Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফোন করতে থানায় কাশ্মীরিদের লাইন : কথা মাত্র ১ মিনিট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ভারত-শাসিত কাশ্মীরে প্রায় টানা দুসপ্তাহ ধরে চলা ‘কমিউনিকেশন ব্ল্যাক আউট’ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে বলে সরকার দাবি করলেও সাধারণ কাশ্মীরিদের অভিজ্ঞতা কিন্তু আদৌ সে কথা বলছে না। শনিবারই ভারত সরকার বলেছিল, কাশ্মীর উপত্যকার সতেরোটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ খুলে দিয়ে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা সেখানে ফের চালু করা হয়েছে।
কিন্তু দিল্লিতে বসবাসকারী একাধিক কাশ্মীরি বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের পরিবারের লোকজনকে পুলিশ থানায় গিয়ে লম্বা লাইন দিয়ে কথা বলতে হচ্ছে - আর তারাও সেখানে বড়জোর মিনিটখানেকই কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। দিল্লিতে থাকেন বারামুলার মেয়ে সাদাফ ওয়ানি, তিনি তো এমনও জানালেন রোববার তার আব্বু ছোট মেয়েকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থানা থেকে ফোন করেছিলেন - কিন্তু সে কথাটা মেয়েকে বলার আগেই লাইন কেটে যায়।
এদিকে মোবাইল ফোন তো দূরস্থান, সাধারণ কাশ্মীরিদের বাড়িঘর-ব্যবসা-দোকানপাটে এখনও ল্যান্ডলাইন পর্যন্ত চালু হয়নি। বস্তুত মোবাইল, টেলিফোন বা ইন্টারনেটে কাশ্মীর উপত্যকা বাকি পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে ঠিক দু’সপ্তাহ হতে চলল। তবে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের মুখপাত্র রোহিত কানসাল শনিবার শ্রীনগরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, তারা ৫০ হাজারেরও বেশি ল্যান্ডলাইন অবিলম্বে চালু করে দিচ্ছেন, যাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে যোগাযোগ এখন অনেক সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু দিল্লিতে থেকে যে কাশ্মীরিরা পড়াশুনা বা চাকরিবাকরি করেন তাদের অভিজ্ঞতা বলছে, এখনও আসলে পরিস্থিতি বিশেষ কিছুই পাল্টায়নি।
বারামুলার মেয়ে সাদাফ ওয়ানি দিল্লিতে থাকেন ছোট বোনকে নিয়ে, তিনি বলেন, ‘মিডিয়াতে কত কিছুই পড়লাম, কিন্তু আমি জানি কাশ্মীরে ল্যান্ডলাইন এখনও চালুই হয়নি।’
‘আমার আব্বা-আম্মা শনিবার বিকেলে প্রথম আমার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন, তাও সেটা থানায় গিয়ে পুলিশের ফোন দিয়ে। ওদের কাছে যেটা জানতে পারলাম, মানুষজনকে কথা বলার জন্য থানায় গিয়ে প্রথমে লাইন দিতে হচ্ছে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর পুলিশের ফোন বা স্যাটেলাইট ফোনে তাদের সামনে বসেই তারা আত্মীয়স্বজনের খোঁজ নিতে পারছেন - তবে সবাই কথা বলার জন্য মাত্র মিনিটখানেকই সময় পাচ্ছেন।’
তাহলে প্রশাসন যে দাবি করছে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি ল্যান্ডলাইন চালু হয়ে গেছে, সেটা কি সত্যি নয়? সাদাফ জবাব দেন, ‘দেখুন, গোটা কাশ্মীর জুড়ে, শ্রীনগর-বারামুলা- সোপোরে আমার আত্মীয়স্বজনরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। আমি ক্রমাগত তাদের নম্বর ঘুরিয়ে চলেছি, কিন্তু কাউকে এখনও পাইনি। ‘দিল্লিতে আমি এমন কাউকেই জানি না যে কাশ্মীরে কাউকে ল্যান্ডলাইনে ধরতে পেরেছে। কাজেই সরকারের এই দাবিটা খুবই বিভ্রান্তিকর।
গত সপ্তাহে আমি নিজে শ্রীনগরের যে হোটেলে ছিলাম, সেই ল্যান্ডলাইনেও দিল্লি থেকে ক্রমাগত চেষ্টা করে রোববার সারদিন কোনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবু এরই মধ্যে কাশ্মীরের কোনো কোনো পুলিশ থানা থেকে আসা কলে হঠাৎ বেজে উঠছে কাশ্মীরিদের ফোন - যারা ছড়িয়ে আছেন ভারতের নানা প্রান্তে। দিল্লিতে কাশ্মীরি যুবক মুদাসসারও শনিবার রাতে এভাবেই তার বাবা-মার সঙ্গে প্রথম কথা বলতে পেরেছেন ঠিক পনেরো দিন পর। সূত্র : বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ