Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফেসবুকে আন্দোলন হবে না রাজপথে নামতে হবে

কাজী জাফর আহমদের স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

শুধু ফেসবুকে থাকলেই আন্দোলন হবে না, জনগণকে নিয়ে রাজপথে নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু ফেসবুকে একটা ছবি দিলে আন্দোলন হবে না। আন্দোলনের জন্য মানুষকে সংগঠিত করে রাজপথে নেমে আসতে হবে। যারা মনে করেন যে, একা একাই পারব তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এখন গ্রামে গ্রামে বন্দরে বন্দরে মানুষের কাছে ছড়িয়ে যেতে হবে, মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যে কথা আমি বার বার বলি- এই কাজটা হচ্ছে তরুণদের, এই কাজটা হচ্ছে যুবকদের। গতকাল (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তি এক। এটাকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। দেশনেত্রী মুক্ত হলেই গণতন্ত্রের মুক্তি হবে। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

রুমিন ফারহানার প্লটের আবেদন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের দেখতে হবে মূল লক্ষ্যে আমরা যাচ্ছি কি না? কেউ একটা ছোট ভুল করে ফেলল তোমার তো তাকে এখনই কবর দিয়ে দিতে হবে। নিশ্চিয়ই না। দেখতে হবে সে এখন কি কাজ করছে? সে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছে, দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য কাজ করছে- এটা হচ্ছে মূল কথা। আমি কার কথা বলছি আপনারা বুঝতে পারছেন। পত্র-পত্রিকাও শুরু করেছে এই ধরনের, এখন একেবারে ড্রাম বাজিয়ে শুরু করেছে রুমিনের (রুমিন ফারহান) বিরুদ্ধে একটা অবস্থান তৈরি করার জন্য। রুমিন তো অন্যায় করেনি। হতে পারে এই সহজ জিনিসটা বুঝতে পারেনি। তিনি বলেন, রুমিন জোর গলায় পার্লামেন্টে, পার্লামেন্টের বাইরে, টেলিভিশনে সবখানে সে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, সবখানে সে গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে এবং দেশনেত্রীর মুক্তির কথা বলে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের চিন্তাভাবনার লোক যারা আছেন তাদের অনুরোধ করব- দয়া করে আপনার ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে বা অন্য কারো বিরুদ্ধে এবং আমাদের লোক কারো বিরুদ্ধে কোনো কমেন্ট করবেন না, লিখবেন না। এটা ক্ষতি হবে আন্দোলনের। বরঞ্চ তাকে পরামর্শ দিন কী তার করা উচিত, কোনভাবে যাওয়া উচিত। এ সময় মরহুম নেতা কাজী জাফর আহমদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরেন ফখরুল। তিনি বলেন, কাজী জাফরের মৃত্যুবার্ষিকীতে এটাই একমাত্র শপথ হোক- তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে যারা ২৯ তারিখে ভোট ডাকাতি করেছে, দিনের পরিবর্তে রাতে ভোট চুরি করেছে, যত বড় দলই হোক এককভাবে কোনো আন্দোলন করে এই স্বৈরাচারকে সরানো যাবে না। এককভাবে আন্দোলন করে স্বৈরাচারের আয়ু বাড়িয়ে দেয়া হবে। আমার অনুরোধ থাকবে জাতীয় ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। এটা জাতীয় ভোট, ১৬ কোটি মানুষের ভোট ডাকাতি করেছে। কোনো এককভাবে দলের পক্ষে সেই ডাকাতদের ভোট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে যদি একজনও বেঁচে থাকে স্বৈরাচার পরিবর্তনের জন্য এককভাবে হোক জাতীয় ঐক্যের পতাকাকে আমি তুলে ধরে রাখব। আজকে ক্ষমতার লোভ, বিদেশে টাকা-পয়সা, পারিবারিককরণ সব কিছুর জন্য দেশকে নরকে পরিণত করা হয়েছে। কোনো জবাবদিহিতা নেই, নীতিনৈতিকতা নেই, এই যে নারী নির্যাতন, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে পাশবিক নির্যাতন প্রতিদিন খবরের কাগজে দেখছি। আমাদের বাপ-দাদার সময়ে কখনো শুনিনি এভাবে নারী নির্যাতন হতে। সমস্ত প্রশাসন, সংবিধান, বিচার বিভাগ সবকিছু কুক্ষিগত করে বেহায়া-নির্লজ্জের মতো মিথ্যা কথা বলে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হচ্ছে।

আবদুর রব বলেন, এই রাষ্ট্রটা একচ্ছত্র এক ব্যক্তির দখলে চলে গেছে। জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই স্বৈরাচার, মিথ্যাবাদী, ভোট ডাকাতের বিরুদ্ধে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।

দলের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীমের পরিচালনায় স্মরণসভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, মনিরুল হক চৌধুরী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) জাফরুল্লাহ খান লাহরী, নওয়াব আলী আব্বাস খান, মজিবুর রহমান, শফিউদ্দিন ভুঁইয়া, রুহুল আমিন, সেলিম মাস্টার, কাজী জাফর আহমদের বড় মেয়ে কাজী জয়া কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

চৌদ্দগ্রামে কাজী জাফর আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে উপজেলার চিওড়া কাজীবাড়িতে গতকাল মঙ্গলবার দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও মরহুমের কবর জিয়ারত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব জাফরউল্লাহ খান চৌধুরী লহরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মাওলানা রুহুল আমিন, কাজী মোহাম্মদ ইকবাল, জাতীয় শ্রমিক পার্টির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিয়াজী, জাতীয় পার্টির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুমায়ন কবির মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ নজরুল, যুব সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা আলী আকবর, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কাশেম চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি আবদুল্লাহ চৌধুরী পাশা, পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি নজির আহমেদ, ছাত্রসমাজের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশীদ, উপজেলা যুব সংহতির সভাপতি মনির হোসেন, যুব নেতা ওবায়েদ পাটোয়ারী, দেলোয়ার হোসেন, কাজী বিপ্লব, কাজী শহীদ, মোহাম্মদ শিপন, মোহাম্মদ কাজী শরিফসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ