এখানে আসে। এখানে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। একটা মাত্র ড্রেন দিয়ে এ পানি খালে প্রবেশ করে। একটু বৃষ্টি হলেই এই ড্রেন রাস্তা-ঘাটে একাকার হয়ে যায়। আর ভারীবর্ষণ হলে রাস্তায় ও ঘর-বাড়িতে হাটু সমান পানিতে তলিয়ে যায়। গত ৬ দিন ধরে পানি নামছে না। ভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এখানকার সেমিপাকা সবগুলো রাস্তায় পানি জমেছে। বাড়ি ঘরেও একই অবস্থা। সেমিপাকা সব রোড এবং ৮ থেকে ১৩নং রোডে পানিতে সয়লাব।
একটু অভিমানের সাথে তিনি বলেন, ভোটের সময়ে অনেকেই নানা প্রতিশ্রুতি, আশা-ভরসা দেয় ‘এই করবে, তাই করবে’, অথচ নির্বাচন হয়ে গেলে আর কেউ খোঁজও নিতে আসে না। সামনে আবারও ভোট। আবারও প্রতিশ্রæতির ঝুলি নিয়ে আসবে অনেকেই।

১০নং রোডের বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া বলেন, প্রতি বছরই এমন জলাবদ্ধতার মধ্যে বসবাস করতে হয়। কিন্তু এ বছর অনেক বেশি বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে। এসব পানি পাড়ি দিয়ে মুসল্লিদের মসজিদে নামাজ আদায় করতে যেতে হচ্ছে।

মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, মুজগুন্নী মহাসড়কে বড় বড় গর্ত ভরে গেছে। বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমেছে। এ রাস্তাটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করে। ফলে অনেক সময় গর্ত না দেখেই যানবাহন গর্তে পড়তে দেখা যায়। গাড়ি চললে পথচারীদের গায়ে কাঁদা পানি ছিটে যায়। রাস্তাটি সংস্কারে কোন পদক্ষেপ ছেয়া হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ