Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমারেরও শক্তিশালী বন্ধু আছে

আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বিশ্বে মিয়ানমারেরও শক্তিশালী বন্ধু থাকার বিষয়টি মাথায় রেখে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দুই দিন আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর দ্বিতীয় দফা পরিকল্পনা ব্যর্থ হলেও একে সরকারের ব্যর্থতা মানতে নারাজ তিনি। বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে দুর্নীতি নির্মূলে জোর দেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী।

গতকাল শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে বিআরটিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার সেখানে (রাখাইন রাজ্য) পরিবেশ সৃষ্টি করেনি, নিরাপত্তা সৃষ্টি করেনি, সিটিজেনশিপের মতো বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি, এ জন্য তাদের বিশ্বাস করতে পারেনি রোহিঙ্গারা। এর দায় মিয়ানমার সরকারকে নিতে হবে।

বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধের পথে যাবো না, আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখব। সেই কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। এখানকার সমস্যা জটিল। এই জটিলতার মধ্যে যুদ্ধ পরিহার করে ঠান্ডা মাথায় আলাপ-আলোচনা করে এর সমাধান করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের মনে রাখতে হবে, মিয়ানমারেরও বন্ধু আছে এবং শক্তিশালী বন্ধু আছে।

মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রদের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, আজকের পৃথিবীতে ডিপ্লোমেসিটা ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি। এখানে জিও ফিজিক্যাল কন্ডিশনে মিত্রতা সৃষ্টি হয়, ইকোনমিক কারণে মিত্রতা হয়। সবার একটা অংক আছে, হিসাব আছে। সেই হিসাবে মিয়ানমারের বন্ধুরা কম শক্তিশালী নয়। কাজেই আমাদের কৌশলী হয়ে এগোতে হচ্ছে।

কূটনৈতিক ব্যর্থতার সমালোচনার জবাবে কাদের বলেন, এখানে ব্যর্থতার কোনো বিষয় নেই। এখানে কৌশলগত বিষয় রয়েছে। অনেক সময় দুই পা এগিয়ে এক পা পিছিয়ে যেতে হয়। এটিকে ক‚টনৈতিক ব্যর্থতা বলা যাবে না। সবকিছু মিলিয়ে জাতিসংঘ, ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে শেখ হাসিনার সরকার যতটা ক‚টনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে, এটা অন্য কোনো দেশে সম্ভব হয়নি। এ জন্য রোহিঙ্গারা আসার পর মিয়ানমার সরকার সবচেয়ে বেশি চাপ অনুভব করছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে অবস্থানের কারণে কক্সবাজারে পর্যটনসহ সব ক্ষেত্রে ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরেন কাদের।

কক্সবাজারে যুবলীগের এক নেতার রোহিঙ্গাদের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সেখানে রোহিঙ্গারা ১১ লাখ, আমাদের ৪ লাখ। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সবাই যে নিরীহ-শান্ত, সেটা মনে করার কারণ নেই। তাদের মধ্যে হতাশা আছে, বেপরোয়া মনোভাব আছে। সেটার একটা বিচ্ছিন্ন প্রকাশ ঘটেছে।

বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে দুর্নীতি নির্মূলে জোর দেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিআরটিসি থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা হবে। নতুন গাড়িগুলো এসে বহর আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। আপনারা সহযোগিতা করলে বিআরটিসিকে লাভবান করা সম্ভব। এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত না হলে বিআরটিসি লাভের মুখ দেখবে না। লাভের গুড় এখানে পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে। যারা ওপরে আছেন, ভাগাভাগি তারাই করেন।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে প্রথম দিকে প্রক্রিয়ায় একটু ধীরগতি থাকলেও চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে কারো শিথিলতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি মনিটরিং করছেন। আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। শুধু শোকের মাস পালন করছি না।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ