Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অনেক পরিবারে রোগী খরতপ্ত আবহাওয়ায়

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

চৈত্র-বৈশাখের মতো ভ্যাপসা গরম পড়ছে। ভাদ্র মাসে যেখানে মেঘ-বৃষ্টির সমানতালে তালপাকা গরম ‘স্বাভাবিক’ আবহাওয়া। সেখানে টানা অনাবৃষ্টির সঙ্গে দিনমান তীর্যক সূর্যের কড়া দহন। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লোডশেডিংয়ের কারণে গরমে-ঘামে জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে পর পর তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হলেও সেগুলো বর্ষার মৌসুমী লঘুচাপ-নিম্নচাপ আকারে ঘনীভূত না হয়েই ভারতের দিকে পশ্চিমা লঘুচাপ হয়ে কেটে গেছে। এরফলে তাপদাহের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। আজ (বুধবার) দিনের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানা যায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে।

অস্বাভাবিক খরতপ্ত আবহাওয়ায় অধিকাংশ পরিবারে কেউ না কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সর্দি-কাশি, ভাইরাস জ্বর, ডায়রিয়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্ট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল, ক্লিনিক, চিকিৎসকের চেম্বারে রোগীর ভিড় বেড়ে গেছে। গতকাল (মঙ্গলবার) চমেক হাসপাতাল ও বন্দরনগরীর কয়েকটি ক্লিনিক ঘুরে মৌসুমী রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষজনের চাপ চোখে পড়েছে। মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়নি। সাময়িক ও বিক্ষিপ্তভাবে টেকনাফে ৪২, সিলেটে ১১, রাঙ্গামাটিতে ৯, ভোলায় ৭ মিলিমিটার, কোথাও কোথাও ছিটেফোঁটা ছাড়া নেই কোনো প্রত্যাশিত বৃষ্টি। এ সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ডিমলায় ৩৬ ডিগ্রি সে.। ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৫.৩ এবং সর্বনিম্ন ২৪.৭ ডিগ্রি সে.।

বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমান বেশি থাকায় ঘরমে-ঘামে মানুষ দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ছে। অনেকেই হয়ে পড়ছে অসুস্থ। এতে করে মানুষের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা এবং উৎপাদন ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নূর মোহাম্মদ। তিনি এই বৈরী আবহাওয়ার সময়ে ঘন ঘন বিশুদ্ধ পানি পান এবং বাইরের পরিবেশে গিয়ে ধুলোবালি, ধোঁয়া এড়িয়ে চলা, ডেঙ্গুর সতর্কতারও পরামর্শ দিয়েছেন।

আজ (বুধবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

নদ-নদীসমূহের পূর্বাভাস
পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে প্রধান নদ-নদীসমূহের সর্বশেষ পানিপ্রবাহ সম্পর্কে জানা যায়, গঙ্গা নদীর পানির প্রবাহ প্রায় স্থিতিশীল হয়ে এসেছে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত গঙ্গা নদী পাংখা, রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার যথাক্রমে ১৭০, ১৭৯ এবং ১২৩ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হয়। গঙ্গার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি এখন ধীর গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মার প্রবাহ গোয়ালন্দ, ভাগ্যকূল ও সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার যথাক্রমে ৮০, ১০৯ এবং ৭১ সে.মি. নিচে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল কমতির দিকে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদেও পানি হ্রাস পাচ্ছে।
প্রধান নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৬৫ পয়েন্টে পানি হ্রাস, ২৬টিতে বৃদ্ধি এবং ২টি পয়েন্টে অপরিবর্তিত ছিল। সোমবার ৫০টি পয়েন্টে পানি হ্রাস, ৪০টিতে বৃদ্ধি পায়। গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের নদ-নদী অঞ্চলে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি।

নদ-নদীর সর্বশেষ পূর্বাভাসে পাউবো জানায়, গঙ্গা-পদ্মা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে। পদ্মা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদীগুলোতে পানির সমতল হ্রাস আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ